ধর্ষণের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদী স্ফুলিঙ্গ, সরকারের হাতে সময় ২৪ ঘণ্টা

ধর্ষণের প্রতিবাদে শনিবার মধ্যরাতে রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ব্যর্থ হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করার দাবি করা হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের প্রতিবাদে শনিবার মধ্যরাতে রাজু ভাস্কর্যে দুই ঘণ্টা অবস্থান শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

শনিবার দিবাগত রাত দুইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার মুখপাত্র রাফিয়া রেহনুমা হৃদি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা।

এসময় রাফিয়া রেহনুমা হৃদি বলেন, “যে আমার ছোট বোন আছিয়ার সঙ্গে এই কাজ করেছে তার বাংলাদেশে আর নিঃশ্বাস নেওয়ার কোনো অধিকার নেই। আজ এখান থেকে ‘ধর্ষণ বিরোধী মঞ্চ’ ঘোষণা করা হলো। যতক্ষণ পর্যন্ত বিচার না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি চলবে।”

উমামা ফাতেমা বলেন, “আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।”

এ সময় শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে মশাল মিছিল বের করার কথাও জানানো হয়।

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবির মুখ্য সংগঠক হাসিবুল ইসলাম বলেন, “সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার পরও দেশের পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে, হচ্ছে। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অফিসে বসে বসে শুধু বেতন নিচ্ছেন। দেশের নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে তিনি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা আজকের এ সমাবেশ থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।”

রাবেয়া আক্তার নামে এক ছাত্রী বলেন, “নারীরা আজ একটুও নিরাপদ নয়। আমি আজকে বের হয়েছি, রাষ্ট্র কি আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে? আমাদের দাবি—আমরা যাতে নির্ভয়ে রাস্তায় চলাচল করতে পারি, সেই নিশ্চয়তা রাষ্ট্রকে দিতে হবে।”

দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সেখানে আনিকা তাহসিনা নামের এক ছাত্রী লিখেছেন, ‘ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে আজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যকে ‘‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’’ হিসেবে ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা। আমরা আর চুপ থাকব না।’

দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীরা বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হলের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। এরপর হল পাড়া থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিল বের হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন।

বিক্ষোভে স্লোগান ওঠে, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’।

শিক্ষার্থীরা জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রতিক সময়ে যেসব ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেখতে চান তারা। বিশেষ করে মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন তারা।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় ধর্ষকদের প্রকাশ্য ফাঁসির দাবি জানিয়ে রোকেয়া হলের নারী শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল করেন। মিছিলটি রোকেয়া হলের সামনে থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর প্রদক্ষিণ করে আবার হলের সামনে ফিরে আসে। সেখানে শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও বিগত বছরগুলোয় যারা ধর্ষণের জড়িত ছিল তাদের বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান।

রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীদের মিছিলে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, হ্যাং দ্য রেপিস্ট’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।

ধর্ষণের প্রতিবাদে গত রাত সাড়ে আটটার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদও।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

ধর্ষক ও নিপীড়কদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করে নারীসহ জনসাধারণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শনিবার সন্ধ্যা ৭ টায় ক্যাম্পাসের জোহা চত্বর থেকে শুরু হয়ে পশ্চিমপাড়া নারী শিক্ষার্থীদের হল প্রদক্ষিণ করে ফের জোহা চত্বরে এসে বিক্ষোভ করেন।

এসময় ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই’, ‘ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যু মৃত্যু, বিচার বিচার বিচার চাই’ ধর্ষকের বিচার চাই, অ্যাকশন অ্যাকশন রাবিয়ানদের অ্যাকশন, ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকের কবর দে’, ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই করো’, ‘আসিয়ার কান্না, তনুর কান্না, খাদিজার কান্না, আর না আর না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নিশা আক্তার বলেন, “রাতে আমরা টিউশন করে ফিরতে গেলে রিকশাওয়ালা আমাদের দেখে ইভটিজিং করে, বাসে আমরা হয়রানির শিকার হই, আমরা আসলে কোথাও নিরাপদ না। আমরা চাই নারীরা জেগে উঠুক এবং আমাদের ভাইয়েরা আমাদের সাহায্য করবে যাতে আমরা অনিরাপদ বোধ না করি এবং আমরা চাই ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি হোক মৃত্যুদণ্ড।”

হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, “দেশের কোনো সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধর্ষকের পরিপূর্ণ শাস্তি কার্যকর করতে পারেনি। এটা সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চরম ব্যর্থতা। আমি এ অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই আপনারা যদি ধর্ষকের শাস্তি দিতে না পারেন জনগণের হাতে ছেড়ে দেন। আমার মা-বোনের ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করবে।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশুসহ ধর্ষণের বিচারের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার দিবাগত ২টায় বিভিন্ন হল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে একটি মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীহলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এসে প্রায় ৩০ মিনিট অবরোধ করে রাখেন তারা।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ধর্ষকদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘তুমি কে-আমি কে, আছিয়া-আছিয়া’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘হলে হলে খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’, ‘চব্বিশ এর বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এই অবনতির দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিতে হবে। অবিলম্বে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে ছাত্র-জনতা আমাদের মা-বোনদের নিরাপত্তার জন্য ফের আন্দোলন গড়ে তুলবে৷”

ইংরেজি বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতী বলেন, গ“ত কয়েকদিন যাবত দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের মতো নৃশংস ঘটনা ঘটলেও সরকারের নীরব ভূমিকা আমাদের পীড়া দেয়৷ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে কঠোর কর্মসূচি দেবো এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ব্লক করে দেবো।”

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

সারাদেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষীদের বিচারের দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের জব্বারের মোড় থেকে মিছিল শুরু করে উপাচার্যের বাসভবন, কৃষি কন্যা হল ও কে আর মার্কেট প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যালিপ্যাডে এসে শেষ করেন। এতে প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী অংশ নেন।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘আমি কে? তুমি কে? আছিয়া আছিয়া’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, নো মোর রেপিস্ট’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা বিচার কর’, ‘আমার বোনের কান্না আর না, আর না’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন? ইন্টারিম জবাব চাই’, ‘ফাঁসি ফাঁসি, ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যু, মৃত্য’, ‘ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলাদেশে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

মেজবাউল হক নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “ধর্ষকদের এমন বিচার করতে হবে যেন বাংলার জমিনে আর কোনো ব্যক্তি এমন হীন কাজ করতে সাহস না পায়। আমাদের মা ও বোনদের নিরাপত্তার জন্য যদি কোনো আইন সংস্কার করতে হয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে সেই আইনও বাস্তবায়ন করতে হবে।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভে করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

শনিবার রাত আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খানজাহান আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বাইরে বেরিয়ে আসেন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ হল, বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন হলের শিক্ষার্থীরাও। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন চত্বর ও হল প্রদক্ষিণ করে হাদি চত্বরে জড়ো হন।

এ সময় তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে কবর দে’, ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী রাসেল শেখ বলেন, “এই যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তা অবিলম্বে আমরা বিলোপ চাই। আমরা চাই না কোনও অপরাধী বাইরে ঘুরে বেড়াক। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি অতিদ্রুত কার্যকর করা হোক।”

ফরেস্ট্রি অ্যান্ড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী ফারদিন আহমেদ দিপন বলেন, “আমরা চাই, একটা ধর্ষকও যেন আর বাংলার মাটিতে মুক্ত না থাকে। আমরা এই নরপশুদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই । ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে আমরা পুরো খুলনা শহরজুড়ে আরও বড় কর্মসূচির ডাক দেবো।”

এ সম্পর্কিত মূল প্রতিবেদন:

ধর্ষণের শিকার সেই শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক, দোয়া চাইলেন চিকিৎসক

আরও পড়ুন