বাংলাদেশে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সুইডেনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের একটি অংশ।
স্টকহোমে জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণে ১৫ আগস্টের ওই কর্মসূচিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ছাড়াও মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে উদ্বুদ্ধ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষজন অংশ নেন।
অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভিন্ন চিত্র সম্বলিত প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন।
বাংলাদেশের জাতীয় পাতাকা হাতে নিয়েও অংশ নেন অনেকে।
স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে সাধারণ মানুষের অধিকার সুরক্ষার বিষয় যেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না, তেমনি অতীতের মতো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও অন্যায়ভাবে আটক করা হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতনের ঘটনাও ঘটছে অহরহ।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ছয়ই অগাস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিরানব্বই হাজার আটচল্লিশটি মামলা করেছে পুলিশ, যার বেশিরভাগই হত্যার অভিযোগে করা। এক হাজার ১৭০টি মামলায় প্রায় চারশ জন সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম রয়েছে।
এছাড়াও অতীতের দলীয় কর্মকাণ্ডের প্রতিফলন হিসেবে, পুলিশ শত শত অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ সমর্থককে নির্বিচারে আটক করে এবং আট হাজার ৪০০ জনেরও বেশি লোকের বিরুদ্ধে দশটি হত্যা মামলা দায়ের করে, যাদের বেশিরভাগই অজ্ঞাত।
স্টকহোমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ওই কর্মসূচিতে বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনার পাশাপাশি সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্রও তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে দিল্লি থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা দাবি করেন, তিনি এখনো জনগণের ভোটে নির্বাচিত বৈধ প্রধানমন্ত্রী। তবে জনগণ চাইলে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনমত যাচাইয়ে প্রস্তুত আছেন তিনি।
অনতিবিলম্বে মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগও দাবি করেন বাংলাদেশের পাঁচবারের প্রধানমন্ত্রী।
স্টকহোম থেকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ হোসেন। বক্তারা গত এক বছরে বাংলাদেশে চলমান গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র বিশেষ করে গোপালগঞ্জে হত্যাযজ্ঞের বিবরণ তুলে ধরেন।
তারা দাবি করেন, সরকার ও সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে গোপালগঞ্জে শুধু গণহত্যা চালানো হয়নি, গুম করা হয়েছে অনেক নেতাকর্মীকে। ঘটনার এতদিন পরও বহু মানুষ নিখোঁজ।
‘মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশকে বিভাজনের যে চক্রান্ত শুরু করেছেন’ তা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বক্তারা।
এছাড়া গণহত্যার মতো ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইউনূসকে আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান তারা।
প্রবাসী বাংলাদেশি ছাড়াও ভিনদেশীদেরও ওই কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়।
এ সম্পর্কিত আরও খবর: