সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশে যুক্ত হলো ‘সত্তার কার্যক্রম’ নিষিদ্ধের বিধান

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়। ছবি: পিআইডি
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়। ছবি: পিআইডি

সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার দায়ে ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনার বিধান সংশোধন করে সত্তার বিচার ও নিষেধাজ্ঞার ধারা যোগ করা হয়েছে সংশোধিত সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশে।

রোববার ১১ মে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়।

বর্তমান আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা সত্তা সন্ত্রাসী কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলে সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে ওই ব্যক্তিকে তফসিলে তালিকাভুক্ত করতে পারে বা সত্তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে। কোনো সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিধান ছিল না।

‘সত্তা’ বলতে কোনো আইনি প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, বাণিজ্যিক বা অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, গোষ্ঠী, অংশীদারি কারবার, সমবায় সমিতিসহ এক বা একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত যেকোনো সংগঠনকে বোঝায়।

এখন সন্ত্রাসে জড়িত ব্যক্তি বা সত্তাকে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা তালিকাভুক্ত করা যাবে। সংশ্লিষ্ট সত্তার কার্যক্রমও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা যাবে।

অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সন্ত্রাসের প্রচার নিষিদ্ধ করার বিধানও যুক্ত করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বর্ণিত প্রেক্ষাপটে সন্ত্রাস বিরোধী আইন সংশোধন করে সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, প্রয়োজনীয় অভিযোজন করা এবং অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার নিষিদ্ধকরণের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

জরুরি অবস্থার মধ্যে ২০০৮ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করে, যা ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সংসদে পাস হয় ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন’ হিসেবে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ওই আইনে ১০টি ‘জঙ্গি দল’কে নিষিদ্ধ করা হয়, যার মধ্যে ২০০৯ সালে আল্লাহর দল, হিজবুত তাহরীর, জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ, শাহাদাত-ই-আল হিকমাকে নিষিদ্ধ করা হয়।

এর আগে জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশকে ২০০৫ সালে প্রথমে নিষিদ্ধ করা হলেও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে এই নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে কার্যকর করে।

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ করা হয় ২০১৫ সালে, আনসার আল ইসলাম ২০১৭ সালে। ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর বাংলাদেশ শাখাকেও একই আইনে বাংলাদেশ নিষিদ্ধ করে আওয়ামী লীগ।

জামিয়াতুল মুসলেমিনকে নিষিদ্ধ করা হয় ২০১৩ সালে এবং বিএনপি সরকারের সময়ে নিষিদ্ধ হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামি বাংলাদেশের কার্যক্রম ২০০৫ সালে নিষিদ্ধ হলেও আওয়ামী লীগ সরকার এটির কার্যক্রমে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়।

সর্বশেষ ২০২৪ সালে জুলাই আন্দোলনে সহিংস আন্দোলনের দায়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads