বাংলাদেশের সংবিধানে ফিরল গণভোট, তত্ত্বাবধায়ক সরকার

Dhaka High Court

দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের বিধান বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার পক্ষে রায় দিয়েছে বাংলাদেশের আদালত। রায় এসেছে গণভোট পুনর্বহালের পক্ষেও।  

মঙ্গলবার এই রায় দেয় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ।

এর আগে আদালতের রায়ের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী এনেছিল আওয়ামী লীগ।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রায় সাড়ে চার মাসের মধ্যেই সেই আদালতেই এলো বিপক্ষ মত।

সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ নাগরিকের করা রিট আবেদনে রুল জারির পর ১১ কার্যদিবস শুনানি হয়েছে এই রায়ের আগে।

পঞ্চদশ সংশোধনীতে ৫৪টি ক্ষেত্রে সংযোজন, পরিমার্জন ও প্রতিস্থাপন আনা হয়েছিল। আদালত বলেছে, পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের পুরোটা বাতিল হচ্ছে না।

বাকি বিধানগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আগামী জাতীয় সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া রায়ে গণভোটের বিধান বিলুপ্ত করা হয়েছে, যেটি সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে দ্বাদশ সংশোধনীতে যুক্ত করা হয় এই অনুচ্ছেদ।

আদালত বলেছে, গণভোটের বিধান বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ৪৭ ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত তিনবার গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে দুটি প্রশাসনিক গণভোট এবং একবার হয়েছিল সাংবিধানিক গণভোট।

১৯৭৭ সনে সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের শাসনের বৈধতা দিতে আয়োজন করা হয়েছিল ‘হ্যাঁ-না’ ভোট, যেটিতে ৯৮.৮০% ‘হ্যাঁ’ ভোট পেয়ে বৈধতা নেন জিয়া।

এরই পুনরাবৃত্তি দেখা গেছে ১৯৮৫ সালে। সেবারও সেনাশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকারের বৈধতা অর্জনে ‘হ্যাঁ-না’ ভোটের আয়োজন করেন। ফলাফল ৯৪.১৪% জনমত নিয়ে এরশাদ বৈধ।

তৃতীয় বারেরটি ছিল সাংবিধানিক গণভোট, যা অনুষ্ঠিত হয়- ১৯৯১ সালে, সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী প্রণয়নে।

আরও পড়ুন