সুইডেনে ‘মঞ্জুর হচ্ছে না’ শরণার্থীদের আবেদন

Sweden Asylam

সুইডেনে শরণার্থীদের আবেদন মঞ্জুরের হার গেল ৪০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে; প্রতি চার জনের মধ্যে তিনজন অভিবাসনের যোগ্য নয় বলেই দেশটির ভাষ্য।   

বিশেষ করে সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসনের নেতৃত্বাধীন মধ্য-ডান সরকার ২০২২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে লাগাতার কমছে এ সংখ্যা।

দেশটির অভিবাসন বিষয়ক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ৪৫৬ জনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হিয়েছে, যাদের মধ্যে ৩ হাজার ৫২৯ জন থাকার অনুমতি পেয়েছেন।

অধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, অভিবাসনবিরোধী কট্টর ডানপন্থী সুইডিশ ডেমোক্র্যাট দলের চাপে অভিবাসন বিষয়ক কঠোর আইনের ফাঁদে পড়েছে হাজার হাজার শরণার্থী।

দেশটির অভিবাসন মন্ত্রী জোহান ফোরসেল সুইডিশ মাইগ্রেশন এজেন্সির নতুন পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, গত বছর দেশটিতে মোট ৬ হাজার ২৫০ জনকে শরণার্থী মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

এই সংখ্যার মধ্যে পূর্ববর্তী ২০২৪ এর আগের আবেদনকারীরাও রয়েছেন। তবে ইউক্রেনীয়দের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি; তারা অস্থায়ী সুরক্ষার আওতায় অভিবাসনের সুযোগ পেয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন জুড়ে।

২০২৪ সালে সুইডেনে আশ্রয়ের আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল নয় হাজার ৬৪৫ জন, যা ১৯৯৬ সালের পর সর্বনিম্ন সংখ্যা এবং ২০২২ সালের তুলনায় ৪২ শতাংশ কম। 

এদের মধ্যে শিশুসহ বাংলাদেশিও রয়েছেন ৭১ জন, যারা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। একইবছর ২ বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন।

এর আগে ২০১৫ সালে শরণার্থী সংকটের সময় সুইডেনে প্রায় এক লাখ ৬৩ হাজার আশ্রয়প্রার্থী নিবন্ধিত হয়েছিলেন, যা ছিলো ওই সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

অভিবাসন মন্ত্রী জোহান ফোরসেল বলেন, সুইডেনে আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা ঐতিহাসিকভাবে কম হওয়ায় আশ্রয়প্রাপ্তদের সংখ্যাও কমে গেছে।

“বর্তমানে সুইডেনে আশ্রয়ের জন্য আবেদনকারীদের চারজনের মধ্যে তিনজনই অভিবাসনের অনুমোদন পাওয়ার জন্য যোগ্য নন। যেহেতু তারা শরণার্থী নন, সেহেতু তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।”

আগামী বছরগুলোতেও সুইডেন আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা কমানোর পথেই হাঁটবে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।

সুইডেন একসময় শরণার্থীদের বিষয়ে বেশ উদারনীতি অবলম্বন করতো। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা সেই নীতি থেকে সরে এসে অভিবাসন কমানোর দিকে মনোযোগী হয়েছে।

দেশটির সরকার ক্ষেত্র বিশেষে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য ৩০ হাজার ইউরো দেওয়ার পরিকল্পনাও ঘোষণা করে।

পাশাপাশি মাদকাসক্ত, অপরাধী কিংবা সুইডিশ মূল্যবোধের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এমন অভিবাসীদের তাদের নিজ নিজ দেশে পাঠানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। 

আরও পড়ুন