গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় বাংলাদেশে ভ্রমণ অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের (এসইএআরও) আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে হেলথ পলিসি ওয়াচ।
হেলথ পলিসি ওয়াচ একটি স্বাধীন, অলাভজনক সংবাদ সংস্থা, যা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নীতি, শাসনব্যবস্থা এবং উদ্ভাবন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে।
এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়ন, টিকা, মহামারির প্রস্তুতি এবং স্বাস্থ্য সমতার মতো বিষয়ের ওপর প্রতিবেদনের জন্য পরিচিত। তবে হেলথ পলিসি ওয়াচের সঙ্গে ডব্লিউিএইচও‘র সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে শুক্রবার সায়মাকে ছুটিতে পাঠানো সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করার চার মাস পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস একটি সংক্ষিপ্ত অভ্যন্তরীণ ইমেইলে কর্মীদের জানান, সায়মা ওয়াজেদ শুক্রবার থেকে ছুটিতে থাকবেন। সংস্থাটির সহকারী মহাপরিচালক ডা. ক্যাথারিনা বোহেম তার স্থলাভিষিক্ত হবেন। বোহেম ১৫ জুলাই নয়াদিল্লিতে এসইএআরও দপ্তরে যোগ দেবেন।
সায়মা ওয়াজেদ ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, এ পদে সায়মার নিয়োগ পাওয়ার জন্য তার মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রভাব খাটিয়েছেন। হেলথ পলিসি ওয়াচের প্রতিবেদন অনুসারে এর পরিপ্রেক্ষিতে দুদক চলতি বছরের জানুয়ারিতে তদন্ত শুরু করে।
দুদকের দায়ের করা অভিযোগ অনুযায়ী, সায়মা তার নিয়োগের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন, যা বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮ ধারার (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি) এবং ৪৭১ ধারার (জাল দলিল ব্যবহার) লঙ্ঘন।
এছাড়াও তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনারারি (সম্মানসূচক) পদে থাকার দাবি করেছিলেন, যেটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে বলেও দুদক দাবি করেছে।
এসব অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন দুদকের উপ-পরিচালক আখতারুল ইসলাম।
সায়মার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি তার ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে সূচনা ফাউন্ডেশনের (যেটির প্রধান ছিলেন তিনি) জন্য বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছেন। তবে এই অর্থ কীভাবে ব্যয় হয়েছে সে বিষয়ে দুদকের মামলায় বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
দুদকের এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সায়মা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে কার্যকরভাবে ভ্রমণ করতে পারছিলেন না বলেও হেলথ ওয়াচের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।