সংসদ নির্বাচন নিয়ে যারা শঙ্কা প্রকাশ করে তারা গণতন্ত্রের শত্রু, তারা বাংলাদেশের মানুষের পক্ষের শক্তি নয় বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ।
শনিবার সকালে নয়া পল্টনে এক দোয়া মাহফিলের আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি মালয়েশিয়া সফরকালে সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক বহুজাতিক সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচন যদি বৈধ বা আইনসঙ্গত না হয়, তাহলে তার কোনো মানে হয় না।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় নাগরিক পার্টির একজন নেতা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিয়েছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীও তাদের বিভিন্ন প্রস্তাব অপূর্ণ রেখে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিপক্ষে মত দিয়ে আসছে।
এরকম পরিস্থিতিতে ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে ক্রমেই দেখা দিচ্ছে সংশয়।
বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদ এ ধরনের বক্তব্যকে ইঙ্গিত করে বলেন, “তারা হয়ত কোনো না কোনো কারণে নিজের কথাগুলোই ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছেন; যাতে করে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা যায় অথবা বানচাল করা যায় অথবা নির্বাচন অনুষ্ঠান না হোক সেটা চায়। তবে বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য সংকল্পবদ্ধ। এর বিপক্ষে যারাই কোনো ধরনের বক্তব্য কিংবা বিভিন্ন রকমের কু-যুক্তি উত্থাপন করে গণতন্ত্রের এই যাত্রাপথকে কন্টাকাকীর্ণ করতে চাইবে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ রুখে দাঁড়াবে।”
জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও সংক্ষিপ্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়।
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে আমরা সব বিষয়ে দিক নির্দেশনা পাচ্ছি বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে। তিনি নির্দেশনা দিয়েছিলেন, আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে সহজতর করতে হবে। তার সেই নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছি অনেকবার, সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের সাথে আমরা আলোচনারত।
তিনি আরও বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্যমত্যের মধ্য দিয়ে একটি সুষ্ঠু সুন্দর শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষমাণ, সারা জাতি অপেক্ষমাণ। আমরা সেই গণতন্ত্রের জন্য অপেক্ষমাণ যেই গণতন্ত্রের জন্য আমাদের সন্তানেরা শহীদ হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, অন্ধত্ববরণ করেছেন। আমরা অবিরাম ১৬/১৭ বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করেছি সেই গণতন্ত্রের জন্য আমরা অপেক্ষমাণ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, এই গণতন্ত্রকে যদি আমরা বিনির্মাণ করতে চাই অত্যন্ত শক্তিশালী হিসেবে, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই সাম্যের ভিত্তিতে; তাহলে এই গণতন্ত্রের জন্য আমাদেরকে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; সেই জাতীয় ঐক্যকে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যেকোনো রকমের বাধাকে অতিক্রম করতে সংকল্পবদ্ধ।
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া চড়াই-উতরাই পেরিয়ে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে করতে আজও বাংলাদেশের মানুষের জন্য আলোর দিশারী হয়ে বেঁচে আছেন। বাংলাদেশের মানুষের সামনে আলোর দিশারী হিসেবে, পথ প্রদর্শক হিসেবে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাকবজ হিসেবে তিনি দীর্ঘায়ু, শতায়ু লাভ করুন।
যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরবও বক্তব্য রাখেন। দোয়া মাহফিলে যুবদলের রেজাউল কবির পল, বেলাল হোসেন তারেক, মহানগরের খন্দকার এনামুল হক এনাম, শরীফ উদ্দিন জুয়েল, রবিউল ইসলাম নয়ন, সাজ্জাদুল মিরাজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।