গত বছরের জুলাই-আগস্টে হওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে না বলে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানোর পর দলটিকে নিষিদ্ধের দাবি ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের উত্তপ্ত হয়ে ওঠার খবর দিয়ে শনিবার প্রধান প্রতিবেদন করেছে বেশিরভাগ সংবাদপত্র। এর পাশাপাশি ফিলিস্তিনে বর্বরোচিত হামলার পেক্ষিতে ইসরায়েলবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ, দেশের ফুটপাত ঘিরে নতুন চাঁদাবাজদের উত্থান, বাংলাদেশে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ বিক্রি বৃদ্ধি, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগের বিষয়ে বিএনপির অবস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক খবরও গুরুত্ব পেয়েছে সংবাদগুলোতে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক শনিবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

কালের কণ্ঠ
জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার পক্ষে অন্তর্বতী সরকারের অবস্থান ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে ওঠার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘হঠাৎ রাজনীতি উত্তাল, জনমনে উদ্বেগ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই—প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের এই বক্তব্য ঘিরে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন দল ও মহলের অবস্থানে রাজনৈতিক অঙ্গনে হঠাৎ তোলপাড় শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দেশ আবার সংঘাতময় হয়ে উঠে কি না, তা নিয়ে শঙ্কিত দেশের জনগণ।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ অনেক রাজনৈতিক দলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। বরং তাদের বক্তব্যে মনে হয়েছে, কোনো বিশেষ কারণে দুই দলই সরকারকে রুষ্ট করতে চাইছে না।
উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গতকাল শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান—দুজনই কৌশলে বলেছেন, তাঁরা দেশে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চান না।

প্রথম আলো
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় শত শত মানুষের প্রাণহানির প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘ইসরায়েলবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েল স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টা খুবই উদ্বেগের। তারা (সরকার) জিম্মিদের পাশে নেই। দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তোয়াক্কা করছে না।’ কথাগুলো বলছিলেন ৫৯ বছর বয়সী রিনাত হাতাশি। গতকাল শুক্রবার জেরুজালেমে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন এই ইসরায়েলি। এদিন ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে দেশে দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখা, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হাতে বন্দী থাকা বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলে বিক্ষোভ করছেন দেশটির হাজার হাজার নাগরিক। তাঁদের মূল ক্ষোভ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে।
এ বিক্ষোভের অংশ হিসেবে গতকাল জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর বাসভবনের বাইরে অবস্থান নেন বহু মানুষ। তাঁদের হাতে ছিল ইসরায়েলের পতাকা ও সরকারের সমালোচনা করে লেখা প্ল্যাকার্ড। পশ্চিম জেরুজালেমে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মাইকেল হালপেরিন বলেন, শিন বেতের বদলে প্রধানমন্ত্রীকে এখন গাজায় মৃত্যুর মুখে থাকা বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দিকে নজর দেওয়া উচিত।

সমকাল
সরকার পরিবর্তনেরে পর ঢাকার ফুটপাতগুলোতে চাঁদাবাজি কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবার তা শুরু হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘ঢাকার ফুটপাতে চাঁদাবাজি সচল, কুশীলব বদল’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর শূন্যের ঘরে নেমে এসেছিল রাজধানীর ফুটপাতের চাঁদাবাজি। সুসময় টেকেনি বেশি দিন। আবারও চাঁদাবাজরা ফিরেছে পুরোনো চেহারায়। আগের চেয়ে বরং ফুটপাত-রাজপথে বেড়েছে হকার। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেড়েছে চাঁদার অঙ্ক। কোথাও কোথাও এসেছে নতুন চাঁদাবাজ।
অনেক এলাকায় আওয়ামী লীগের বদলে চাঁদাবাজের তালিকায় উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীর নাম। চাঁদাবাজির হোতা হিসেবে রাজধানীর দুয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নামও সামনে আসছে। কোনো এলাকায় বদল হয়েছে লাইনম্যানের। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আগের চেয়ে অনেকটাই কম।
রাজধানীর ফুটপাত হকারমুক্ত করতে অতীতে কম চেষ্টা হয়নি। ২০১৬ সালের অক্টোবরে গুলিস্তানকে হকারমুক্ত করার অভিযানে নেমে নিজেই বিপাকে পড়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণের তৎকালীন মেয়র সাঈদ খোকন। তখন হকাররা উল্টো নগর ভবন ঘিরে হামলা চালান। এর পরই গতি হারায় হকার উচ্ছেদ কার্যক্রম। পরে ব্যারিস্টার তাপস মেয়র হলে রাস্তায় হকার ঠেকাতে লাল-হলুদ-সবুজ রঙে মার্কিং করে দেন। সেটাও কাজে দেয়নি। সর্বশেষ গণঅভ্যুত্থানের পর যৌথ বাহিনী কয়েক দিন ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করলেও এখন আবার রকমারি পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন হকাররা।

ইত্তেফাক
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরা নিয়ে দেশে নতুন করে শুরু হওয়া বিতর্কের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের ফেরা নিয়ে নতুন বিতর্ক’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরুণদের নেতৃত্বে ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ দাবি করেছেন, সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা চলছে। বিষয়টিকে তিনি ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে ‘নতুন একটি ষড়যন্ত্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ দাবি করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহর এই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের ফেরা এবং আগামী নির্বাচনে দলটিকে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া, না দেওয়ার প্রশ্নে বিভিন্ন প্ল্যাটফরমে নতুন করে ব্যাপক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে তুমুল বিতর্ক। বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং ছাত্রসংগঠনগুলোও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে গতকাল শুক্রবার মিছিল-সমাবেশ হয়েছে।

যুগান্তর
আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধের দাবিতে নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) লাগাতর কর্মসূচি ঘোষণার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘লাগাতার কর্মসূচি এনসিপির’শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণ-আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতে বসে নানারকম ষড়যন্ত্র করছেন শেখ হাসিনা ও দেশে-বিদেশে আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা। তারা দেশকে অস্থিতিশীল ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করতে নানাভাবে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। গণ-অভ্যুত্থানের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের দৃশ্যমান বিচার শুরু না হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে দলটি। এমন বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধের দাবিতে লাগাতর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
শুক্রবার রাত ৮টায় রাজধানীর বাংলামটরে রূপায়ণ টওয়ারে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এর আগে সূচনা বক্তব্য দেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

বণিক বার্তা
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ারের সঙ্গে করা চুক্তি বাতিলের জোর দাবি উঠলেও উল্টো আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা বেড়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘ব্যবসায়িক স্বস্তিতে আদানি, বাংলাদেশে অনেকটা দুশ্চিন্তামুক্ত’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছে আদানি পাওয়ারের বিপুল পরিমাণ পাওনা বকেয়া পড়ে যায় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে। সে সময়ে আদানি পাওয়ারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বিল পরিশোধ করা হতো প্রতি মাসে গড়ে ২০-৩০ মিলিয়ন ডলার। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনা বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বিল পরিশোধও বেড়েছে আগের চেয়ে তিন-চার গুণ। বর্তমানে প্রতি মাসে গড়ে ৮০-৮৫ মিলিয়ন ডলার বিল পাচ্ছে আদানি পাওয়ার। চলতি মার্চেও আদানি পাওয়ারকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ ৯৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি বিল পরিশোধ করেছে বিপিডিবি।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিশেষ আইনের আওতায় আদানির সঙ্গে করা চুক্তি বাতিলের জোর দাবি ওঠে। নভেম্বরে এ ক্রয়চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিটও করা হয়। আদানিসহ ১১ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে ক্রয়চুক্তি খতিয়ে দেখতে গত অক্টোবরে জাতীয় পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এ কমিটি এরই মধ্যে এসব চুক্তি পর্যালোচনার জন্য আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়ার সুপারিশ করেছে। এ কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায়ই বাড়ানো হয়েছে আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় ও বিল পরিশোধ।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরা নিয়ে দেশে নতুন করে শুরু হওয়া বিতর্কের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘হঠাৎ আওয়ামী লীগ বিতর্ক’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক এবং রাজনৈতিক দল নয়। এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটেনি। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। গতকাল রাতে রাজধানীর রূপায়ণ টাওয়ারে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

নয়া দিগন্ত
আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ দেড় শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা দায়েরের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্ত। ‘হাসিনাসহ আ’লীগের দেড় শতাধিক মন্ত্রী-এমপি দুদকের মামলাজালে’শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার তীব্র গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ দেড় শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রভাবশালীদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ছাড়াও কয়েকজন আমলা রয়েছেন। গত সাত মাসে এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবারও অর্থ আত্মসাৎ, জালিয়াতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও তার পবিবারের বিরুদ্ধে তিনটি এবং শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক।

আজকের পত্রিকা
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘রাজনীতিতে সংকটের ছায়া’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ।
আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে— এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও জড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা। এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না এলে রাজনীতিতে নতুন সংকটের ছায়া দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসানের পর পরিস্থিতি থিতিয়ে আসতে সময় চলে গেছে প্রায় সাত মাস। এখন চলছে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ। জাতীয় সংসদ, গণপরিষদ, নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন— কোনটি আগে হবে, তা নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ পুরোনো দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতভেদ আছে। আর তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মূল চাওয়া— গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও সংবিধান পুনর্লিখনের জন্য আগে গণপরিষদ নির্বাচন অথবা একই সঙ্গে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংস্কার প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে এমন মতবিরোধের মধ্যেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি রাজনীতিতে নতুন ইস্যু হয়ে উঠেছে।

দেশ রূপান্তর
সরকারের কিছু বিভাগে সংস্কার চাইলেও সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তনে বিএনপি একমত নয়– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘সংবিধানের পরিবর্তন সংসদেই’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঐকমত্য কমিশনে অভিমত জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির অবস্থান কী হবে তা তৈরি করেছে দলটি।
কমিশনে অভিমত জমা দেওয়ার পাশাপাশি সংস্কারের ব্যাপারে তাদের প্রস্তাব কী হবে তা সংবাদ সম্মেলন করে প্রকাশ করবে বিএনপি। জানা গেছে, সরকারের কিছু বিভাগে সংস্কার চাইলেও সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তনে বিএনপি একমত নয়। এতে নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে বলে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা সংশয়ান্বিত। বিএনপি বলছে, সংবিধান সংস্কারের এখতিয়ার নির্বাচিত সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। সংসদই সংবিধানে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনবে। দলটি নির্বাচনের জন্য প্রশাসন, বিচার বিভাগ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কারের প্রস্তাবে একমত হলেও সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তন পছন্দ করবে না।