শনিবারের পত্রিকা: ‘নির্বাচন ঘিরে ভিন্ন কৌশলে জামায়াত’

newspaper-26 april

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দলগুলোর নানা তৎপরতা ও কৌশলের খবর শনিবার জায়গা পেয়েছে বিভিন্ন সংবাদপত্রে। এ ছাড়া ভারতশাসিত কাশ্মীরে হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনায় দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি ও এ সংক্রান্ত খবরও শনিবার গুরুত্ব দিয়েছে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এর বাইরে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এবং দেশীয় অপারেটেরের অধীনে ভালোভাবে চলমান থাকার পরও কেন তা পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে যাচ্ছে সেই প্রশ্নের উত্তর তালাশ, পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির চিত্র, যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ও ইউক্রেনে বাংলাদেশের বাজার হারানো, গত সাত মাসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ চার শতাধিক ব্যক্তির ১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ এবং বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের চিকিৎসকদের জন্য ৩ হাজারের বেশি নতুন পদ সৃষ্টির খবরও গুরুত্ব পেয়েছে সংবাদপত্রগুলোতে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক শনিবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে বা প্রথম পাতায় গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে।

যুগান্তর

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভিন্ন কৌশলে এগোচ্ছে– এমন খবর দিয়ে প্রতিবেদন দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর।নির্বাচন ঘিরে ভিন্ন কৌশলে জামায়াতশিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ভিন্ন কৌশলে এগোচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সরকার, বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি ও তরুণদের দল এনসিপি-কারোর সঙ্গেই দূরত্ব চায় না দলটি। এজন্য নির্বাচনের সময়সীমা ইস্যুতে বারবার অবস্থান পরিবর্তন কৌশলেরই অংশ। বিএনপির সঙ্গে থাকার বিষয়ে জামায়াতের ওপর তৃণমূলের একটি বড় অংশের চাপ রয়েছে। আগামী দিনে বিরোধী দলে থাকলে দলের জন্য বড় ক্ষতি হতে পারে-এমনটি মনে করছে তৃণমূল। আবার সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেও চলতে চায়। কারণ, দলের নিবন্ধন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির বিষয়টিও ঝুলে আছে। অন্যদিকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে তরুণদের দল এনসিপির সঙ্গেও দূরত্ব চায় না। নির্বাচন সামনে রেখে এমন নানা হিসাবনিকাশ করেই একেক সময় একেক কৌশল নিচ্ছে জামায়াত। দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এসব তথ্য।

প্রথম আলো

জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর জন্য বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাধুনিক যন্ত্র ‘গ্যান্ট্রি ক্রেন’ প্রয়োজনীয় সংখ্যা চেয়ে বেশি এবং জাহাজ থেকে নামানোর পর কনটেইনার স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় সব যন্ত্র থাকার পরও চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বা এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব কেন বিদেশিদের হাতে যাচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে করা প্রতিবেদন প্রথম পাতায় গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে প্রথম আলো। ‘নিউমুরিংয়ে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর জন্য বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাধুনিক যন্ত্র ‘গ্যান্ট্রি ক্রেন’। চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বা এনসিটিতে এই ক্রেন দরকার ১২টি। আছে ১৪টি। আবার জাহাজ থেকে নামানোর পর কনটেইনার স্থানান্তরের যত যন্ত্র দরকার, তারও সবই আছে টার্মিনালটিতে।

টার্মিনালটিতে জাহাজ থেকে বার্ষিক ১০ লাখ একক কনটেইনার ওঠানো-নামানোর স্বাভাবিক ক্ষমতা রয়েছে। দেশীয় অপারেটর গত বছর এই টার্মিনালে জাহাজ থেকে ১২ লাখ ৮১ হাজার কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কাজ করেছে। এভাবে টানা ১৭ বছর ধরে দেশীয় প্রতিষ্ঠান দিয়ে চালানো হচ্ছে টার্মিনালটি।

প্রয়োজনীয় সবকিছু আছে এবং ভালোভাবে চলতে থাকা এই টার্মিনাল আওয়ামী লীগ আমলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আমলের সেই ধারাবাহিকতা এগিয়ে নিচ্ছে। বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম টার্মিনাল অপারেটর সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে জিটুজি ভিত্তিতে টার্মিনালটি পরিচালনার ভার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এর বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরে সরব বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীরা। আন্দোলন-বিক্ষোভও করছেন তাঁরা।

সমকাল

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে খুন, অপহরণ, ডাকাতি, ছিনতাইসহ ছয় ধরনের অপরাধ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়ে গেছে। সংঘটিত অপরাধের ঘটনায় করা মামলার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে উঠে আসা তথ্য দিয়ে করা এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘অপরাধের সব সূচক বাড়ছে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এমন উদ্বেগের কথা শোনা যায়। পুলিশের গত তিন মাসের অপরাধবিষয়ক পরিসংখ্যান তাদের উদ্বেগকে জোরালোভাবে সমর্থন করছে। এই পরিসংখ্যান অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তাকেও তুলে ধরছে।

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সংঘটিত অপরাধের ঘটনায় করা মামলার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়– খুন, অপহরণ, ডাকাতি, ছিনতাইসহ ছয় ধরনের অপরাধ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়ে গেছে। যদিও গত বছরের এই সময়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমান সময়ের বড় ধরনের পার্থক্য আছে। ফারাক আছে পুলিশের সামর্থ্যের জায়গায়ও।

সারাদেশের সব ধরনের অপরাধের তথ্য নথিভুক্ত করে পুলিশ সদরদপ্তর। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শুধু হত্যার ঘটনায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে মামলা হয়েছে ২৯৪টি, ফেব্রুয়ারিতে ৩০০টি এবং মার্চে ৩১৬টি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চে সারাদেশে হত্যা মামলা নথিভুক্ত হয়েছে যথাক্রমে ২৩১, ২৪০ ও ২৩৯টি। গত বছরের মার্চের তুলনায় চলতি বছরের মার্চে হত্যা মামলা বেশি হয়েছে ৭৭টি। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বেশি হয়েছে যথাক্রমে ৬৩ ও ৬০টি।

কালের কণ্ঠ

বুদ্ধিবৃত্তিক গবেষণার সঙ্গে যুক্ত দেশের কয়েকজন অরাজনৈতিক ব্যক্তির তৈরি করা এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে উঠে আসা অভিমত দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘বুদ্ধিবৃত্তিক গবেষকদের প্রতিবেদন: স্থিতিশীলতায় দরকার নির্বাচন, দক্ষ সরকার’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, সার্বিক উন্নয়ন এবং প্রভাবশালী দেশগুলোর সঙ্গে উষ্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করা দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এর জন্য রাজনৈতিকভাবে অভিজ্ঞ সরকারের বিকল্প নেই। আর তা পেতে হলে দরকার দ্রুত সংসদ নির্বাচন।

বুদ্ধিবৃত্তিক গবেষণার সঙ্গে যুক্ত দেশের কয়েকজন অরাজনৈতিক ব্যক্তির তৈরি করা এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যত্ করণীয়’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনের মূল কথা হলো, বাংলাদেশ একটি সংকটকাল অতিক্রম করছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে যে ধরনের সংকট দেখা দিয়েছিল, বাংলাদেশেও বর্তমানে তার সবই বিদ্যমান। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশে সংকট কিছুটা বেশি। তাই দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণ প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন যে সরকার হবে তাকে অবশ্যই অভিজ্ঞ হতে হবে। তা না হলে নতুন যে সরকার আসবে এবং তার সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ আসবে সেগুলো মোকাবেলা করা কঠিন হবে, এমনকি দেশ নতুন করে সংকটে পড়তে পারে।

ইত্তেফাক

জম্মু-কাশ্মীরে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাগযুদ্ধ বাড়ছে। দুই দেশেরই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ এবং পালটা প্রতিশোধের ঘোষণার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘সন্ত্রাসের আশ্রয়দাতাকে ছাড় নয়: ভারত; যুদ্ধের জন্য সৈন্যরা প্রস্তুত: পাকিস্তান’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাগযুদ্ধ বাড়ছে। দুই দেশই প্রতিশোধ এবং পালটা প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়েছে। ভারত এই হামলার জন্য কাউকে ছাড় দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। আর পাকিস্তান যুদ্ধের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছে। এই বাগযুদ্ধের মধ্যে দুই দেশের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। পহেলগামে হামলায় জড়িত দুই অভিযুক্তের বাড়ি বিস্ফোরণে উড়ে গেছে। পাকিস্তানিদের খুঁজে বের করে তাড়িয়ে দিতে মুখ্যমন্ত্রীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যদিও তার মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে কাশ্মীরে নিরাপত্তা গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে এবং সরকার সেটি স্বীকারও করেছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে তারা ভারতের পাশে আছে। মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে দুই দেশকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

যুদ্ধের কারণে ইউরোপের দুই দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেনে বাণিজ্য হারাচ্ছে বাংলাদেশ– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘রুশ-ইউক্রেনে বাজার হারাচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের কারণে ইউরোপের দুই দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেনে বাণিজ্য হারাচ্ছে বাংলাদেশ। যুদ্ধ শুরুর পর গত তিন বছরে দেশ দুটিতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির পরিমাণ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। রাশিয়ায় সবচেয়ে বেশি জটিলতা তৈরি হয়েছে পেমেন্ট পরিশোধ নিয়ে। প্রথমদিকে ইউক্রেনে রপ্তানি ধারা অব্যাহত থাকলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দেশটিতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আশঙ্কাজনক হারে কমছে। যুদ্ধাবস্থা না কাটলে রুশ-ইউক্রেনে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক হিস্সা আরও কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিকেএমইএর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন দুটিই বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের জন্য সম্ভাবনাময় বাজার ছিল। যুদ্ধের কারণে সেই সম্ভাবনা বিনষ্ট হয়েছে। শুধু তাই নয়, পেমেন্ট জটিলতার কারণে রাশিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

বণিক বার্তা

গত শতকের নব্বইয়ে এবং চলতি শতকের চব্বিশে হওয়া গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃতি ও গতিপথ বিশ্লেষণ করে বানানো প্রতিবেদন প্রথম পাতায় গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে বণিক বার্তা। ‘নব্বই ও চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান: সেনাবাহিনীর সমর্থন প্রত্যাহারে চূড়ান্ত পতন হয় স্বৈরশাসকের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালের ১৯ নভেম্বর। এরশাদ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অভিন্ন রূপরেখা ঘোষণা করে তিন জোট। এদিকে ক্ষমতা ধরে রাখতে অটল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আন্দোলন একপর্যায়ে রূপ নেয় গণ-অভ্যুত্থানে। ওই সময় তৎকালীন সেনাপ্রধানসহ পুরো সেনাবাহিনী অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীদের পক্ষে। অবশেষে উপায়ান্তর না দেখে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হন এরশাদ। এর ৩৪ বছর পর গত বছরের জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন রূপ নেয় গণ-অভ্যুত্থানে। নড়বড়ে হয়ে যায় শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসন। ১৬ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট নানা কৌশলে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার চেষ্টা করেন শেখ হাসিনা। বিক্ষোভ দমনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়। শত শত মানুষকে হত্যা করেও আন্দোলন দমাতে পারেনি হাসিনা সরকার, বরং আরো তীব্র হয়। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকেও গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালায়নি সেনাবাহিনী। সবশেষে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালান শেখ হাসিনা।

নয়া দিগন্ত

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সাত মাসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ চার শতাধিক ব্যক্তির ১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে– এমন খবর প্রথম পাতায় গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে নয়া দিগন্ত। ‘৭ মাসে হাসিনাসহ ৪ শতাধিক ব্যক্তির ১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাত মাসে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ ৪ শতাধিক ব্যক্তির প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এসব ব্যক্তির সম্পদ জব্দের আদেশ দেন।

সন্দেহজনক লেনদেন, অর্থপাচার, অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ গড়ার অভিযোগ ওঠা ওই ব্যক্তিদের তালিকায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ছাড়াও সাবেক মন্ত্রী, এমপি, বিতর্কিত ব্যবসায়ী, গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার শীর্ষ পদে থাকা ব্যক্তিরা রয়েছেন।

আজকের পত্রিকা

সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে চিকিৎসকদের জন্য ৩ হাজার ৩০টি সংখ্যাতিরিক্ত (সুপারনিউমারারি) পদ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘বিসিএস স্বাস্থ্য: চিকিৎসকদের জন্য ৩ হাজার নতুন পদ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা বড় সুখবর পেতে যাচ্ছেন। সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে চিকিৎসকদের জন্য ৩ হাজার ৩০টি সংখ্যাতিরিক্ত (সুপারনিউমারারি) পদ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে অধ্যাপকের ১৫০টি, সহযোগী অধ্যাপকের ৮৫০ ও সহকারী অধ্যাপকের ২ হাজার ৩০টি পদ থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে আগামীকাল রোববার প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় ৩ হাজার ৩০টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উত্থাপনের কথা রয়েছে। সচিব কমিটিতে পাঠানো স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পদের অভাবে পদোন্নতির সুযোগ না থাকায় স্বাস্থ্য ক্যাডারে বিপুলসংখ্যক চিকিৎসককে মেডিকেল অফিসারের পদ থেকেই অবসরে যেতে হচ্ছে। সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপকের স্থায়ী পদ কম থাকায় মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসা শিক্ষা এবং সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

দেশ রূপান্তর

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পেতে আবেদন করা অনেকগুলো দলের কার্যালয় না নেই– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘রাজনৈতিক দলের ঠিকানা শ্বশুরবাড়ি স্টোররুম!’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর পুরান ঢাকার রমাকান্ত নন্দী লেনের ১৬ নম্বর বাড়িটিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় দেখিয়ে নিবন্ধন পাওয়ার আবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণময় পার্টি নামের একটি রাজনৈতিক দল। উল্লিখিত ঠিকানায় গিয়ে দেখা গেছে, ওই নামে কোনো দলের কার্যালয় সেখানে নেই। দলের সাইনবোর্ডও পাওয়া যায়নি।

ঠিক নিচেই একটি মুদি দোকান রয়েছে ভবনের মালিকের। তার কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে চাইলে বেশ অবাক হন তিনি। বলেন, ‘আমার ভবনের ওপরে সব ফ্যামিলি অ্যাপার্টমেন্ট। নিচের তলার ঘরগুলো দোকানের জন্য ভাড়া দেওয়া। এখানে কোনো রাজনৈতিক দলের অফিস নেই। এই প্রথম দলটির নাম শুনলাম। তাদের কোনো কার্যক্রম কখনো দেখিনি।’

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া আবেদনে দলটির চেয়ারম্যান হিসেবে মো. শিপন ভূঁইয়া এবং ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে হাজি মো. বাখু মৃধার নাম উল্লেখ রয়েছে। আবেদনে উল্লিখিত ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে কয়েক মিনিট পর হাজির শিপন ভূঁইয়া। দলের কার্যালয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পাশের একটি গলিপথ দিয়ে ভেতরে নিয়ে যান। এরপর তালাবদ্ধ একটি স্টোররুম খুলে বলেন, ‘এটাই আমাদের কার্যালয়।’

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads