শনিবারের পত্রিকা: ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রস্তুতি’

newspaper
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ অবরোধ করে চলমান বিক্ষোভের খবর দিয়ে শনিবার প্রধান প্রতিবেদন করেছে বেশিরভাগ সংবাদপত্র। পাশাপাশি ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা এবং এর প্রতিক্রিয়ায় পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার খবরও এদিন গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এর বাইরে আন্দোলনের মুখে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে সরকারের তৎপরতা বা প্রস্তুতি, অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অভিযোগ, উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে সাড়া না মেলা, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত ঘিরে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের খাদ্য মজুদের হিড়িক এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার খবরসহ বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক খবরও গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক শনিবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে বা প্রথম পাতায় গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে।

আজকের পত্রিকা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ‘গণহত্যাকারী’ দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সরকারি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে­— এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘আ.লীগ নিষিদ্ধের প্রস্তুতি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ‘গণহত্যাকারী’ দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সরকারি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে গতকাল শুক্রবার সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে দেওয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইতিমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে।’ সে সময় পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়েছে সরকার।

আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘শাহবাগ উত্তাল সিদ্ধান্ত না এলে ‘ মার্চ টু ঢাকা ’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা। মাঝরাত পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান অব্যাহত রেখেছিলেন। একই দাবিতে ঢাকার উত্তরা, রংপুর, খুলনা, কুমিল্লা, পটুয়াখালী, সিরাজগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে গতকাল। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগ প্রশ্নে সিদ্ধান্ত না এলে জুলাই আন্দোলনের মতো আবার ‘ মার্চ টু ঢাকা’র ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গতকাল রাত ৮টার দিকে নিজের ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, “শাহবাগের অবস্থান চলমান থাকবে ।”

প্রথম আলো

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে চলমান্ আন্দোলনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে রাতভর অবস্থান এবং মিন্টো রোডের মোড়ে মঞ্চ তৈরি করে বিক্ষোভের পর গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত তাঁরা ‘শাহবাগ ব্লকেড’-এর ঘোষণা দিয়েছেন।

একই দাবিতে আজ শনিবার বেলা তিনটায় শাহবাগে গণজমায়েত কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সারা দেশের জুলাই অভ্যুত্থানের স্থানগুলোতেও গণজমায়েত কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। এই আন্দোলনের উদ্যোক্তারা বলেছেন, শাহবাগ থেকে তাঁদের ‘দ্বিতীয় অভ্যুত্থান পর্ব’ শুরু হবে।

প্রথম আলোর প্রথম পাতায় ‘আ.লীগ নিষিদ্ধ নিয়ে সরকার: দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ নিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটার কিছু আগে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। এ ব্যাপারে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইতিমধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

সমকাল

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে টানা অবস্থান ও বিক্ষোভের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘আ’লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে টানা অবস্থান, বিক্ষোভ’ শিরোনামে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে বৃহস্পতিবার রাতভর বিক্ষোভের পর গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে সমাবেশ করে শাহবাগে যান তারা। জুলাই অভ্যুত্থানের নেতারা এ বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে রাজনৈতিক ঐক্য চেয়ে তারা ঘোষণা দিয়েছেন- দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান চলবে। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কর্মসূচির মধ্যে গতকাল রাত ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দাবিতে শনিবার সারাদেশে গণজমায়েত কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, শনিবার বিকেল ৩টায় গণজমায়েত, সারা ঢাকায় ফ্যাসিবাদবিরোধী জনতা গণজমায়েতে যুক্ত হবেন। সারাদেশে জুলাই আন্দোলনের পয়েন্টে গণজমায়েত হবে।

সমকালের প্রথম পাতায় ‘ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা তুঙ্গে বড় সংঘাতের আশঙ্কা’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। ভারত দাবি করেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের ১৫টি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাকিস্তান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছিল, যা তারা ঠেকিয়ে দিয়েছে। পাকিস্তান এ দাবি অস্বীকার করে বলছে, তারা নতুন করে আরও ৪৮টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। সব মিলিয়ে দুই দিনে ৭৭টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের হামলার হুমকির মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতটি ছিল ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর মানুষের জন্য ভয়াবহ। এসব রাজ্যের অনেক শহর একেবারে বিদ্যুৎহীন বা ব্ল‍্যাকআউট করে ফেলা হয়। জারি করা হয় কারফিউ। নিরাপত্তা বাহিনী ও চিকিৎসা-সংশ্লিষ্টদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

কালের কণ্ঠ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘ছাত্র-জনতার শাহবাগ ব্লকেড’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) জুলাই গণ-অভুত্থানে অংশ নেওয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পাশে মিন্টো রোডের প্রবেশমুখে সমাবেশ শেষে তাঁরা শাহবাগ মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন। ওই সমাবেশ থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধের ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। এরপর আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। সেখানে অবস্থান নিয়ে তাঁরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এতে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় ‘পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে গোলাগুলি চলছেই’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে গোলাবর্ষণ চলছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জম্মু ও কাশ্মীরের উরি এবং পুঞ্চে পাকিস্তানি সেনারা গোলাবর্ষণ শুরু করে। এতে ভারী কামান ও গোলা ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ভারতীয় কর্মকর্তা। পাকিস্তানের এ হামলার জবাবে ভারতও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের গোলায় ১৬ ভারতীয় নিহত হয়েছে বলেও দাবি করেছে সংবাদমাধ্যমটি।

ইত্তেফাক

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে চলমান বিক্ষোভের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে টানা অবরোধ কর্মসূচি পালন শুরু করেছে ছাত্র-জনতা। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা অবস্থান এবং শুক্রবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে বিশাল সমাবেশ শেষে বিকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ জুলাই অভ্যুত্থানে যুক্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। শাহবাগে এনসিপি ছাড়াও

জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত ছাত্র মজলিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। এ অবরোধে যেন ফিরে এসেছে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের উত্তাল দিনগুলো, যা ‘জুলাই আন্দোলন’ নামে পরিচিত।

যুগান্তর

রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে অবরোধের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল ঢাকা: ফের শাহবাগ অবরোধ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই গণহত্যায় জড়িত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ (শাহবাগ ব্লকেড) করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দলটি নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত কেউ শাহবাগ ছাড়বে না-শুক্রবার সন্ধ্যায় এমন ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারী সব পক্ষ। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন, অভ্যুত্থানে নিহত পরিবারের সদস্যসহ কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় রাজধানী ঢাকার উত্তরায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং সাভারে ঢাকা-আরিচা মহসড়ক অবরোধ করা হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সব মিলিয়ে গতকাল রাজধানী ঢাকা ছিল রীতিমতো উত্তাল।

যুগান্তরের প্রথম পাতায় ‘আ.লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে যে, নানা ইস্যু সৃষ্টি করে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরানোর একটা ক্ষেত্র হয়তো তৈরি করতে চাইছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি স্বৈরাচার আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণও করা হচ্ছে। সম্প্রতি কিছু কর্মকাণ্ডে অন্তর্বর্তী সরকার ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কি না, তা নিয়েও জনগণের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।

বণিক বার্তা

উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তার অনুরোধ জানিয়েও সাড়া পাননি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস— এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা: উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে ড. ইউনূসের অনুরোধের সাড়া মেলেনি এখনো’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শুরুর ৩৯ দিনের মাথায় ক্ষমতা গ্রহণ করে। কিন্তু ডলারের তীব্র সংকট, ঋণের নামে ব্যাংক লুটপাট এবং অর্থ পাচারের কারণে নানামুখী সংকটে তখন দেশের অর্থনীতি। উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে রীতিমতো পিষ্ট সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দিতে অনুরোধ করা হয়, যা অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই জানান। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েও তিনি দেশ পুনর্গঠন ও গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে সহায়তা করতে দাতা সংস্থাগুলোকে অনুরোধ করেন। কিন্তু প্রায় আট মাস পেরিয়ে গেলেও সে আহ্বানে এখন পর্যন্ত সাড়া মেলেনি।

বণিক বার্তার প্রথম পাতায় ‘ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: খাদ্য মজুদের হিড়িক, বাঙ্কারে ছুটছে সীমান্তের বাসিন্দারা’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনা তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। পাকিস্তান গতকাল রাতেও ২০টি স্থানে ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভারত। এর পাল্টা জবাব দেয়ার কথাও জানিয়েছে নয়াদিল্লির সামরিক সূত্র। যদিও সর্বশেষ এ অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেনি ইসলামাবাদ। অব্যাহত সামরিক সংঘাতে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষজন আতঙ্কে খাদ্য ও জরুরি সামগ্রী মজুদ করতে শুরু করেছে। অনেকে স্বজনদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাঙ্কারের খোঁজে ছুটছে। ব্যাংক থেকে টাকা তোলার হিড়িকও দেখা গেছে। দুই দেশই একে অন্যের বিরুদ্ধে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও কামান হামলার অভিযোগ অব্যাহত রেখেছে, যা গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক সংঘর্ষে রূপ নিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানী শাহবাগে চলমান বিক্ষোভের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি: শাহবাগ ব্লকেড ছাত্র-জনতার’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে তোলা হচ্ছে গণহত্যাকারী এ সংগঠনটিকে নিষিদ্ধের দাবি। ফ্যাসিস্ট সংগঠনটির নিষিদ্ধের দাবিতে গতকাল রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় ব্লকেড কর্মসূচি শুরু করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু হওয়া এ ব্লকেড কর্মসূচি প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হয় এ আন্দোলন। গতকাল রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শাহবাগ ব্লকেড চলছিল।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় ‘রাজনৈতিক ঐক্যের খোঁজে বিএনপি’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচন চায় বিএনপি। দাবি আদায়ে ‘সর্বদলীয় জনমত’ গঠনের লক্ষ্যে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত দলগুলোর পাশাপাশি ডান, বাম, ইসলামি ছাড়াও ছোটবড়, নতুন-পুরোনো সব দলের সঙ্গে বৈঠক করছে দলটি। লক্ষ্য নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আদায়। ইতোমধ্যে অর্ধশত দল ও সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। দাবি আদায়ে এখনই আন্দোলনের পথে না গিয়ে সংলাপ ও রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচনকেন্দ্রিক সমাধান খুঁজছে দলটি। ঐকমত্য কমিশনেও বিএনপির অবস্থান হলো ন্যূনতম সংস্কার করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে।

নয়া দিগন্ত

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভে সারাদেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে— এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্ত। ‘আলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল দেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিলখানা, শাপলা চত্বর এবং জুলাই-আগস্টের ভয়াবহ গণহত্যাসহ গত ১৭ বছরে গুম, খুন, নির্যাতনসহ অসংখ্য অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিচার ও আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে দিনভর উত্তাল ছিল রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের রাজপথ। দল-মত নির্বিশেষে সবাই মিলে এক দাবিতে নেমেছে আন্দোলনে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেয় জুলাই-আগস্টে আহত যোদ্ধা, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জুলাই ঐক্য, ইনকিলাব মঞ্চ, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী। একটু দূরেই তৈরি করা হয় অস্থায়ী মঞ্চ। মঞ্চ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে তৈরি করা হলেও জন¯্রােত গিয়ে ঠেকে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত। এক পর্যায়ে মঞ্চের সামনে থেকে অবস্থান পরিবর্তন করে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে সেখানকার রাস্তাতেই বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতাকর্মী এবং আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা ঘোষণা দিয়েছেন, যতক্ষণ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের খবর না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত রাজপথ থেকে তারা কোথাও যাবেন না। দাবি আদায়ের মাধ্যমেই ঘরে ফিরবেন তারা।

নয়া দিগন্তের প্রথম পাতায় ‘তৃতীয় দিনেও যুদ্ধাবস্থায় ভারত-পাকিস্তান’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। একে অপরের বিরুদ্ধে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ তুলেছে উভয় দেশ। ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধের পর দু’দেশের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় সামরিক উত্তেজনা বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।

ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মির অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনী একাধিকবার যুদ্ধবিরতি শর্ত লঙ্ঘন করেছে। এ ছাড়া পাল্টা জবাবে ড্রোন হামলা প্রতিহত করে উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া দেয়া হয়েছে। অন্য দিকে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেছেন, ভারতের বিবৃতি ‘ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর’। তিনি বলেন, পাকিস্তান কোনো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেয়নি, বরং আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে রয়েছে।

দেশ রূপান্তর

রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘আ.লীগ নিষিদ্ধে উত্তাল দেশ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং জড়িতদের দ্রুততম সময়ে বিচারের দাবিতে দিনভর উত্তাল ছিল সারা দেশ। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে পালিত হয়েছে বিক্ষোভ কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টি, হেফাজতে ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ইনকিলাব মঞ্চ, জুলাই ঐক্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের ডাকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ঘোষণা দেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছাড়ব না।

দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতায় ‘তিন সংস্থার সমন্বয়ে দেশ ছাড়েন হামিদ!’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশ ছাড়া নিয়ে চলছে তোলপাড়। ঘটনাটি জানাজানির পর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে মিছিলও হয়েছে। কীভাবে তিনি দেশ ছাড়লেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সরকারের নীতিনির্ধারকরা জানাচ্ছেন, আবদুল হামিদ দেশ ছেড়ে চলে যাবেন সেই তথ্য ছিল না। অথচ তিনি ভিআইপি প্রটোকল নিয়েছেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এমনকি সাবেক রাষ্ট্রপতি গাড়িতে বসেই ইমিগ্রেশন শেষ করেছেন। তার দেশত্যাগের বিষয়টি বিমানবন্দরের প্রভাবশালী তিন গোয়েন্দা সংস্থার সমম্বয়ে জানাজানি করা হয়েছিল বলে একটি সাধারণ ডায়েরিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় পুলিশের চার কর্তাকে বলির পাঠা বানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads