‘ভালো আছেন’ শাজাহান, ‘দিন ফিরবে’ আশাবাদী ইনু, রুপার মাথায় হাত কামরুলের

cmm

বিভিন্ন মামলায় আদালতে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও সাংবাদিকদের। এসময় সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান জানিয়েছেন, ‘ভালো আছেন’। সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘দিন আমাদেরও আসবে’।

আর সাংবাদিক ফারজানা রুপার মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করেছেন সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম।

ভালো আছেন শাজাহান

ক্ষমতার পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে গেল সাতমাস ধরে কারাগারে বন্দি থাকা সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান জানিয়েছেন, তিনি ‘ভালো আছেন’। রোজার ঈদটিও ‘ভালোভাবে কাটিয়েছেন’ বলেও ভাষ্য তার।

নিজের বর্তমান অবস্থার কথা সাবেক এই মন্ত্রী জানিয়েছেন বুধবার ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানা থেকে এজলাসে নেওয়ায় সময়।

এ সময় তিনি বলেন, “ভালো আছি।”

ঈদ কেমন কাটল জানতে চাইলে বলেন, “খুব ভালো কেটেছে। সন্ত্রাসীদের হাত থেকে নিরাপদে আছি। ইনশাআল্লাহ, ভালো আছি।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেন্দ্রিক যাত্রাবাড়ী থানার ৩ মামলায় সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানকে এদিন গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত।

৫ অগাস্টে সরকার পতনের পর সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে শাজাহান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডেও নেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি।

দিন ফেরার আশায় ইনু

এদিকে আদালতে গ্রেপ্তার শুনানিতে এসে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে শুনানি শুনছিলেন সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন। শুনানির এক পর্যায়ে ইনু হেসে মেননকে বলেন, ‘দিন আমাদেরও আসবে’। এসময় মুচকি হাসেন মেননও।

বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালতে বিভিন্ন মন্ত্রী এমপির সঙ্গে রিমান্ড ও প্রেপ্তার শুনানির জন্য তোলা হয় আওয়ামী লীগের সহযোগী দুইটি দলের হেভিওয়েট নেতা জাসদের ইনু ও ওয়ার্কার্স পার্টির মেননকে। শুনানির সময় কাঠগড়ায় পাশাপাশি দাঁড়ান ইনু ও মেনন। মেনন মুখে হাত দিয়ে একটু মনোযোগ সহকারেই সবার শুনানি শুনছিলেন।

পাশে দাঁড়িয়ে ইনুও যেন তার সঙ্গ দিচ্ছিলেন। বিভিন্ন মন্ত্রী এমপি আসামিদের শুনানির সময় কখনো হাসতেও, কখনো বিরক্ত হতে দেখা যায় তাদের। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাও বলেন তারা।

শুনানির এক পর্যায়ে হাসানুল হক ইনু হেসে মেননকে বলেন, “দিন আমাদেরও আসবে।” তবে এ কথার কোনো উত্তর না দিয়ে শুধু মুচকি হাসেন রাশেদ খান মেনন।

রুপার মাথায় হাত কামরুলের

বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালতে ভিন্ন মন্ত্রী-এমপির সঙ্গে রিমান্ড ও গ্রেপ্তার শুনানির জন্য তোলা হয় সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপাকে। কাঠগড়ায় এসেই দেখা হয় রুপা-শাকিলের। দীর্ঘদিন পর সাক্ষাৎ তাদের।

শাকিলের গায়ে ধূসর কালো রঙের একটি টিশার্ট পরা ছিল। আর ফারজানা রূপার গায়ে ছিল মেরুন রঙের মলিন সালোয়ার-কামিজ, মাথায় লাল ছোট্ট খোঁপা। এ দম্পতি শুনানির দিকে খেয়াল না দিয়ে দুজনে হাত ধরে কাঠগড়ার এক পাশে কথা বলতে থাকেন।

বেশ কয়েক মিনিট এ দম্পতি নিজেদের ভিতর গল্প করতে থাকেন। এর মাঝে তাদের গল্পের ভিতর ঢোকেন একাত্তর টিভির সিইও মোজাম্মেল হক বাবু। বাবুও বেশ কয়েক মিনিট ধরে রুপার সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পরই রুপা এগিয়ে যান সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামের দিকে। কামরুল রুপার মাথায় আলতো করে কয়েকবার হাত বুলিয়ে দেন। এরপর কিছুক্ষণ তারা কথাও বলেন।

এদিকে শুনানি শেষে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার কুতুবখালী এলাকায় ইমরান হাসান হত্যা মামলায় একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল হক বাবু, সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ ও সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ও উপস্থাপক ফারজানা রুপাকে গ্রেপ্তার দেখান আদালত।

এছাড়া একই থানাধীন দনিয়া এলাকায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে শুনানি শেষে তাদের হাজতখানায়, পরে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

গত বছরের ২১ আগস্ট ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads