দিল্লিতে ডেকে নিয়ে যে নির্দেশনা দিলেন শেখ হাসিনা

বৃহস্পতিবার দলের নেতাদের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার দলের নেতাদের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

একদিন আগেই খবর চাউর হয় শেখ হাসিনা দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৃহস্পতিবার বসছেন। কী সিদ্ধান্ত আসছে, কী দিকনির্দেশনা- তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যেও ছিল বেশ আগ্রহ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই বৈঠকে অংশ নেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ খ ম মোজাম্মেল হক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ও এসএম কামাল হোসেন।

২ ঘণ্টা ৫৪ মিনিটের ওই বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলের এই সংকটকালে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

গেল বছর আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এই প্রথম দলের নেতাদের সঙ্গে সামনাসামনি আনুষ্ঠানিক বৈঠক করলেন শেখ হাসিনা।

বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের একজন নেতা দ্য সান ২৪কে বলেন, নেত্রী আমাদেরকে ঐক্যের দিকে নজর দিতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে; এই পরিস্থিতিতে যা করণীয় করতে হবে।

সবাইকে সেভাবে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান ওই আওয়ামী লীগ নেতা।

এর আগে বৈঠকের শুরুতে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে সবার বক্তব্য শোনেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এসময় দলীয় নেতারা আশ্বস্ত করেন- তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মনোবল অটুট আছে; তারাও কাজ করে যাচ্ছেন।

অবশ্য শেখ হাসিনা কয়েকজনকে ঘিরে বিভিন্ন খবর নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

ওই সূত্রটি জানিয়েছে, তিনি সবাইকে সততার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তৃণমূলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলারও নির্দেশনা দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেছেন, তৃণমূল বিপদে থাকলে আমি বা আপনারা থেকে কী লাভ। সংকটে সবাইকে সবার পাশে থাকতে হবে।

অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বেশীরভাগ শীর্ষ ও মধ্যম সারির নেতা ৫ আগস্টের আগে ও পরে ভারতে আশ্রয় নিয়ে সেখানে কার্যত ‘স্থায়ীভাবে’ থাকছেন।

টানা ১৫ বছর দোর্দণ্ড প্রতাপের সঙ্গে দাপিয়ে বেড়ানো আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ রয়েছে, স্থগিত করা হয়েছে দলটির নিবন্ধন।

দলকে সক্রিয় রাখতে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে নেতাকর্মীদের যুক্ত করা হলেও আওয়ামী লীগের দৃশ্যমান কার্যক্রম গেল এক বছরে চোখে পড়েনি। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে বৈঠকে উপস্থিত আরও একজন নেতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, “আমাদের ব্যর্থতা নিয়ে তিনি সরাসরি কথা বলেছেন। আমরা সে দায়ভার স্বীকার করে নিয়েছি। তবে তিনি আমাদের ছাত্র সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। নেত্রী বলেছেন, ওরা তো চেষ্টা করছে, আপনাদের সমস্যা কোথায়?”

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে দলের ছয়জনকে ডেকে নেওয়া হলেও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ডাক পাননি।

আওয়ামী লীগের একজন নেতা দ্য সান ২৪কে জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে দিল্লিতে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে যেখানে আরও ছয় থেকে আটজন অংশ নেবেন। সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওই বৈঠকের জন্য ডাক পেয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর:

আরও পড়ুন