সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পেলেও বিষয়টি সম্পর্কে জানেন ‘নিয়ন্ত্রক’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী মিল মালিকরা এক জোট হয়ে এ দাম বাড়িয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন এ কথা জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “আমরা আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো। কী সিদ্ধান্ত নিই; সেটি আপনারা দেখবেন।”
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মিল মালিকদের একতরফা এভাবে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়টি সরকার ভালোভাবে নেয়নি।”
ভোগান্তিতে ক্রেতা: সরকার বলছে এক কথা, কোম্পানিগুলো আরেক কথা
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট থেকে পাঁচ লিটার তেল কিনে ফিরছিলেন চাকরিজীবী রনি তালুকদার। তিনি জানান, পরিচিত দোকানদার আগের দরে ৯২০ টাকায় দিয়েছেন। কিন্তু বেশিরভাগ দোকানেই নতুন ৯৬৫ টাকার বোতল বিক্রি হচ্ছে। “বোতলের গায়ে নতুন দাম লেখা আছে,” বলেন তিনি।
ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন জানিয়েছে, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় তারা সরকারকে অবহিত করেই সমন্বয় করেছে।
কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে—ব্যবসায়ীরা দরপত্র জমা দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু দাম বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
তবে সরকারের অনুমতি ছাড়া এভাবে দাম বাড়িয়ে ভোক্তার কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া ‘অবশ্যই অন্যায়’ বলে মন্তব্য করেছেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এএইচএম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, বিষয়টি জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খতিয়ে দেখতে পারে। সেই সঙ্গে অনুমতি ছাড়া কেন দাম বাড়ানো হয়েছে, সে ব্যাপারে কোম্পানিগুলোকে জিজ্ঞেস করতে পারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সফিকুজ্জামান বলেন, প্রতিবছর রমজানের আগে দাম বাড়ানোর চেষ্টা থাকে ব্যবসায়ীদের। রমজানে সরবরাহে যাতে ঘাটতি না হয়, সরকারকে সেটি আমলে রাখতে হবে।
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, সরকারকে জানিয়েই তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, দাম বাড়ানো হয়েছে কিনা, জানা নেই। তবে ব্যবসায়ীরা কয়েক দিন আগে দাম বাড়ানোর জন্য চিঠি দিয়েছেন। এখনও এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। সরকারের অনুমতি ছাড়া দাম কীভাবে বাড়ানো হয়েছে, সেই বিষয়ে আগামীকাল (বুধবার) খোঁজ নেওয়া হবে।



