পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ফুটবলার হওয়া মাতসুশিমা সুমাইয়ার জীবন হয়ে ওঠেছে দুঃস্বপ্নের মতো। হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি পাচ্ছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে অভিযোগ করেছেন উইমেনস সাফজয়ী এই ফরোয়ার্ড।
কোচ পিটার জেমস বাটলারের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করা ফুটবলারদের একজন সুমাইয়া। সতীর্থদের মতো এখনও নিজের অবস্থানে অনড় আছেন তিনি।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চলছে তুমুল চর্চা। কেউ খেলোয়াড়দের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তো কেউ বিপক্ষে। এর মধ্যে কেউ মাত্রা হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছেন বলে নিজের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজে লিখেছেন সুমাইয়া।
“আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম মাতসুশিমা সুমাইয়া। আমি বাংলাদেশ মহিলা জাতীয় ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়। ইন্টার স্কুলে ইংলিশ মিডিয়াম স্টুডেন্ট হয়ে খেলা থেকে শুরু করে মালদ্বীপে লীগ জেতা এবং বাংলাদেশের হয়ে সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪ জেতা-এই যাত্রাটা আমার কাছে বিশ্রী ছিল।”
“যখন থেকে আমি এই পথটি বেছে নিয়েছি, আমার স্বপ্ন ছিল সেই তরুণ শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করা, যাদের বাবা-মা চায়, তারা শুধু পড়াশুনার উপর মনোযোগ নিবদ্ধ করুক। আমি দেখাতে চেয়েছিলাম যে আবেগ এবং উৎসাহ বাধা ভেঙ্গে দিতে পারে। কিন্তু আজ, আমি আফসোস নিয়ে বসে থাকি— আক্ষেপ নিয়ে, আমার শিক্ষা, আমার পরিবার, ঈদ, সব বিসর্জন দিয়ে এমন একটি দেশের সেবা করার জন্য যে আমাদের সংগ্রামের তারিফ করতে জানে না।”
পিটারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে যে তিন পৃষ্ঠার বিবৃতি পাঠ করেছিলেন খেলোয়াড়রা, এর ইংরেজি কপি লিখেছিলেন সুমাইয়া। এরপর থেকে নানাভাবে হুমকি পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
“আমি আমার বাবা-মায়ের সাথে যুদ্ধ করেছিলাম ফুটবল খেলার জন্য, বিশ্বাস করেছিলাম যে আমার দেশ আমার পাশে থাকবে, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। একজন ক্রীড়াবিদের মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কেউ সত্যিই চিন্তা করে না। আমার এবং দলের সহকর্মীদের জন্য আমরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছি, তা নিয়ে ইংরেজিতে চিঠি লেখার সর্বনিম্ন ক্ষমতা আমার আছে। গত কয়েকদিন ধরে, আমি অগণিত প্রাণহানি ও ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি— শব্দগুলি আমাকে এমনভাবে ধ্বংস করেছে যা আমি কল্পনাও করিনি।”
“আমি জানি না, এই আঘাত থেকে সারতে আমার কত সময় লাগবে, কিন্তু আমি জানি, যে কাউকে তাদের স্বপ্ন অনুসরণ করার জন্য এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে না।”