রোববারের পত্রিকা: ‘নীরবে ডুবছে পুঁজিবাজার’

newspaper

দেশের অর্থনীতির নানা সংকট তুলে ধরার পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা এবং সংস্কারের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনে করা কমিশনের কার্যক্রমের অগ্রগতির খবর রোববার গুরুত্ব দিয়েছে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। অর্থনীতির সংকটময় দিক তুলে ধরে করা প্রতিবেদনগুলোর মধ্যে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজারে চলা পতন কোনো উদ্যোগেই থামাতে না পারা, গ্যাস সংকটের কারণে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়া, মূলধনি যন্ত্রপাতির ঋণপত্র খোলা ৩০ শতাংশ কমে যাওয়া, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বাজেটের অর্ধেকও বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়গুলো বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এর বাইরে সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর আলোচনা ও নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার খবরও গুরুত্ব পেয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রোববার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে বা প্রথম পাতায় গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে।

কালের কণ্ঠ

পুঁজিবাজারে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা পতনে পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীদের পথে নামার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘নীরবে ডুবছে পুঁজিবাজার’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজার থেকে মুনাফা করার আশা ‘নিরাশা’য় পরিণত হয়েছে। উল্টো দিনে দিনে পুঁজি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। সরকার পতনের পর আশায় বুক বেঁধেছিলেন ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারী। কিন্তু সেই বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ এখন পথে নেমেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজারে চলা পতন থামছে না কোনো উদ্যোগেই। চলমান অস্থিরতার মধ্যে ভালো কম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়াকে ‘আশঙ্কাজনক’ বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে দরপতনের প্রধান কারণ হচ্ছে আস্থার অভাব। এ ছাড়া ব্যাংক খাতে উচ্চ সুদের হার, মার্জিন ঋণের বিপরীতে কেনা শেয়ার বিক্রি (ফোর্সড সেল), নিয়ন্ত্রক সংস্থায় অস্থিরতাসহ নানা কারণে অনেকে বাজার ছাড়ছেন। ভালো ব্যাংকগুলো এখন আমানতের ক্ষেত্রে ১১ শতাংশের ওপরে সুদ দিচ্ছে, অন্যদিকে ট্রেজারি রেটও রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। এর প্রভাবে শেয়ারবাজার থেকে বিনিয়োগ সরে গেছে এবং বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। একসময় পুঁজিবাজারে ৩৩ লাখ সক্রিয় বিনিয়োগকারী ছিলেন, এখন তা নেমেছে ১২ লাখে।

প্রথম আলো

জুলাই আন্দোলনের ৪০টি মামলা পর্যালোচনার ভিত্তিতে ঢালাও মামলার নেপথ্যে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া এবং লোকজনকে মামলায় ফাঁসানো বা হয়রানির তথ্য তুলে ধরে করা খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘ঢালাও আসামির নেপথ্যে বাণিজ্য, বিদ্বেষ, দ্বন্দ্ব’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিশোরগঞ্জের দুলাল রবিদাসের মৃত্যু হয়েছে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের (স্ট্রোক) কারণে। গত বছরের ২৭ জুলাই তাঁর মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে সনদ দিয়েছে স্থানীয় একটি হাসপাতাল। অথচ জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে তিনি নিহত হয়েছেন—এমন অভিযোগ এনে ২৯ নভেম্বর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। আসামি করা হয় অজ্ঞাতনামা ৬০০ জনসহ ৭৬৮ জনকে।

এ মামলা নিয়ে প্রথম আলোর অনুসন্ধানে চাঁদাবাজি ও পূর্বশত্রুতার জেরে হয়রানির অভিযোগসহ নানা অনিয়ম সামনে এসেছে। যে অভিযোগে মামলাটি হয়েছে, তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন দুলাল রবিদাসের স্বজনেরাই। ঘটনার সময়, হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা, আসামির তালিকা—সবই ভুয়া।

গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন থানায় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আহত হওয়ার ঘটনায়ও অনেক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রকৃত আসামি, সন্দিগ্ধ ব্যক্তির পাশাপাশি হয়রানিমূলকভাবেও অনেককে আসামি করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, অন্যত্র থাকা মানুষ ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিও রয়েছেন। দুলাল রবিদাসের মতো সাজানো ঘটনার পাশাপাশি কোথাও সত্য ঘটনার মামলায় এ রকম অনেককে আসামি করে ‘মামলা–বাণিজ্য’ হচ্ছে। মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার আশ্বাস, ভুলবশত আসামি করা হয়েছে মর্মে হলফনামা দিয়ে ও পুলিশ প্রতিবেদনে নির্দোষ দেখানোর প্রতিশ্রুতিসহ নানাভাবে এই বাণিজ্য করার অভিযোগ যেমন আছে, আবার প্রতিপক্ষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েও কাউকে কাউকে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগও রয়েছে।

সমকাল

গ্যাস সংকটের কারণে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট: শিল্পে উৎপাদন ব্যাহত’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে ছোট-বড় ইস্পাত কারখানা অর্ধশত। এর ৬২ শতাংশ চট্টগ্রামে। শুধু ইস্পাত নয়; গার্মেন্ট সেক্টরেও ঢাকার পরে অবস্থান চট্টগ্রামের। সংকটে পড়ে গত সাত মাসে এসব কারখানার ৫০টি বন্ধ হয়ে গেছে। আর বিনিয়োগের পথে থাকা শতাধিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম থমকে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট এবং দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে শিল্পকারখানায়; বিশেষত টেক্সটাইল, সিরামিক ও ইস্পাত কারখানা। এগুলো গ্যাসনির্ভর। তাই গ্যাসের সরবরাহ ঠিকমতো না পাওয়া, কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় গ্যাসের চাপ না পাওয়া এবং দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

২০২৩ সালে শিল্পে গ্যাসের দাম বেড়েছে ১৭৮ শতাংশ। চলতি মাসে (১৩ এপ্রিল) নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গ্যাসের দাম আরও ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, এতে নতুন বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি পুরোনো শিল্পমালিকরাও চাপে পড়েছেন। কারণ অনুমোদিত লোডের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহার করলে তাদেরও গুনতে হবে বাড়তি দাম।

ইত্তেফাক

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠকে দলটির দেওয়া প্রস্তাবের বিস্তারিত তুলে ধরে করা খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জামায়াতের আলোচনা: প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তি দুই বারের বেশি নয়, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রস্তাব’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পদে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে বা ১০ বছর থাকতে পারবেন-এমন প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়নে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনও চায় দলটি। এছাড়া, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠায় একমত হলেও দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে-তবে, নির্বাচন হতে হবে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে। গতকাল শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াত দলীয় এই অবস্থান তুলে ধরে।

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে দলের পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানান জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। তিনি জানান, জাতীয় সংসদ ও রাষ্ট্রপতির মেয়াদ অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছে জামায়াত। ঐকমত্য কমিশন এক বছর মেয়াদ কমিয়ে চার বছর করার প্রস্তাব দিলেও জামায়াত চায় এই মেয়াদ পাঁচ বছরই থাকুক।

যুগান্তর

ছাত্র-জনতার চব্বিশের অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যা এবং আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরে খুন ও গুমের অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে হওয়া প্রায় আড়াই হাজার মামলায় সহস্রাধিক পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রতিবেদন দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর।জুলাই অভ্যুত্থানসহ ১৫ বছরে গুম খুনের ২৪৫০ মামলা: আসামি ১১৬৮ পুলিশশিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার চব্বিশের অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যা এবং আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরে খুন ও গুমের অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার পাহাড় জমেছে। জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় দায়ের হওয়া মামলার সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৩৪০টি। এছাড়া স্বৈরাচারের আমলে অসংখ্য খুন ও গুমের ঘটনায় যেসব পুলিশ সদস্য জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আরও প্রায় ১ হাজার ১১০টি। সব মিলিয়ে এসব অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে গতকাল পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশে ১ হাজার ১৬৮ জন পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে ২ হাজার ৪৫০টি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, সিআর ও জিআর মামলায় সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যের আসামির সংখ্যা ১ হাজার ৩৩৮ জনে উন্নীত হতে পারে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ তাদের যুগপৎ আন্দোলনে শরিক ও সমমনা দলগুলোর মধ্যে শঙ্কা-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে– এমন একটি খবর প্রথম পাতায় গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘নির্বাচন নিয়ে বাড়ছে উৎকণ্ঠা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে শরিক ও সমমনা দলে। তাদের মতে নির্বাচন নিয়ে রীতিমতো টালবাহানা শুরু হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করা হচ্ছে না কবে নাগাদ হবে মানুষের কাঙ্ক্ষিত এ নির্বাচন। একবার বলা হচ্ছে, আগামী ডিসেম্বর লক্ষ্য ধরেই নেওয়া হচ্ছে সব রকমের প্রস্তুতি। আবার বলা হচ্ছে, ২০২৬ সালের জুন পার হবে না।

অন্যদিকে উপদেষ্টারা একেকজন একেক কথা বলছেন। আগামী পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার আকাঙ্ক্ষাও ব্যক্ত করছেন কেউ কেউ। নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন প্রলম্বিত করতে চায়। জামায়াতে ইসলামীসহ আরও দু-একটি দলের ভূমিকাও অস্পষ্ট। এ অবস্থায় নির্বাচন আদৌ হবে কি না তা নিয়েও সন্দিহান অনেকে। সবাই আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রয়েছেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। আবার নির্বাচন নিয়ে দেশিবিদেশি ষড়যন্ত্রের গন্ধও পাচ্ছেন কেউ কেউ। বিএনপির নীতিনির্ধারণী মহলের সদস্য ও সমমনা দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বণিক বার্তা

টানা তিন অর্থবছর ধরে দেশে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘মূলধনি যন্ত্রপাতির ঋণপত্র খোলা কমেছে ৩০ শতাংশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা তিন অর্থবছর ধরে দেশে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমছে। চলতি অর্থবছরেও এ খাতের ঋণপত্র (এলসি) হ্রাসের প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। তিন বছর আগে এক অর্থবছরে মূলধনি যন্ত্রপাতির এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৬০০ কোটি বা ৬ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরে তা মাত্র ১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য মাত্র ১১৫ কোটি ৩৯ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ২৪ শতাংশ কমে যাওয়ার পরও এ আট মাসে ১৬৫ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি আরো ৩০ দশমিক ১০ শতাংশ কমে গিয়েছে। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে মূলধনি যন্ত্রপাতির এলসি নিষ্পত্তি কমেছিল ২৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

ব্যাংক নির্বাহী ও উদ্যোক্তারা বলছেন, যেকোনো শিল্প স্থাপনের মূলে রয়েছে মূলধনি যন্ত্রপাতি। বাংলাদেশের শিল্প খাতের মূলধনি যন্ত্রপাতির বড় অংশই আমদানিনির্ভর। যন্ত্রপাতি আমদানি করেই উদ্যোক্তারা নতুন কারখানা স্থাপন করেন। এর মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। কিন্তু টানা তিন বছর ধরে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমছে। তার মানে দেশে নতুন শিল্প স্থাপন বা কর্মসংস্থান বিকাশের পথ ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হচ্ছে।

নয়া দিগন্ত

চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বাজেটের অর্ধেকও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি– এমন খবর প্রথম পাতায় গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে নয়া দিগন্ত। ‘অর্থবছরের আট মাসে অর্ধেক বাজেটও বাস্তবায়ন হয়নি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮ মাসে বাজেটের অর্ধেকও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। মূল বাজেট তো দূরের কথা, সংশোধিত বাজেটও অর্ধেক বাস্তবায়ন করা যায়নি। তবে এর আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে এবার বাজেট বাস্তবায়নের হার কিছুটা বেড়েছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই ‘২৪-ফেব্রুয়ারি ‘২৫) বাজেট বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে অর্ধেকের চেয়ে কম। আলোচ্য সময়ে মূল বাজেটের প্রায় ৪০ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেটের প্রায় ৪৩ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে।

এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে বাজেট বাস্তবায়ন হার ছিল মূল বাজেটের প্রায় ৩৭ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেটের প্রায় ৪০ শতাংশ। সে হিসাবে উভয় ক্ষেত্রেই চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে বাজেট বাস্তবায়ন হার প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে।

আজকের পত্রিকা

ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পে অর্থায়নকারী চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণের অর্থ ছাড় না করায় ঠিকাদারের বিল পরিশোধ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘২০০০ কোটি টাকার বিল দিচ্ছে না চীনা ব্যাংক’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বিভিন্ন অবকাঠামোর কিছু কাজ বাকি থাকলেও এই পথে নিয়মিত বাণিজ্যিক ট্রেন চলছে। তবে এই প্রকল্পে অর্থায়নকারী চীনের এক্সিম ব্যাংক শেষ পর্যায়ে ঋণের অর্থ ছাড় না করায় ঠিকাদারের বিল পরিশোধ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণের অর্থ ছাড় না করায় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১০টি বিল বাবদ ঠিকাদারের প্রায় ১ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। অর্থ ছাড়ের জন্য ব্যাংকটিকে গত বছর থেকে তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে তিন থেকে চারবার এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি, ঋণের অর্থও ছাড় হয়নি।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সর্বশেষ ৭ এপ্রিল অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), চীনের এক্সিম ব্যাংক, রেলপথ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালট্যান্টের (সিএসসি) প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ঋণের অর্থ ছাড় না করার কারণ জানতে চেয়ে ইআরডি থেকে ব্যাংকটিকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে ২০২৪ সালের ২৪ অক্টোবর ব্যাংকটির প্রতিনিধিদলের প্রকল্প পরিদর্শনের প্রতিবেদনও পাঠাতে বলা হবে চিঠিতে।

দেশ রূপান্তর

গত কয়েক মাসে অন্তত ২৭টি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের খবর পাওয়া গেছে। হঠাৎ করে এত দল গঠনের কারণ বিশ্লেষণ করে তৈরি করা প্রতিবেদনকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘বড় দলের ভোটে ভাগ বসাতে ছোট ছোট দল’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যেই চলছে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ। প্রায় প্রতিদিন কয়েকজন মিলে রাজনৈতিক দল ঘোষণার খবর আসছে। গত কয়েক মাসে অন্তত ২৭টি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের খবর পাওয়া গেছে। মূলত দুই কারণে ছোট রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটছে নির্বাচনে বেশিসংখ্যক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ দেখানো ও বড় রাজনৈতিক দলের ভোটে ভাগ বসানো।

জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে রূপ দিতে বদ্ধপরিকর সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য নির্বাচনে বেশিসংখ্যক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। সরকারের নির্বাচনকেন্দ্রিক এ মনোভাব টের পেয়ে নতুন নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করছে। সর্বশেষ নিবন্ধন পাওয়া দলসহ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫০টি। সমাজে কিছুটা চেনাজানা আছে এমন কয়েকজন মিলেই একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করছে। এটা অনেকটা ‘শত ফুল ফুটতে দাও’ কথার মতো।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads