বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক খবর দিয়ে রোববার প্রধান প্রতিবেদনে সাজিয়েছে দেশের সংবাদপত্রগুলো। এর মধ্যে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন ধরনের তৎপরতার পাশাপাশি বিভিন্ন ইস্যুতে দলগুলোর অবস্থান নিয়ে করা খবর গুরুত্ব পেয়েছে কয়েকটি সংবাদপত্র। এ ছাড়া দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ, রাজধানীসহ দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল বেড়ে যাওয়া, সরকারের সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি এবং দেশের সার্বভৌম সীমা লঙ্ঘন করে বান্দরবানে থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের রেমাক্রি মুখ এলাকায় জলকেলি উৎসবে সামরিক পোশাকে আরাকান আর্মির সদস্যদের অংশগ্রহণের খবরও গুরুত্ব পেয়েছে কয়েকটি সংবাদপত্রে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রোববার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

কালের কণ্ঠ
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর গত আট মাসে ২২টি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘আট মাসে ২২ দলের জন্ম’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর গত আট মাসে ওই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) ২২টি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে।
গত বছরের শেষ চার মাসে আত্মপ্রকাশ করে ১১টি দল। আর চলতি বছরের প্রথম চার মাসে আত্মপ্রকাশ করেছে ১১টি দল। এর মধ্যে গত বছর আত্মপ্রকাশ করা বেশির ভাগ দল সাংগঠনিকভাবে নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। আর চলতি বছর আত্মপ্রকাশ করা দলগুলোর মধ্যে এনসিপিসহ দু-তিনটির দল গঠনের কাজ এখনো প্রক্রিয়াধীন।
নতুন আত্মপ্রকাশ করা কয়েকটি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা নির্বাচন কমিশনের শর্ত অনুযায়ী জেলা ও উপজেলায় কমিটি গঠন ও দলীয় অফিস স্থাপনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এ উপলক্ষে রমজান ও ঈদে দলগুলোর নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ ও ইফতারের কর্মসূচি পালন করেন।
তবে এনসিপিসহ চলতি বছর আত্মপ্রকাশ করা বেশির ভাগ দল এখনো জেলা ও উপজেলার কমিটি ঘোষণা করতে এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এ জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছে এবং করতে যাচ্ছে দলগুলো।

প্রথম আলো
বিজিবি এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ১৪৩ কেজি অবৈধ সোনা উদ্ধার করেছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘সাত মাসে ১৪৩ কেজি সোনা জব্দ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোনা চোরাচালান থেমে নেই। বিমানবন্দরে এখনো নিয়মিত চোরাচালানের সোনা ধরা পড়ছে। আবার সীমান্তেও পাচারের সময় ধরা পড়ছে অবৈধ সোনা।
যেমন গত ১১ ফেব্রুয়ারি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় ৩ কেজি ২৮৯ গ্রাম সোনাসহ এক যাত্রীকে আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী হুদাপাড়ার একটি গোয়ালঘর থেকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পরিত্যক্ত অবস্থায় ২ কেজি ৩৩৫ গ্রাম সোনা জব্দ করে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)।
দুই ঘটনায় ধরা পড়া সোনার পরিমাণ ৫ কেজি ৬২৪ গ্রাম, যার বর্তমান বাজারমূল্য ৭৭ কোটি টাকার বেশি।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সোনা চোরাচালানের আশ্রয়দাতা বদলেছে; কিন্তু চোরাচালান বন্ধ হয়নি। চোরাচালানকারীরা দেশের ভেতরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সীমান্তে নজরদারির ঘাটতিকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে চোরাচালান অব্যাহত রেখেছেন।
বিজিবি এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের হিসাবে, এই দুই সংস্থা আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে ১৪৩ কেজি অবৈধ সোনা উদ্ধার করা করেছে, যার বর্তমান বাজারমূল্য ১৯৬ কোটি টাকার বেশি।

সমকাল
সাধারণ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন, সংবিধান সংশোধনে সংসদের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন ও গণভোট এবং জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনে বিএনপি রাজি নয়– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘আনুপাতিক উচ্চকক্ষ, এনসিসি গণভোটে রাজি নয় বিএনপি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন, সংবিধান সংশোধনে সংসদের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন ও গণভোট এবং জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনে শক্ত আপত্তি আছে বিএনপির। তারা এ বিষয়ে কোনো আপসও করবে না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ এবং রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে চলমান আলোচনায় আজ রোববারের নির্ধারিত আলোচনায়ও বিএনপি এই অবস্থান তুলে ধরবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দলটি কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছিল।
বিএনপি মনে করছে, ভোটের অনুপাতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন এবং সংবিধান সংশোধনে উচ্চকক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন বাধ্যতামূলক করা হলে নির্বাচিত সংসদের ক্ষমতা কমে যাবে।

ইত্তেফাক
আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের ঝটিকা মিছিল বের করার ঘটনা বেড়েই চলেছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, বাড়ছে গ্রেফতারও’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের ঝটিকা মিছিল বের করার ঘটনা বেড়েই চলেছে। গত এক সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অর্ধশত ঝটিকা মিছিল হয়েছে। সারা দেশে জেলা, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দলীয় নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল বের করছে। এসব মিছিলে ফটোসেশন করা হচ্ছে। অনেক নেতাকর্মী সোশ্যাল মিডিয়ায় ছদ্মনামের আইডিতে সেগুলো পোস্ট করছেন। মিছিলের ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশের বাইরে পলাতক থাকা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে।
মিছিলের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাও বেড়ে গেছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে ১ মার্চ পর্যন্ত ২২ দিনে সারা দেশে অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সাড়ে ১২ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার হন। এর পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী গ্রেফতার অভিযান একটু থেমে ছিল। গত রবিবার রাজধানীর বাড্ডায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একটি ঝটিকা মিছিল বের করে। মিছিলটি উত্তর বাড্ডা থেকে রামপুরা বাজারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে দুই শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে এই মিছিল করার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। এর পরই আওয়ামী লীগের মিছিলের প্রতি পুলিশকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

যুগান্তর
‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ প্রকল্পে আওয়ামী লীগপন্থী বুদ্ধিজীবীরা লুটপাট করেছেন– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘বুদ্ধিজীবীদের এ কেমন কাণ্ড’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ প্রকল্পে রীতিমতো লুটপাট করেছেন আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা। নির্ধারিত কাজ সম্পন্ন না করেই সাড়ে ২৩ কোটি টাকার প্রকল্প থেকে ১৩ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তাদের প্রতিষ্ঠান নিয়েছে প্রায় সাত কোটি টাকা। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) পর্যালোচনা কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে। এটি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে এই কার্যক্রম অসমাপ্ত রেখে প্রকল্প বাতিলের সুপারিশ করা হয়। অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আজ বৈঠকে বসছে মন্ত্রণালয়। এমন অনিয়ম ও দুর্নীতি দেখে সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন-চেতনার দোকান খুলে এই বুদ্ধিজীবীদের এ কেমন কাণ্ড।

মানবজমিন
আগামী বছরের এপ্রিলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে মানবজমিন। ‘ছাব্বিশের এপ্রিলে হতে পারে নির্বাচন’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী বছরের এপ্রিলে হতে পারে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানালেও নানা কারণে নির্বাচনটি এপ্রিলে আয়োজনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বড় কোনো সংকট তৈরি না হলে জাতীয় নির্বাচন এই সময়ের বাইরে যাবে না বলে সরকারি সূত্রে মানবজমিন জানতে পেরেছে।
বিষয়টি নিয়ে সরকারে থাকা ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে সরকারপ্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসও আলোচনা করেছেন। দলগুলোর দাবি অনুযায়ী ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন খুব সহজ নয় বলে মনে করছেন সরকার সংশ্লিষ্টরা। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে নির্বাচন করা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়ে থাকে এই সময়ে। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারি-মার্চে পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর পড়ায় এই সময়ে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। ঈদের পর নির্বাচন আয়োজন সুবিধাজনক বিবেচনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে এপ্রিলে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হতে পারে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
সংস্কার ও সুস্পষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ নিয়ে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘সংস্কার নির্বাচনে বিভক্তি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘিরে সরগরম দেশের রাজনীতি। সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘কম সংস্কার চাইলে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আর বেশি সংস্কার চাইলে জুনে নির্বাচন হবে।’ বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সংস্কার ও সুস্পষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে।
দেশের প্রধান বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি বলছে, সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। ন্যূনতম সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। অন্যতম রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী বলছে, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে। আর আগস্টের ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের নিয়ে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের আগে জাতীয় নির্বাচনের বিরোধী। এ নিয়ে চলছে তর্কবিতর্ক। নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে দলগুলোতে বিভক্তি এখন প্রকট।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংস্কারের বিষয়ে সুপারিশগুলোর সঙ্গে একমত নয় বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিচার বিভাগ সংস্কারের ২৩ সুপারিশের মধ্যে ২০টিতে বিএনপি একমত। দুদক সংস্কারের ২০ সুপারিশের ১৯টিতে একমত ও আংশিক একমত। জনপ্রশাসন সংস্কারের ২৬ প্রস্তাবের অর্ধেকের বেশি বিষয়ে দলটি একমত, বাকিগুলোর বিষয়ে মন্তব্য রয়েছে। আর সংসদে দুজন ডেপুটি স্পিকারের মধ্যে একজন বিরোধী দল থেকে মনোনীত করতে একমত বিএনপি।

বণিক বার্তা
সরকারের সাবেক এ আমলা মিহির কান্তি মজুমদার ও তার ছোট ভাই আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বনজ কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির নানা অভিযোগ ওঠার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘দুই ভাই মিহির কান্তি মজুমদার ও বনজ কুমার মজুমদার’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর ধানমন্ডির ৫ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ি (প্লট নম্বর ৫৭)। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সরকারি বাসভবনের পাশেই এর অবস্থান। পুরনো তিনতলা সাদা রঙের এ বাড়িতে একসময় অফিস করতেন ব্যাংক ও আর্থিক খাতের আলোচিত লুটেরা প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার)। দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পুঁজিবাজার থেকে যিনি ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ লোপাট করে ভারত পালিয়ে যান।
পিকে হালদারের রেখে যাওয়া অফিসের হাল ধরেছেন আলোচিত সাবেক সচিব মিহির কান্তি মজুমদার। অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সরকারের সাবেক এ আমলা নিয়মিতই ধানমন্ডির ওই বাড়িতে অফিস করছেন। মিহির কান্তি মজুমদারের আপন ছোট ভাই আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বনজ কুমার মজুমদার। বড় ভাইয়ের মতো সাবেক এ অতিরিক্ত আইজিপির বিরুদ্ধেও আছে গুরুতর অভিযোগ। দেশের স্বর্ণ চোরাচালান ও হুন্ডি তৎপরতার নিয়ন্ত্রক হিসেবে ভূমিকা রাখার অভিযোগ রয়েছে বনজের বিরুদ্ধে।

আজকের পত্রিকা
এএফসি হেলথ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভারতীয় চেইন হসপিটাল ফর্টিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউটের নাম ভাঙিয়ে শতকোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ ওঠার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘ফর্টিস হাসপাতালের নামে শতকোটি টাকা লোপাট’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় চেইন হসপিটাল ফর্টিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউটের নাম ভাঙিয়ে শতকোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে এএফসি হেলথ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও কুমিল্লায় ‘ফর্টিস’ নামে চারটি শাখা হাসপাতাল দেখিয়ে ব্যাংক থেকে এবং দুটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের কারখানা দেখিয়ে শেয়ারবাজার থেকে এই টাকা তুলে নেয়।
এর মধ্যে সব সেবা বন্ধ হয়ে গেলেও প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারবাজারে থাকা দুই কোম্পানির লেনদেন চলছে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত বিনিয়োগকারীরা। আর ব্যাংক চিন্তিত অনাদায়ি ঋণ নিয়ে।
ফর্টিস চেইন হাসপাতালের নাম দেখে এএফসিকে ঋণ দিয়ে বিপাকে পড়া ব্যাংকটির নাম ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল)। হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ৫০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে গত সাত বছরেও শোধ করেনি এএফসি হেলথ লিমিটেড, যা এখন সুদাসলে দাঁড়িয়েছে ৯০ কোটি টাকায়।

নয়া দিগন্ত
বাংলাদেশের সার্বভৌম সীমা লঙ্ঘন করে বান্দরবানে থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের রেমাক্রি মুখ এলাকায় অনুপ্রবেশ করে সামরিক পোশাকে জলকেলি উৎসব করেছে আরাকান আর্মি– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্ত। ‘সার্বভৌমত্ব নিয়ে শঙ্কা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সার্বভৌম সীমা লঙ্ঘন করে বান্দরবানে থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের রেমাক্রি মুখ এলাকায় অনুপ্রবেশ করে সামরিক পোশাকে জলকেলি উৎসব করেছে আরাকান আর্মি। বান্দরবান সীমান্তের ১০ কিলোমিটার ভেতরে রেমাক্রি জলপ্রপাতে স্থানীয় পাহাড়িদের নিয়ে আরাকান আর্মির সদস্যরা গত ১৬-১৭ এপ্রিল এই উৎসবে অংশ নেয়। এই উৎসবের সচিত্র ভিডিও আরাকান আর্মি তাদের সামাজিক গণমাধ্যম অ্যাকাউন্টে শেয়ার করে।
বান্দরবানের থানচির রেমাক্রি মুখ এলাকায় মিয়ানমারের সশস্ত্রবিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও তাদের রাজনৈতিক শাখা ইউএলএর অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধানে আরাকা ওয়াটার ফেস্টিবল নামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয়রা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে প্রায় ১০ কিমি. অভ্যন্তরে এই ধরনের আয়োজনকে সরাসরি সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। উৎসবে আরাকান আর্মির ইউনিফর্মধারী ও অস্ত্রধারী সদস্যরা প্রকাশ্যে অংশ নেয় এবং মঞ্চে পারফর্ম করে। মঞ্চ ও আশপাশজুড়ে ছিল রাখাইনের ইউএলএ ও আরাকান আর্মির পতাকা ও প্রতীক। বাংলাদেশী মারমা ও অন্যান্য স্থানীয় পাহাড়ি সম্প্রদায়ের অংশবিশেষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতি এবং বক্তব্য ছিল আয়োজনের অংশ। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের নিষ্ক্রীয় দেখা গেছে।

দেশ রূপান্তর
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) থাকা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ছয়টি প্রকল্পের মধ্যে চারটি প্রকল্প সময়মতো শেষ করা সম্ভব হবে না– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘ছয় প্রকল্পের চারটিই হচ্ছে না সময়মতো’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) দুই শতাধিক প্রকল্প রাখা হয়েছে সমাপ্য প্রকল্পের তালিকায়। এর মধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ছয়টি প্রকল্প রয়েছে।
তবে এই ছয়টি প্রকল্পের মধ্যে চারটি প্রকল্প সময়মতো শেষ করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে ক্রীড়া পরিষদ। এ প্রকল্পগুলো আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি এ বিষয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ক্রীড়া পরিষদ। পরে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে চিঠি দেওয়া হয়েছে।