বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যসহ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের খবর রোববার গুরুত্ব পেয়েছে প্রায় সংবাদপত্রে। এই বৈঠকে হওয়া আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়েই প্রধান প্রতিবেদন সাজিয়েছে বেশিরভাগ সংবাদপত্র। এর বাইরে এবারের ঈদযাত্রায় সড়কে প্রাণহানির তথ্য বিশ্লেষণ, শ্রেণিকক্ষ সংকটে দেশের শতাধিক স্কুল-কলেজে পাঠদান ব্যাহত হওয়া, নরসিংদীর পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষ বাণ্যিজ্যের অভিযোগ, ভর্তুকি বাড়িয়ে দেশে বিদ্যুৎ সংকট কাটানোর চেষ্টা এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে পুলিশ সদস্যদের বরাদ্দ করা আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলির হিসাবে গরমিল পাওয়ার খবরও গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রোববার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

আজকের পত্রিকা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় পুলিশ সদস্যদের বরাদ্দ করা আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলির হিসাবে গরমিল পাওয়ার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘অস্ত্র-গুলির বয়ানে গোঁজামিল’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় পুলিশ সদস্যদের বরাদ্দ করা আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলির হিসাবে গরমিল পাওয়া গেছে। থানার নিবন্ধন খাতার তথ্যের সঙ্গে মামলার এজাহারে বর্ণিত অস্ত্র ও গুলির তথ্যে এ অমিল রয়েছে। এমনকি অস্ত্র বরাদ্দ করা এবং ব্যবহারকারী সদস্যের নামও ভিন্ন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অস্ত্র-গুলি বরাদ্দ ও খরচের হিসাবের এই গরমিলে হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের অপরাধ প্রমাণ করা জটিল হবে। কে কোন অস্ত্র ব্যবহার করেছেন, কার অস্ত্রের গুলিতে প্রাণহানি হয়েছে, এসব প্রমাণ করা সহজ হবে না।

সমকাল
এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি করা প্রতিবেদন দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘এবার ঈদে ৩২% দুর্ঘটনা ব্যাটারিচালিত রিকশায়’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদের ছুটির চার দিনে দেশের ১০টি বড় সরকারি হাসপাতালে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে যারা চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের ৩২ দশমিক ১০ শতাংশ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় আহত হন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের করা গত বছরের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ঈদুল আজহায় সড়কে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল মোটরসাইকেল; ৫১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এবার মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা প্রায় সমান।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের গত কোরবানির ঈদের প্রতিবেদনে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কোনো হিসাব ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এবার ঈদে কয়েকটি হাসপাতাল তাদের রোগী নিবন্ধন খাতায় দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে অন্যান্য যানবাহনের সঙ্গে অটোরিকশার তথ্যও সংরক্ষণ করে।
ঈদের ছুটির চার দিনে (৩০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল) রাজধানীর দুটি এবং ঢাকার বাইরে আট বিভাগীয় শহরের বিশেষায়িত আটটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে সমকাল। তাতে এই পরিসংখ্যান উঠে আসে। এতে দেখা যায়, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ৩২ দশমিক ২৭ শতাংশ, অটোরিকশায় ৩২ দশমিক ১০ শতাংশ, চার চাকার যানে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। হাসপাতালে আসা ২৫ দশমিক ৫০ শতাংশ আহত রোগীর দুর্ঘটনার কারণ নিবন্ধন খাতায় উল্লেখ করা হয়নি।

প্রথম আলো
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের করা জরুরি বৈঠকের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বাড়ানোর চিন্তা বাংলাদেশের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। অন্যদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য–ঘাটতি কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশি পণ্যের ওপরও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য গতকাল শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের এ কথাগুলো জানান। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক ডাকেন প্রধান উপদেষ্টা।
বাণিজ্য উপদেষ্টার ব্রিফিংয়ের সময় প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

কালের কণ্ঠ
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সম্ভাব্য পদক্ষেপের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘মার্কিন পণ্যে শুল্ক কমাবে বাংলাদেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানোর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ শুল্ক না বাড়িয়ে উল্টো তাদের পণ্যে শুল্ক কমানোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। চীন যেখানে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে রীতিমতো ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ বাধিয়ে দিয়েছে, সেখানে আলোচনার পথ সুগম করতে বাংলাদেশ হাঁটছে ঠিক ‘উদার’ পথে। তবে সব পণ্যে শুল্কছাড় দেওয়া হবে না। সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৩৫টি পণ্যে শুল্কছাড় দিতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রতিযোগী ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নিজেদের পণ্যের বাজার ধরে রাখতে দেশটির মন গলাতে বড় ধরনের শুল্কছাড়ের উদ্যোগ নিয়েছে।
শোনা যাচ্ছে, তারা মার্কিন পণ্যে শতভাগ শুল্কছাড় দেবে। এরপর আলোচনা করে তাদের পণ্যে শুল্ক কমাবে। আর বাংলাদেশ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিযোগ্য কিছু পণ্যের শুল্কছাড়ের প্রস্তাব তৈরি করেছে। এটি এখন প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে রয়েছে অনুমোদনের জন্য। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড—এনবিআর জানায়, যদি সব পণ্যেই শতভাগ শুল্কছাড় দেওয়া হয়, তাহলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হতে পারে এক হাজার ১০ কোটি টাকা। কিন্তু বাংলাদেশে শূন্য শুল্ক করার কোনোই সম্ভাবনা নেই।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধ ঘোষণার পর গতকাল শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পৃথক পৃথক প্রস্তাব দিয়েছে এনবিআর ও বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এনবিআর যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ১০ থেকে ১২টি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়া বিডার পক্ষ থেকেও কিছু প্রস্তাব এসেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সরকারি দুটি সংস্থার কাছ থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি পণ্যের ওপর শুল্কহার কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

ইত্তেফাক
শ্রেণিকক্ষ সংকটে দেশের শতাধিক স্কুল-কলেজে পাঠদান ব্যাহত হওয়ার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘দেড় বছরের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি ছয় বছরেও’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রেণিকক্ষ সংকটে দেশের শতাধিক স্কুল-কলেজে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণকাজের দায়িত্ব পেয়েছিলেন এমন প্রায় ১৫০ জন ঠিকাদার গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে পলাতক রয়েছেন। সূত্র মতে, দেড় বছরের কাজ তারা ছয় বছরেও শেষ করতে পারেননি। অথচ তাদের অধিকাংশই সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের যোগসাজশে তুলে নিয়েছেন বিলের সমুদয় টাকা। পলাতক এসব ঠিকাদারের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাব সরবরাহ করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার
শর্তে ইত্তেফাককে বলেন, অনিয়মের দায়ে গত ২০ নভেম্বর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তিন জন প্রকৌশলীকে ওএসডি করেছে মন্ত্রণালয়। তারা হলেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী (রুটিন দায়িত্ব) মো. রায়হান বাদশা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আফরোজা বেগম ও সমীর কুমার রজক দাস।

যুগান্তর
নরসিংদীর পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে ওঠা ঘুষ বাণ্যিজ্যের অভিযোগের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘বেসামাল নরসিংদীর এসপি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘টু লাখ টুমোরো।’ সঙ্গে লেখা হতো কারও নাম ও ব্যাংক হিসাব নম্বর। আবার কখনো টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে বিকাশ নম্বর লিখে দিতেন। মুঠোফোন এ রকম ক্ষুদে বার্তা পেয়ে লাখ লাখ টাকা ঘুস দিয়েছেন পুলিশের একজন ইন্সপেক্টর। আর ঘুস নিয়েছেন খোদ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি)। ঘুস টর্চারে অতিষ্ঠ হয়ে একপর্যায়ে একজন ইন্সপেক্টর মুখ খুলেছেন। ভুক্তভোগীর সংখ্যা অনেক হলেও চাকরি যাওয়ার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনা নরসিংদী জেলায়। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে এসপি হিসাবে যোগ দিয়েই এভাবে ঘুস কারবার চালাচ্ছেন নরসিংদীর এসপি আব্দুল হান্নান।
জেলার শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তার এমন ওপেন ঘুস বাণিজ্যের কারণে দুর্নীতিবাজ পুলিশ সদস্যরা বেশ খুশি। তারা অবারিত এই সুযোগ লুফে নিয়েছেন। এসপির সীমাহীন ঘুস চাহিদার জোগান দিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে একশ্রেণির পুলিশ সদস্য। কেউ কেউ নিজেরা লাভবান হতে জেলার সব অপরাধ সাম্রাজ্য ওপেন করে দিয়েছে।

বণিক বার্তা
ভর্তুকি বাড়িয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট কাটাতে সরকারের প্রচেষ্টার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘ভর্তুকি বাড়িয়ে চাপ সামলানোর চেষ্টা বাংলাদেশের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি, লুণ্ঠন বন্ধ এবং বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে করা চুক্তি বাতিলের দাবি ওঠে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দুর্নীতি ও আর্থিক চাপ কমাতে শুরুতেই এ খাতের বিশেষ আইন স্থগিত এবং পরে বাতিল করা হয়। পাশাপাশি বিদ্যুতের ক্রয়চুক্তি পর্যালোচনা, ট্যারিফ সংশোধনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের আট মাস পেরিয়ে গেলেও এ উদ্যোগে বিদ্যুতের সামগ্রিক ব্যয় যেমন কমেনি, তেমনি ভোক্তার বিদ্যুৎ খরচও কমানো যায়নি। এমনকি বিদ্যুতের কোনো ক্রয়চুক্তিও বাতিল করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার।
বিদ্যুৎ খাতে পাকিস্তান সরকারের মতো ভোক্তামুখী পদক্ষেপ না নেয়ার কারণে এ খাতের ব্যয় কমানো যাচ্ছে না বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তারা দাবি করেন, সরকারের বিদ্যুৎ খাতে নেয়া পদক্ষেপগুলো জনকল্যাণমুখী নয়। একই সঙ্গে তাদের সদিচ্ছারও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। পুরনো ও আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া বিদ্যুৎ খাতের মডেল অব্যাহত থাকায় এ খাতের স্থিতিশীলতা আনতে ভর্তুকিকে সমাধান বিবেচনা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যে বাংলাদেশের শুল্ক কমানোর উদ্যোগের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘মার্কিন পণ্যে কমছে শুল্ক’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির খড়গ নামাতে আমদানি বাড়িয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য মার্কিন পণ্যে শুল্ক ছাড়, আমদানি-নীতি সংশোধন, বাণিজ্যে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মার্কিন প্রশাসন ও দেশের বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা করে দু-এক দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে অবস্থানপত্র তৈরি করা হবে। এরপর শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ।
গতকাল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এক জরুরি বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত আসে। গত বুধবার (বাংলাদেশি সময় বুধবার দিবাগত রাত ২টা) হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন করে শুল্ক ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই ঘোষণায় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশি পণ্যে এতদিন গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল। এতে শঙ্কায় পড়েছেন পোশাক খাতসহ দেশের অন্যান্য রপ্তানি খাতের ব্যবসায়ীরা। এর প্রেক্ষিতে শুল্ক ইস্যু নিয়ে ব্যবসায়ী ও রপ্তানি খাতের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনার জন্য বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীকে নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। গতকাল সকাল থেকে চলে সেই আলোচনা।

নয়া দিগন্ত
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্ত। ‘মার্কিন প্রশাসনের সাথে কথা বলবেন ইউনূস’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশী পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ধিত শুল্ক আরোপ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি মার্কিন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। তিনি বলেছেন, উনি (মুহাম্মদ ইউনূস) আমাদের দেশের একটি বিশাল সম্পদ। তার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাকে এ বিষয়ে কাজে লাগানো হবে। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের থেকে আমাদের আমদানির পরিমাণও বাড়ানো হবে, যাতে দেশটির সাথে বাণিজ্য ঘাটতি কমে যায়।
গতকাল রাত ৯টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক ব্রিফিং তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে যমুনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ইস্যু নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাণিজ্য উপদেষ্টা ছাড়াও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আহসান এইচ মনসুর, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি (হাই রিপ্রেজেন্টিভ) খলিলুর রহমান, বেপজার চেয়ারম্যান লুৎফে সিদ্দিকী, বিডার প্রধান আবদুল্লাহ হারুণসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

দেশ রূপান্তর
বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে মার্কিন শুল্ক মোকাবিলার উদ্যোগ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা শুল্ক ইস্যুতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই দেশটির প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। সার্বিক বিষয়গুলো বিবেচনা করে বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে এনে তুলনামূলকভাবে প্রতিযোগী দেশের তুলনায় বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গতকাল শনিবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশি পণ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ট্যারিফ নীতির আওতায় ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের ঘোষণায় করণীয় নির্ধারণে জরুরি বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।