শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নিহতদের একটি তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে আগের দাবি করা সংখ্যার চেয়ে নিহতের সংখ্যা কমে গেছে ৫৬৫ জন।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই খসড়া তালিকায় মোট নিহতের সংখ্যা ৮৫৮ জন বলে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৪২৩ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছিল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের প্রধান, অতিরিক্ত সচিব খন্দকার জহিরুল ইসলামের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে আহত হিসেবে ১১ হাজার ৫৫১ জনের তথ্য প্রকাশ করা হয়।
সেখানে বলা হয়, জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে প্রতিপক্ষের আক্রমণে নিহত বা আহতদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করতে কাজ করছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ৬৪ জেলায় গঠিত জেলা কমিটি এবং গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেল।
এই খসড়া তালিকা আগামী সোমবার পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
তালিকায় থাকা নিহত ও আহতদের নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য যাচাই, সংশোধন ও চূড়ান্ত করতে সংশ্লিষ্টদের পরিবারের সদস্যদের মতামত চেয়েছে বিশেষ সেল।
এছাড়া এই দুটি তালিকার বিষয়ে কারও কোনও মতামত বা পরামর্শ থাকলে অথবা কিছু সংযোজন বা বিয়োজন করার মতো যুক্তিসঙ্গত তথ্য থাকলে তা সোমবারের মধ্যে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের ইমেইল [email protected] এই ঠিকানায় জানাতে বলা হয়েছে।
নিহত ও আহতদের তালিকা করার জন্য স্বাস্থ্যবিষয়ক এই কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি গঠন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যে কমিটি গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৪২৩ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানায়।
ওই সময় লিখিত বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক তালিকায় মোট ১ হাজার ৫৮১ জন ব্যক্তির তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তালিকা তৈরির কাজে আমাদের সহায়তা করেছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি, রেড জুলাইসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি সংস্থা।”
পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানীয় পর্যায়ের ব্যক্তিরাও তাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলে জানানো হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে দেশে কোটাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল জুলাইয়ের শুরুতে। সে মাসের মাঝামাঝিতে এসে আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পথে নেমে আসেন সাধারণ মানুষও। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ।
এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিও ছোড়া হয়। যার ফলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসতে থাকে মৃত্যুর খবর।
এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে হতাহতের এ তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়। পরে জুলাই-আগস্টে নিহত এবং আহতদের তালিকা তৈরি করতে ১৫ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে।