ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে এবং গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানিয়ে মরক্কোয় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। রোববার হাজারো বিক্ষোভকারী মরক্কোর রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখায়।
বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি প্রতি সমর্থন দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার মরক্কোর রাজধানী রাবাতের বিভিন্ন এলাকা হওয়া এই বিক্ষোভ ছিল সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম বৃহৎ প্রতিবাদ। বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের পতাকা পদদলিত করে।
তারা নিহত হামাস নেতাদের ব্যানার বহন এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ছবির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করে ক্ষোভ জানান।
মরক্কোর সাবেক রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা আবদেলহাক আল আরবিও বিক্ষোভে অংশ নেন। তিনি বলেন, যুদ্ধ যত দীর্ঘ হচ্ছে, জনরোষ ততই বাড়ছে। তামেসনার ৬২ বছর বয়সী বাসিন্দা বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, “এটা যুদ্ধ নয়— গাজাকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে।”
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা জানান, গাজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থানকে তার পূর্বসূরি জো বাইডেনের নীতির ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখছে।

কাসাব্লাঙ্কা থেকে পরিবারসহ বিক্ষোভে যোগ দেওয়া মোহাম্মদ তৌসি এপিকে বলেন, “ট্রাম্প যুদ্ধকে আরও খারাপ করেছেন। বাইডেন কিছু বিষয় লুকিয়ে রেখেছিলেন, কিন্তু ট্রাম্প সবকিছু খুলে দেখিয়েছেন।”
গত মাসে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েল গাজায় পুনরায় তীব্র বিমান ও স্থল হামলা শুরুর করার পর এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছে হাজার মানুষ। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৫ হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছে।
রোববার মরক্কোর পাশাপাশি তিউনিসিয়া ও ইয়েমেনেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। এ ছাড়া মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কায় ফিলিস্তিনপন্থী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ‘পুনর্গঠনের’ পরিকল্পনাকেও জাতিগত নির্মূল হিসেবে আখ্যা দেন, যেখানে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দমন-পীড়নের নিন্দা জানান বিক্ষোভকারীরা।