এই দেশ সবার: সেনাপ্রধান

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র নির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, এই দেশে কোনো জাতি বা ধর্মে ভেদাভেদ থাকবে না।

তিনি বলেন, “এই দেশ সবার। সম্প্রীতির এই বাংলাদেশে শত শত বছর ধরে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পাহাড়ি, বাঙালি, উপজাতি সবাই মিলে অত্যন্ত শান্তিতে আমরা বসবাস করে যাচ্ছি। সবাই একসঙ্গে এই দেশে সুন্দরভাবে ও শান্তিতে বসবাস করবো।” 

শনিবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির-সংলগ্ন পলাশীর মোড়ে শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওয়াকার এসব কথা বলেন।

সেনাপ্রধান বলেন, “সবাই আমরা এ দেশের নাগরিক। সবার অধিকার এ দেশে আছে। সেভাবেই আমরা ভবিষ্যতে আমাদের সোনালি দিনগুলো দেখতে চাই।”

তিনি বলেন, এই যে আনন্দঘন সময়, এখানে বাদ্য বাজছে, শ্রীকৃষ্ণের হাজার হাজার ভক্ত এখানে উপস্থিত আছেন। এই আনন্দে আমাদের সঙ্গে নেওয়ার জন্য আপনাদের কাছে আবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কার্যত আড়ালেই থাকছেন শেখ হাসিনা সরকারের পছন্দে সেনা প্রধানের দায়িত্ব পাওয়া ওয়াকার। দেশকে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বিভিন্ন সময় গলার স্বর চওড়া করলেও অবস্থার পরিবর্তনে তার তেমন কোনো ভূমিকা চোখে পড়েনি গত এক বছরে। উল্টো বিগত সরকারের পক্ষে কথা বলার দায়ে বহু রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে সেনা সদস্যদের হাতে।

অভিযোগ রয়েছে, সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে বিভিন্ন জায়গায় ‘মব জাস্টিসের’ মতো বহু ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে।

ওয়াকার বলেন, “আজকের এই দিনে আমাদের অঙ্গীকার- সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ আমরা সব সময় বজায় রাখব। এই দেশ সবার। অনুষ্ঠানে নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানও আছেন। নবম পদাতিক ডিভিশন আছে। আমরা সবাই মিলে সব সময় আপনাদের পাশে থাকব।”

“সশস্ত্র বাহিনী আপনাদের সঙ্গে কাজ করে যাবে। আপনারা নিশ্চিন্তে দেশে বসবাস করবেন। ধর্মীয় সব পর্ব বা অনুষ্ঠান উদযাপন করবেন। আনন্দ উদযাপন করবেন। আমরা একসঙ্গে এই আনন্দ ভাগাভাগি করে নেব।”

অনুষ্ঠানে বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান বলেন, শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা শুধু অসত্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসই জোগায় না, ন্যায়ের পথেও চলতে শেখায়। এই বাংলাদেশ আমাদের সবার। স্বাধীনতাকে রক্ষা করা আমাদের সবার পবিত্র দায়িত্ব। সবাই মিলে কাজ করলে বিশ্বের মানচিত্রে এই বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারব।

নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেন, আসুন, পারস্পরিক সহনশীলতার মাধ্যমে দেশকে আরও শক্তিশালী করি। শ্রীকৃষ্ণ যেন সমাজে ন্যায় ও আলোর সত্য প্রজ্বলিত করেন।

পরে প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে তিন বাহিনী প্রধান জন্মাষ্টমীর ঐতিহাসিক শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পলাশীর মোড় থেকে শুরু হয়ে জন্মাষ্টমীর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্কে গিয়ে শেষ হয়।

আরও পড়ুন