নানা ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ খবর দিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধান প্রতিবেদন সাজিয়েছে দেশের সংবাদপত্রগুলো। এর মধ্যে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে গড়ে ওঠা একের পর এক আন্দোলন থামাতে সরকারের হিমশিম অবস্থার পাশাপাশি আসন্ন গ্রীষ্মে বিদ্যুৎসংকটে দেশে লোডশেডিং বৃদ্ধির শঙ্কা, বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারে সরকার গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম এবং পুলিশের নিয়োগে বড় পরিবর্তন আসার খবরকে প্রধান প্রতিবেদন হিসেবে ছেপেছে কয়েকটি সংবাদপত্র। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বৃহস্পতিবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

কালের কণ্ঠ
গ্রীষ্মে সারা দেশে ব্যাপক লোডশেডিংয়ের শঙ্কা রয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘এবারও গ্রীষ্মে ভোগাবে লোডশেডিং’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাহিদার অতিরিক্ত সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকলেও প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাবে এবারও গরমের সময় বিদ্যুত্সংকটে লোডশেডিং বাড়বে। জ্বালানি আমদানির অনিশ্চয়তা ও বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের কারণে গ্রীষ্মে সারা দেশে ব্যাপক লোডশেডিংয়ের শঙ্কা রয়েছে বলে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। সংকটের মূলে রয়েছে জ্বালানিসংকট, বিপুল পরিমাণ দেনার বোঝা এবং ডলার সংকট। পরিস্থিতি যতটা সম্ভব সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বাংলাদেশ বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, এবার গরমে তিন হাজার মেগাওয়াটের বেশি ঘাটতি থাকতে পারে। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, লোডশেডিং হবে দেড় হাজার মেগাওয়াট। জ্বালানি সমস্যার কারণে বিদ্যুতের ঘাটতির শঙ্কা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, মার্চে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার এবং এপ্রিলে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ধরা হয়েছে। গত বছর একই সময় ১২ থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। এবার এটি ১৩ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে। ঘাটতি পূরণে আগের মতো এবারের গ্রীষ্মেও লোডশেডিং করতে হতে পারে।

সমকাল
নানা ষড়যন্ত্রের কারণে কিডনি রোগীদের চিকিৎসায় ‘১৫টি মেডিকেল কলেজে ও ৪৪টি জেলায় ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপন’ নামে প্রকল্পে পাঁচ বছরেও কোনো অগ্রগতি না থাকার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘ডায়ালাইসিস যন্ত্রের দরপত্রে ষড়যন্ত্র’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি যেন চড়ে বসেছে কচ্ছপের পিঠে। পাঁচ বছর পার হলেও নানা ফিকির আর ষড়যন্ত্রে এক আনা কাজও এগোয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ শুধু বাড়ছেই। এ পর্যন্ত প্রকল্পের টাকা খরচ হয়েছে মাত্র দুই লাখ। পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে গোঁজামিল দিয়ে তিন দফা দরপত্র আহ্বান করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শর্ত পূরণ করতে না পারায় প্রতিবারই দরপত্র বাতিল করতে হয়। প্রকল্প গতিশীল না হওয়ায় কেনা যায়নি যন্ত্রপাতি। ফলে ৪৪ জেলার কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস সেবা এখনও অধরা থেকে গেছে।
কিডনি প্রতিস্থাপনে রয়েছে আইনি নানা জটিলতা। এ কারণে রোগীর বেঁচে থাকার ‘অন্ধের যষ্টি’ ডায়ালাইসিস। তথ্য বলছে, দেশে বছরে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের কিডনি বিকল হয়। এ রোগের চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। এ ছাড়া অধিকাংশ সেবাকেন্দ্র ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় চিকিৎসা নিয়ে অতল সাগরে পড়েন জেলা পর্যায়ের রোগীরা। এ বাস্তবতায় কিডনি চিকিৎসার বিকেন্দ্রীকরণ ও রোগীর ভোগান্তি কমাতে ২০২০ সালে প্রায় ২৫৫ কোটি ২২ লাখ টাকার ‘১৫টি মেডিকেল কলেজে ও ৪৪টি জেলায় ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপন’ নামে প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল সরকার।

প্রথম আলো
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে সংযোগ সড়ক নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪৭৬ কোটি টাকা– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘সড়কটি যেন ‘সোনা দিয়ে মোড়ানো’ হবে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য ২৭ দশমিক ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়ক নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা। ফলে সড়কটির প্রতি কিলোমিটারে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪৭৬ কোটি টাকা।
দেশে এটাই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে ব্যয়বহুল সড়ক। এর আগে কোনো সড়ক নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি এত ব্যয় হয়নি।
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দরকে মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত করতে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সড়কটি ২৬ কিলোমিটার দুই লেন নির্মাণ করা হচ্ছে। বন্দরের কাছাকাছি বাকি অংশটুকু হবে চার লেন। সঙ্গে ছোট-বড় কয়েকটি সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। করতে হবে জমি অধিগ্রহণ।
তারপরও সড়কটি নির্মাণে বিপুল ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এক সেমিনারে সড়ক পরিবহন, রেলপথ ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বাংলাদেশে অবকাঠামো নির্মাণে বিপুল ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিদেশি অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্প তাঁকে অনুমোদন করতে হয়েছে। এর প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ৪৩৭ কোটি টাকা। এই সড়ক সোনা নাকি হীরা দিয়ে বাঁধানো হবে—এ প্রশ্ন রাখেন উপদেষ্টা। পাশাপাশি এ বিষয়ে তিনি প্রকৌশলীদের আত্মোপলব্ধির অনুরোধ জানান।

ইত্তেফাক
সংস্কারের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রমের অগ্রগতির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘টিকচিহ্নে জবাব দিতে অনীহা বিভিন্ন দলের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচটি সংস্কার কমিশন বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যে ১৬৬টি সুপারিশ করেছে সে বিষয়ে বিএনপি ও জামায়াতসহ ৩৪টি রাজনৈতিক দল-জোটের কাছে মতামত জানতে চেয়েছিল প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’। ছক আকারে মতামত জানতে চেয়ে কমিশন গত ৬ মার্চ চিঠি দেয় দল-জোটগুলোকে। চিঠিটি ছিল মালটিপল চয়েস কোয়েশ্চেন (এমসিকিউ) ধাঁচের। যাতে ‘টিকচিহ্ন’ দিয়ে ১২০টি প্রশ্নের বিষয়ে মতামত জানতে চাওয়া হয়। সঙ্গে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের হার্ডকপিও পাঠিয়েছিল। মতামত জানানোর শেষ দিন আজ বৃহস্পতিবার। তবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ‘টিকচিহ্ন’ দিয়ে মতামত জানাতে অনীহা প্রকাশ করছে বেশির ভাগ দল-জোট। একই সঙ্গে মতামত জানানোর জন্য বিএনপিসহ কয়েকটি দল ও জোট ইতিমধ্যেই কমিশনের কাছে বাড়তি সময় চেয়েছে।

যুগান্তর
জঙ্গি তকমা দিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার সাধারণ মানুষকে গুম করা হতো– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘জল্লাদের ভূমিকায় অ্যাকশন গ্রুপ’শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুরুতে সাদা পোশাকে তুলে নিতেন। পরে গুম করে রেখে দিতেন পুলিশ লাইনের গোপন বন্দিশালায় (আয়নাঘর)। তিন থেকে এক বছরের বেশি সময় অনেককে গুম করে রাখা হতো। এ তালিকায় বাদ যায়নি পুলিশ কর্মকর্তার ছেলেও। এ সময় চালানো হতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। নির্যাতনের একপর্যায়ে আয়নাঘরে রাখা ব্যক্তিদের জড়ানো হতো ভুয়া জঙ্গি মামলায়। যাদের কারও কারও হদিস মিলত না। নির্মম নির্যাতনের পর কাউকে সড়ক দুর্ঘটনা দেখিয়ে মেরে ফেলা হতো। পেট কেটে কারও লাশ ফেলে দেওয়া হতো নদীতে। চাঞ্চল্যকর এমন সব ঘটনায় এরই মধ্যে গুম কমিশন অব ইনকোয়ারিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী। এছাড়া ওই সময় বগুড়া ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্কের নাম ছিল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল। এলাকার মানুষ আরিফ মণ্ডলের আয়নাঘরের ভয়াবহতার কথা জানলেও ভয়ে মুখ খুলতেন না।

কালবেলা
পুলিশে নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালবেলা। ‘বড় পরিবর্তন আসছে পুলিশের নিয়োগে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় উচ্চাভিলাষী, অতিমাত্রায় অপেশাদার পুলিশ সদস্যদের বিধিবহির্ভূত বলপ্রয়োগের কারণে ভেঙে পড়া পুলিশ বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুলিশে নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এসব বিষয়ে পুলিশের পলিসি গ্রুপে একাধিক সভা হয়েছে। এসব সভায় পুলিশের নিয়োগ বিধি ও প্রশিক্ষণে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে বলপ্রয়োগ পদ্ধতি, অপারেশনাল অভিযানসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে পেশাদারিত্ব ফিরে এসেছে বাংলাদেশ পুলিশে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা ও বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

নয়া দিগন্ত
চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) জাতীয় বাজেট সংশোধনের কাজ শুরু করেছে অর্থমন্ত্রণালয়– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়াদিগন্ত। ‘৫৩ হাজার কোটি টাকার কাটছাঁট’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) জাতীয় বাজেট সংশোধনের কাজ শুরু করেছে অর্থমন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে চলতি অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট থেকে ৫৩ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছে। ফলে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার গিয়ে ঠেকেছে সাত লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকায়। এর আগে গত অর্থবছরের বাজেট থেকে ৫৭ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
এ দিকে চলতি অর্থবছরে বাজেটে সংশোধনের জন্য জারি করা হয়েছে বাজেট অথরিটি। এতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বরাদ্দের বিস্তারিত বিভাজন প্রেরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক খাতের বিপরীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বরাদ্দ হিসেবে উল্লিখিত অর্থের অতিরিক্ত কোনো ব্যয় বিল গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তবে এ কর্তৃত্ব জারির পর যেসব খাতে অর্থ বিভাগ কর্তৃক অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান করা হবে সেসব অতিরিক্ত বরাদ্দ এ সংশোধিত কর্তৃত্বের অংশ হিসেবে গণ্য হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
কিছুদিন শান্ত থাকার পর এখন আবার প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন পক্ষের বিক্ষোভ হচ্ছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন, যা মূলত চারটি ঘটনা নিয়ে প্যাকেজ আয়োজন। ‘আন্দোলন থামাতে হিমশিম’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ-আন্দোলন থামছে না। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নানা পক্ষের দাবিদাওয়ার কর্মসূচিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। কিছুদিন শান্ত থাকার পর এখন আবার প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন পক্ষের বিক্ষোভ হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম অবস্থা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। চলমান যে চারটি বিক্ষোভ কর্মসূচির খবর দিয়ে এই প্যাকেজ প্রতিবেদন করা হয়েছে, সেগুলো হলো– ‘শিক্ষকদের কর্মসূচিতে ফের জলকামান’, ‘পুলিশের ওপর হামলার প্রতিবাদ, মামলা’, ‘অচল স্বাস্থ্যসেবা, বন্ধ ইনডোর-আউটডোর ভোগান্তিতে রোগী’, ‘গার্মেন্ট কর্মীদের বিক্ষোভ সংঘর্ষ’।

আজকের পত্রিকা
ঢাকা ওয়াসার গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকাও। ‘প্রকল্প শেষ না হতেই পাইপ বদল, খরচ ১৫০ কোটি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনিয়ম যেন পিছু ছাড়ছে না ঢাকা ওয়াসার গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে। কমবেশি ৩ হাজার ৯৪ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান।
মূল প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৩ কিলোমিটার পানি সরবরাহের পাইপ কিনে বসানো হয়েছিল আগেই। এই পাইপ কেনাকাটায় উঠেছে অনিয়মের অভিযোগ। চীনের একটি আদালতে সংশ্লিষ্টদের মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছে পাইপ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এবার খালের তলদেশে বসানো এসব নিম্নমানের পাইপ কিছুটা পরিবর্তনের নামে আরও দেড় শ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। এক কিলোমিটার পাইপ পরিবর্তন করতে উঠেপড়ে লেগেছেন প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। এ জন্য টাকা চেয়ে চিঠিও দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগে।
জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুল রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে পাইপ পরিবর্তন বা পন্ড ক্রসিংয়ের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সুপারিশে পিডি ৮০ কোটি টাকার মতো চেয়েছেন। এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো। তবে একটুকু বলতে পারি, আমি এখানে কোনো টাকা দিতে পারব না, তা জানিয়ে দিয়েছি। যদি প্রকল্পের টাকা থেকে কাজ করতে পারে, তাহলে করুক।’

দেশ রূপান্তর
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময় অতি জরুরি মাস্ক ও পিপিইসহ বিভিন্ন চিকিৎসাসামগ্রী কেনাকাটায় অনিয়মের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘করোনায় প্রকল্প পরিচালকের আগ্রহ ছিল কেনাকাটায়’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সময় অতি জরুরি মাস্ক ও পিপিইসহ বিভিন্ন চিকিৎসাসামগ্রী ইউনিসেফ থেকে পাঠানো হয়েছিল বাংলাদেশে। কিন্তু জীবন রক্ষাকারী এসব চিকিৎসাসামগ্রী বিমানবন্দর থেকে খালাস না করে ৯ মাস ফেলে রাখে সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপো (সিএমএসডি) কর্তৃপক্ষ। এতে বিমানবন্দরকে ডেমারেজ চার্জ হিসেবে ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা প্রদান করতে হয়। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড পেনডামিক প্রিপ্রেয়ার্ডনেস প্রকল্পের (ইআরপিপি) আওতায় ৬ হাজার কোটি টাকার জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলছে, ওই সময় ইআরপিপির প্রকল্প (পিডি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. ইকবাল কবির ইউনিসেফ থেকে পাঠানো জরুরি চিকিৎসাসামগ্রী সিএমএসডির মাধ্যমে খালাসের ব্যবস্থা না নিয়ে সিন্ডিকেট করে চিকিৎসাসামগ্রী কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। স্বাস্থ্যসামগ্রী সরবরাহের সঙ্গে জড়িত নয় এমন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বেশি দামে পণ্য কিনে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাটের সুযোগ করে দিয়েছেন।

সংবাদ
ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’র অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সংবাদ। ‘শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যার’ অভিযোগে হাসিনাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে ‘গণহত্যার’ অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি গোলাম মোর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল এ আদেশ দেয় বলে প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ জানান।
আর যাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানার আদেশ হয়েছে, তারা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান এবং সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোল্লা নজরুল ইসলাম। এই পাঁচজনের মধ্যে শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর থেকে ভারতে পালিয়ে আছেন। বাকি চারজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন, তাদের প্রোডাকশন ওয়ারেন্টের মাধ্যমে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে সুলতান মাহমুদ জানান।