ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা এবং এর জেরে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার খবরটিকে বৃহস্পতিবার প্রধান প্রতিবেদন করেছে বেশিরভাগ সংবাদপত্র। পাশাপাশি দেশদুটির বড় ধরনের সংঘাত বা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার শঙ্কাও উঠে এসেছে খবরে। এ ছাড়া ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাত দিয়ে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা, বিশেষ করে বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব নিয়ে করা প্রতিবেদনও জায়গা পেয়েছে সংবাদপত্রগুলোর প্রথম পাতায়। এর বাইরে ভোজ্যতেল ও সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়লেও মূল্যস্ফীতি কমা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠা এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সংঘাতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষতির মুখে পড়ার খবরও গুরুত্ব পেয়েছে। এর সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির খবরসহ বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক খবরও বৃহস্পতিবার গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বৃহস্পতিবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে বা প্রথম পাতায় গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে।

বণিক বার্তা
ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে দেশ দুটির মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে ৩১ জন নিহত হয়েছে। কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ পর্যটক হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহের মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এ অভিযানে নয়টি স্থানে হামলা চালানো হয়। এ অভিযানে ভারত অবশ্য ৭০ পাকিস্তানিকে হত্যার দাবি করেছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় কাশ্মীরে ১৫ ভারতীয়র মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় ‘ভোজ্যতেল, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়লেও মূল্যস্ফীতি কমা নিয়ে নানা প্রশ্ন’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে পুরো এপ্রিলেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল সবজির দাম। বাজারে পটোল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, বরবটি, বেগুনসহ বেশির ভাগ সবজির কেজি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। কোনো কোনোটা কিনতে হচ্ছে এর চেয়েও বেশি দামে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের মূল্যও গত মাসে ১২-১৪ টাকা বেড়েছে। ডজনপ্রতি ডিমের দাম বেড়েছে অন্তত ২০-৩০ টাকা। বেড়েছে পেঁয়াজ ও রসুনের দামও। নিত্যপণ্যের মূল্যের এমন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যেও এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি কমার তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। যদিও কীভাবে মূল্যস্ফীতি কমেছে সে ব্যাখ্যা নেই খোদ সংস্থাটির কাছেও।

প্রথম আলো
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের কারণে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘পাকিস্তানে ভারতের হামলা উত্তেজনা বাড়াল’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ছয়টি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। গতকাল বুধবার দিনের প্রথম প্রহরে এ হামলা চালানো হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে পাকিস্তানও। কাশ্মীর সীমান্তে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে চলে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ। ভারতের হামলার জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীকে অনুমতি দিয়েছে পাকিস্তান। প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এতে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগই পর্যটক। এ ঘটনার পেছনে পাকিস্তানের হাত ছিল দাবি করে জবাব দেওয়ার ঘোষণা দেয় ভারত। পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তাব দেয়। এ নিয়ে অব্যাহত উত্তেজনার মধ্যে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার পর পাকিস্তানের ছয় শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। নয়টি ‘সন্ত্রাসী স্থাপনা’ লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয় বলে জানায় ভারতের সেনাবাহিনী।

সমকাল
পাকিস্তানে ভারতের হামলা এবং পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় প্রেক্ষাপটে সৃষ্টি উত্তেজনাকর পরিস্থিতির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘ভারতের হামলা, পাকিস্তানের জবাব’ শিরোনামে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেহেলগামে হামলা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের ছয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে এ হামলায় দুই শিশুসহ ৩১ জন নিহত ও ৫৭ জন আহত হয়েছে। জবাবে রাতেই স্বল্প পরিসরে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। তারা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গোলাবর্ষণ করে। এতে ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৪৩ জন আহত হয় বলে জানায় ভারতের সেনাবাহিনী।
ইসলামাবাদের দাবি, তারা হামলায় অংশ নেওয়া ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এ ছাড়া কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেডের সদরদপ্তর ও তল্লাশিচৌকি গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

কালের কণ্ঠ
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘ভারত-পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি হামলা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার মধ্যে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তানের ছয়টি স্থানে ৯টি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। ‘অপারেশন সিন্দূর’ নামের এই হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১; আহতের সংখ্যা ৫৭ বলে পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে। অন্যদিকে ভারত বলছে, ভারত শাসিত কাশ্মীরে পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ১৫ জন নিহত ও ৪৩ জন আহত হয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা হামলায় অংশ নেওয়া ভারতের পাঁচটি জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করেছে। কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেডের সদর দপ্তর ও তল্লাশিচৌকিও গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে তারা।

ইত্তেফাক
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘাতময় পরিস্থিতির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘ভারতের হামলা, প্রতিহত পাকিস্তানের’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। এই হামলার সমুচিত জবাব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ। দেশটির সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে ভারতে পালটা হামলা চালানোর অনুমোদন দিয়েছে।
মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে পাকিস্তানের মোট ৯টি জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে বলে ভারত সরকার দাবি করেছে। ২৫ মিনিট ধরে চালানো হামলায় ৭০ জন নিহত হওয়ার দাবি করেছে দিল্লি। এদিকে, ভারতের সেনাবাহিনী তাদের এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া এক পোস্টে দাবি করেছে, ভারতশাসিত কাশ্মীরের পুঞ্চ-রাজৌরি এলাকার ভিম্বার গলিতে কামান থেকে গোলা নিক্ষেপ করেছে পাকিস্তান। এর আগে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান এবং একটি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। দেশটির দাবি, দিল্লির হামলায় ৩১ জন নিহত হয়েছে। পাল্টা হামলা চালানো হবে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ। ভারতের সরকার এই হামলাকে শত্রু দেশগুলোর জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে অভিহিত করেছে। বিভিন্ন দেশ এই হামলা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

যুগান্তর
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘চরম প্রতিশোধ নেবে পাকিস্তান’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মীর হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের গর্জন-তর্জন-হুংকারই বলে দিচ্ছিল বড় কিছু ঘটতে চলেছে দুদেশের সীমান্তে। শুধু মেঘ গুড়গুড়েই ক্ষান্ত হবে না এবার। রণাকাশে বজ পাত অবশ্যম্ভাবী। শেষ পর্যন্ত ঘটলও তাই! মঙ্গলবার রাত ১টা ৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) পাকিস্তানের আকাশে ঝাঁকে ঝাঁকে ঢুকে পড়ে ভারতের যুদ্ধবিমান। তারপরই পাকিস্তানের ৬ শহরের ৯টি লক্ষ্যবস্তুর ২১টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। মাত্র ২৫ মিনিটেই ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নিজ সীমানায় ফিরে আসে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো। ঘুমন্ত জনপদে মধ্যরাতের এ আকস্মিক হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা পাকিস্তান। আগ্রাসনের জবাবে এবার আর কূটনৈতিক ভাষা নয়, সরাসরি পালটা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটি।
যুগান্তরের প্রথম পাতায় ‘পক্ষ না নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে বাংলাদেশকে’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই পালটাপালটি পদক্ষেপ নিতে শুরু করে ভারত ও পাকিস্তান। সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, বাণিজ্য-জাহাজ চলাচল বন্ধ-শুধু এসবেই থামেনি। শেষ পর্যন্ত সরাসরি হামলা-পালটা হামলায় জড়িয়েছে দুই দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর এই যুদ্ধ বড় হলে বাংলাদেশে অর্থনীতিসহ সার্বিকভাবে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। এক্ষেত্রে কোনো পক্ষ অবলম্বন না করে তারা পরিস্থিতি গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মতে, দুই দেশ (ভারত-পাকিস্তান) যেন বড় আকারে যুদ্ধে না জড়ায় সেই ডিপ্লোমেসির দিকে গুরুত্ব দিতে হবে বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘাতময় পরিস্থিতির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু!’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত ভারত পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এ হামলা চালানো হয়। এ ২৫ মিনিটে মোট ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় এবং এগুলো জঙ্গিঘাঁটি, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বেশ কিছু স্থানে আঘাত হানে। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, হামলায় ‘জঙ্গি ক্যাম্প’ হিসেবে উল্লেখ করা ৯টি স্থাপনা ধ্বংস হয় এবং এ সময় জঙ্গি সংগঠন ‘জইশ’প্রধান মাসুদ আজহার পরিবারের ১০ জনসহ মোট ৭০ জন নিহত হয় বলে দাবি ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির। তবে পাকিস্তানের আইএসপিআর জানিয়েছে নিহতের সংখ্যা ৩১, আহত হয়েছেন ৫৭ জন। অন্যদিকে পাকিস্তানের পাল্টা গোলাবর্ষণে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের ১৫ বাসিন্দা নিহত হয়েছে। পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারতীয় হামলার সময় ৩টি রাফালসহ মোট ৫টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। এই সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর ব্রিগেড সদর দপ্তরও ধ্বংস করা হয়। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, গতকাল পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ শুরু করার সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ভারতীয় বাহিনী যে কোনো মুহূর্তে দ্বিতীয় দফা হামলা চালাতে যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় ‘যুদ্ধের ফাঁদে অর্থনীতি’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দুই বড় শক্তি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মধ্য দিয়ে যে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে যুদ্ধরত দেশ দুটি বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্নভাবে এত বেশি সংশ্লিষ্ট যে বাংলাদেশেও নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি করেছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে নানামাত্রিক প্রভাব পড়তে পারে। আমদানি-রপ্তানি খাত ছাড়াও বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে জ্বালানি, খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাক-ভারত যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে সংশ্লিষ্টরা যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, সেগুলো হচ্ছে-১. যুদ্ধরত দুই দেশ থেকে খাদ্য ও নিত্যপণ্য সরবরাহ কমে যেতে পারে। ২. বেড়ে যেতে পারে মূল্যস্ফীতি। ৩. শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বিঘ্ন ঘটতে পারে। ৪. জ্বালানি ও কাঁচামালের দাম বেড়ে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। ৪. আমদানি ও রপ্তানি উভয় খাতেই তৈরি হবে শঙ্কা। ৫. নেতিবাচক প্রভাব পড়বে শেয়ারবাজার, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে।

নয়া দিগন্ত
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্ত। ‘ভারত-পাকিস্তান বিমানযুদ্ধ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার আজাদ জম্মু ও কাশ্মির (এজেকে) শহরে নয়াদিল্লি যুদ্ধ বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী পাল্টা হামলায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) পাঁচটি জেট, একটি যুদ্ধ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে এবং বেশ কয়েকটি চেকপোস্টসহ ব্রিগেড সদর দফতর ধ্বংস করেছে।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন যে ভারতীয় বিমানের সাথে সংঘর্ষের পর পাকিস্তান বিমানবাহিনীর সব জেট নিরাপদে রয়েছে। সেনাবাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র আরও বলেছেন যে ধ্বংস হওয়া আইএএফ যুদ্ধবিমানের মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফায়েল, একটি সু৩০এমকেআই এবং একটি মিগ-২৯ ফুলক্রাম রয়েছে।

আজকের পত্রিকা
পেহেলেগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। দুই পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের এই বিপজ্জনক সংঘাতের মাত্রা আরও বাড়বে কি না কিংবা তার তীব্রতা কোন পর্যন্ত উঠতে পারে, তা নিয়েই এখন চলছে গুঞ্জন।
ভারতের দাবি, মঙ্গলবার গভীর রাতে তারা পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় সন্ত্রাসী স্থাপনা লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের দাবি, ভারতীয় বাহিনী মসজিদসহ বেসামরিক স্থাপনা এবং সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচার হামলা চালিয়েছে। ‘আত্মরক্ষার’ অংশ হিসেবে ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে তারা। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয়নি।

দেশ রূপান্তর
ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলায় সৃষ্ট সংঘাতময় পরিস্থিতির খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘সংঘাতে ভারত-পাকিস্তান’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে দুই সপ্তাহ ধরে যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, অবশেষে তাই সত্যি হলো। গতকাল বুধবার প্রথম প্রহরে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে গেল পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান। ভারতের দাবি, তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে; যেখানে জঙ্গি আস্তানা ছিল। ভারতের হামলার পর থেকে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ দুটির সেনারা সীমান্তে ভারী কামানের গুলিবিনিময় করেছে। পাকিস্তান শিগগিরই পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানিয়েছে।