সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা ও নৌপ্রধান বরখাস্ত, ওলটপালট পেন্টাগন

জেনারেল চার্লস সিকিউ ব্রাউন
জেনারেল চার্লস সিকিউ ব্রাউন

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর বাইডেন প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিজের পছন্দের লোক নিয়োগ দিয়েছেন। দায়িত্ব নেওয়ার মাসখানেক পর এবার দেশের সামরিক নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার কাজে হাত দিয়েছেন তিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার আকস্মিক এক ঘোষণায় যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সামরিক পদ হিসেবে বিবেচিত জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল চার্লস সিকিউ ব্রাউনকে বরখাস্ত করার ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

একইদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নৌবাহিনীর প্রধানসহ আরও দুই শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকেও বরখাস্তের কথা জানান। তারা হলেন– চিফ অব নেভাল অপারেশন্স এডমিরাল লিসা ফ্রানচেত্তি ও বিমানবাহিনীর ভাইস চিফ অব স্টাফ জেনারেল জিম স্লাইফ।

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী– উভয়কেই জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। জেনারেল চার্লস সিকিউ ব্রাউন দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি হিসেবে এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

বরখাস্ত হওয়া জেনারেল ব্রাউনসহ শীর্ষ তিন সামরিক কর্মকর্তাই সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে নিজ নিজ পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। এদের মধ্যে লিসা ফ্রানচেত্তি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে নৌবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।

জেনারেল ব্রাউনকে বিদায় দেওয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে শুক্রবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, “আমাদের বর্তমান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ দেশকে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেবা দেওয়ার জন্য আমি আমি জেনারেল চার্লস ‘সিকিউ’ ব্রাউনকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”

লিসা ফ্রানচেত্তি

বরখাস্ত হওয়ার আগে শুক্রবারও জেনারেল ব্রাউন তার দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন করেন। এইদিন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান হিসেবে জেনারেল ব্রাউনের মেয়াদ ২০২৭ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ট্রাম্প তাকে এখনই এই পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে নিজের পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে চান বলে সম্প্রতি কানাঘুষা শুরু হয়। এরই মধ্যে শুক্রবার জেনারেল ব্রাউনকে বরখাস্তের খবর আসে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগেই গত নভেম্বরে পিট হেগসেথ এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, সামরিক বাহিনীর বর্তমান যে অবস্থা, সেখানে অনেক ধরনের সমস্যা রয়েছে, যার মধ্যে বৈচিত্র্য আনার উদ্যোগও রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের উচিত হবে একে ‘সঠিক পথে’ আনা।

এক্ষেত্রে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তার ব্যাখ্যায় হেগসেথ সে সময় বলেছিলেন, “সবার আগে আপনাকে জয়েন্ট চিফসের চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করতে হবে।”

এদিকে, চলতি সপ্তাহেই হেগসেথ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের খরচ কমানোর পথে হাঁটছে সরকার এবং আগামী সপ্তাহে ৫ হাজার ৪০০ জন শিক্ষানবীশ কর্মীকে ছাঁটাই করবে।

শুক্রবার ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া তার পোস্টে আরও জানান, তিনি হেগসেথকে ‘উচ্চ পর্যায়ের আরও পাঁচটি পদের জন্য নতুন মুখ খুঁজতে’ নির্দেশ দিয়েছেন, যেসব কর্মকর্তার নাম শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।

আরও পড়ুন