বার্নিকাটকে সরে যেতে বলায় আওয়ামী লীগ খুশি?

দ্বিতীয়বারের জন্য সোমবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে সরে যেতে বললেন তিনজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে।

যাদের মধ্যে রয়েছেন মার্শা বার্নিকাটও। বিদায়ী ডেমোক্র্যাট সরকারের পছন্দের কূটনীতিক হিসেবেই তিনি পরিচিত। বাকি দুইজন হলেন, ডেরেক হোগান ও আলেইনা তেপলিৎজ।

মার্শা বার্নিকাটকে সরে যেতে হবে এমন জল্পনা ছিল আগেই, তবে যে কারণে তার নাম ঘুরে ফিরে আসছে তা হলো বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে তার কূটনৈতিক তৎপরতা।

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিভিন্ন সময় মার্কিন শিবিরের নানা তৎপরতার কথা তুলে ধরতে গিয়ে বার্নিকাটের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন।

২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তার সময়েই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের ‘শীতল সম্পর্কের’ শুরু।

আওয়ামী লীগের ভেতরে একথা বেশ উচ্চারিত হয়েছে যে, মার্শাকে দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চেয়েছিলেন হিলারি।

সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও তার স্ত্রী হিলারির সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের।

আওয়ামী লীগ তখন থেকেই অভিযোগ করে আসছিল ইউনূসের ইন্ধনে মার্কিন প্রশাসন বিশেষ করে হিলারি ক্লিনটন হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সংঘাতের পথ বেছে নিয়েছে।

প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও মার্শাকে সরে যেতে বলায় খুশি আওয়ামী লীগ।

তারা বহু বছর ধরে বলে আসছে, গোটা মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নয়, বরং কয়েকজন কূটনীতিক হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। তাদের পিছনে ছিলেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব হিলারি। বাইডেন প্রশাসনেও তিনি প্রভাব খাটিয়েছেন হাসিনার উপর ব্যক্তিগত রাগ থেকে- এমনটিও শোনা যায়।

আওয়ামী লীগ নেত্রীর প্রতি রাগের কারণ, তাদের বিভিন্ন অনুরোধ হাসিনার সরকার খারিজ করে দিয়েছেন।

এর মধ্যে অন্যতম হল, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামির নেতাদের ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ স্থগিত না করা।

সে সময় শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন তার সরকার আদালতের রায়ে হস্তক্ষেপ করবে না।

মার্শা বার্নিকাট মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পাওয়া স্থায়ী কূটনীতির। তিনি বাংলাদেশ ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশে রাষ্ট্রদূতের ভূমিকা পালন করে দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রকে কর্মরত আছেন।

২০১৭-তে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মার্শাকে বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাকে ঢাকা থেকে বদলি করার পিছনে হাসিনা সরকারের অসন্তোষ অন্যতম কারণ ছিল বলে মনে করা হয়।

জো বাইডেনের নেতৃত্বে ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় ফিরলে বাংলাদেশ নিয়ে ফের সক্রিয় হন মার্শা। হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের পিছনে এই কূটনীতিকের ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হয়।

তবে এই ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসন এবং মার্শা-সহ কূটনীতিকরা কোনও মন্তব্য করেননি বলে জানিয়েছে ভারতীয় বাংলা পত্রিকা দ্য ওয়াল।

আরও পড়ুন