মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক ধার্যের কথা জানিয়েছেন, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার রাত ১১টা ৩৬ মিনিটে চিঠিটির অনুলিপি ট্রুথ সোশালেও নিজের ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন।
চিঠিতে দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য ঘাটতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পারস্পরিক শুল্ক চুক্তি (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ অ্যাগ্রিমেন্ট) নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছাতে গত ৩ ও ৪ জুলাই বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও সেসব বৈঠকে অংশ নেন।

তিন মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭% রেসিপ্রোকাল (পারস্পরিক) ট্যারিফ ঘোষণা করেছিল। সেই প্রেক্ষাপটে ৩৫% নতুন হারের ঘোষণা কার্যত উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নয়। মাত্র ২% হ্রাস দেখালেও, এটি বাস্তবে বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য স্বস্তির খবর নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ও শর্তাবলী
চিঠিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে এখন থেকে শুধু ‘ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য’ করতে আগ্রহী। বাংলাদেশ যদি নিজেদের শুল্ক ও অ-শুল্ক বাধাগুলো না তুলে নেয়, তাহলে এই ট্যারিফ আরও বাড়তে পারে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো যদি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন শুরু করে সেক্ষেত্রে তাদের ওপর এই ট্যারিফ প্রযোজ্য হবে না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ দ্রুত এবং পেশাদারভাবে প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিতে প্রস্তুত বলেও জানানো হয়েছে।
ট্যারিফ হ্রাসের বাস্তবতা
বিশ্লেষকদের মতে, পূর্বের ৩৭% ট্যারিফ থেকে নতুন ৩৫% এ নামানো একটি কৌশলগত পদক্ষেপ মাত্র, যার উদ্দেশ্য হতে পারে কূটনৈতিকভাবে নমনীয়তার বার্তা দেওয়া।
তবে অর্থনৈতিক বাস্তবতায় এটি কোনো বাস্তব স্বস্তি বয়ে আনে না। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে পারে।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য পদক্ষেপ
বাংলাদেশ সরকার এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কূটনৈতিক যোগাযোগ জোরদার করা হবে।
এ সংক্রান্ত আরও খবর: