মঙ্গলবারের পত্রিকা : ‘অপরাধের ব্যাপকতায় আতঙ্ক’

newspaper

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে সরকারের বিশেষ আইন করার খবর দিয়ে মঙ্গলবার প্রধান প্রতিবেদন করেছে বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র। এর পাশাপাশি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, দেশে অবস্থানরত অবৈধ বিদেশিদের সংখ্যা, বিএসইসিতে অস্থিরতার কারণ, সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগ ও সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টার অগ্রগতি সংক্রান্ত খবরও গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক মঙ্গলবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

কালের কণ্ঠ

সারা দেশে সব ধরনের অপরাধ বেড়েছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘অপরাধের ব্যাপকতায় আতঙ্ক’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা দেশে সব ধরনের অপরাধ বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে পিটিয়ে হত্যা, নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, চুরি, ডাকাতি, দস্যুতা, ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে হামলা, দখল, চোরাচালান, মাদক ব্যবসার মতো অন্তত ১১ ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা বেড়েছে। এসব নিয়ন্ত্রণে জোরালো পদক্ষেপ না থাকায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত।

অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, সমাজে অপরাধমূলক নানা ঘটনায় স্পষ্ট যে মানুষ কতটা অসহিষ্ণু এবং ভুক্তভোগীরা কত অসহায়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দায়িত্বে ঘাটতির বিষয়টিও দৃশ্যমান। দায়িত্বশীলদের সঠিক জবাবদিহির আওতায় না আনা, আইন না মেনে চলার চর্চা এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকা এসব ঘটনার পেছনে অনেকাংশে দায়ী বলে তাঁরা মনে করছেন।

অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এরই মধ্যে সারা দেশে পুলিশকে দমন তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কালের কণ্ঠকে আইজিপি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।

সমকাল

বাংলাদেশে অবৈধভাবে ৬ হাজারের বেশি বিদেশি নাগরিক  অবস্থান করছেন– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘বাংলাদেশে ৩৩৯৯ অবৈধ ভারতীয়র বসবাস’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসাসহ অবৈধভাবে দেশে অবস্থান করছেন ৬ হাজার ৯৭ জন বিদেশি নাগরিক। তাদের মধ্যে শীর্ষ পাঁচ দেশ হলো– ভারত, চীন, নেপাল, পাকিস্তান ও ফিলিপাইন। এখন অবৈধভাবে বসবাসকারীর মধ্যে ভারতীয়র সংখ্যা ৩ হাজার ৩৯৯, চীনের ১ হাজার ৯৯, নেপালের ৩৭৬, পাকিস্তানের ১৪০ ও ফিলিপাইনের ১৩১ জন।

তিন মাসে আগেও দেশে অবৈধ বিদেশি নাগরিক ছিল ৪৯ হাজার ২৬৫ জন। সম্প্রতি নিয়মবহির্ভূতভাবে যেসব নাগরিক দেশে অবস্থান করছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযানসহ নানামুখী তৎপরতা চালানো হয়। এতে গত ১৮ নভেম্বর থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত অবৈধ বিদেশি নাগরিক কমেছে ৪৩ হাজার ১৬৮ জন। এ ছাড়া গত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৪০ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একটি সূত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বর্তমানে দেশে বৈধভাবে বিদেশি নাগরিক বসবাস করছেন ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ১৬ হাজার ৮৬৬ জন, ভারতীয় ১৪ হাজার ২৭৭, যুক্তরাজ্যের ১০ হাজার ৫৮২, চীনের ৮ হাজার ৬৪ ও কানাডার ৬ হাজার ৯৩ জন। এর বাইরে আরও অনেক দেশের নাগরিকরা বৈধভাবে দেশে বসবাস করছেন।

প্রথম আলো

বিদেশে পাচার করা টাকা ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন আইন করতে যাচ্ছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘টাকা ফেরাতে আইন আসছে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশে পাচার করা টাকা ফেরাতে নতুন আইন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। খুব শিগগির আইনটি করা হবে। পাশাপাশি টাকা ফেরানোর ক্ষেত্রে সহায়তা নিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুনাম থাকা ৩০টির মতো আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করবে সরকার।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ‘বিদেশে পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধার: গৃহীত পদক্ষেপ, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে এ বছরের মধ্যে অন্তত কয়েক শ কোটি ডলার ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দেওয়া হয়।

বৈঠকে জানানো হয়, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবার ও তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে ছয়টি দেশ ও অঞ্চলে সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। দেশ ও অঞ্চলগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং ও কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ। মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকে রাশিয়ান ‘স্ল্যাশ ফান্ড’–এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। কেমব্রিজ ডিকশনারি বলছে, যে অর্থ রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক অসাধু কাজের জন্য রাখা হয়।

ইত্তেফাক

দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য বিশেষ একটি আইন করতে যাচ্ছে সরকার– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাক। ‘পাচার হওয়া ২৩ হাজার কোটি ডলার ফেরাতে বিশেষ আইন হচ্ছে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে ২৩৪ বিলিয়ন (২৩ হাজার ৪০০) ডলার বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হয় ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে। দেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে এই পরিমাণ অর্থ পাচারের তথ্য উঠে এসেছিল। পাচার হওয়া এই অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য বিশেষ একটি আইন করতে যাচ্ছে সরকার। অধ্যাদেশ আকারে খুব শিগগিরই এই আইনটি হবে। দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফেরতের অগ্রগতি বিষয়ে গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ

ইউনূসের সভাপতিত্বে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত ট্রাস্কফোর্সের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

যুগান্তর

দেশে অপরাধ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ার পেছনে ছাত্রলীগ অনেকাংশে দায়ী– গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে করা এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগই মাস্টারমাইন্ড’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির মতো অপরাধ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ার পেছনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ অনেকাংশে দায়ী। নিষিদ্ধ ঘোষিত এ সংগঠনটির মাস্টারমাইন্ডরা পরিকল্পিতভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পেশাদার অপরাধীদের নানা পন্থায় মাঠে নামাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাও যুক্ত হচ্ছে। এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন অ্যাপস গ্রুপের মাধ্যমে। গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

এদিকে এ চক্রের পুরো নেটওয়ার্ককে চিহ্নিত করতে জড়িতদের তালিকা প্রণয়নসহ পাঁচ ধরনের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বণিক বার্তা

পুঁজিবাজারের অংশীজন হিসেবে পরিচিত দুটি প্রতিষ্ঠানের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে কমিটির প্রধান ও সদস্য করায় শুরুতেই স্বার্থগত দ্বন্দ্বের বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের অবকাশ তৈরি হয়– এমন খবরকে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা।  ‘বাজার অংশীজনদের দিয়ে তদন্ত কমিটি করা বিএসইসির ভুল ছিল কি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের পুঁজিবাজারে বিগত সরকারের আমলে সংঘটিত নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও কারসাজির ঘটনা খতিয়ে দেখতে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিটির প্রধান করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের টেরা রিসোর্সেস ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও কনসালট্যান্ট এবং ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির চেয়ারম্যান ড. জিয়া উদ্দিন আহমেদকে। একটি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে ড. জিয়া উদ্দিন আহমেদ কমিটির সদস্য হওয়ার আগেই পুঁজিবাজারের অন্যতম অংশীজন হিসেবে বিবেচিত। একই কথা প্রযোজ্য আরেক সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি এইমস বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াওয়ার সাঈদের ক্ষেত্রেও। তাকেও এ কমিটির একজন সদস্য করা হয়েছে।

পুঁজিবাজারের অংশীজন হিসেবে পরিচিত দুটি প্রতিষ্ঠানের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে কমিটির প্রধান ও সদস্য করায় শুরুতেই স্বার্থগত দ্বন্দ্বের (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট) বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের অবকাশ তৈরি হয়। সম্প্রতি বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকেও এ তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদনগুলোকে ‘বিতর্কিত’ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে, যার জেরে বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করা, হট্টগোল, সেনা পাহারায় সংস্থাটির শীর্ষ কর্তাদের অফিস ত্যাগ ও অফিসে প্রবেশ এবং কর্মবিরতির মতো নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হয়।

নয়া দিগন্ত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং ও কেম্যান দ্বীপপুঞ্জে বিপুলসম্পদের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট ও যৌথ তদন্ত দল– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়াদিগন্ত। ‘হাসিনা-রেহানা পরিবারের ৬৩৫ কোটি টাকা জব্দ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশে অর্থ পাচারেও পিছিয়ে ছিলেন না পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং ও কেম্যান দ্বীপপুঞ্জে বিপুলসম্পদের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট ও যৌথ তদন্ত দল।

এ ছাড়া মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকে রাশিয়ান স্ল্যাশ ফান্ড বা অবৈধ সম্পদের সন্ধান মিলেছে। এর মধ্যে যৌথ তদন্ত দল হাসিনা পরিবারের ১২৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ৬৩৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা জব্দ করেছে। দেশে থাকা সম্পদের মধ্যে রাজউকের ৬০ কাঠা জমি অবরুদ্ধ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ২৪০ কোটি টাকা, যদিও দলিল মূল্যে দেখানো হয়েছে মাত্র এক কোটি ৮০ লাখ টাকা। পাশাপাশি ৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের ১০ শতাংশ জমিসহ ৮টি ফ্ল্যাটও জব্দ করা হয়েছে। হাসিনা পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মোট ছয়টি মামলা ইতোমধ্যে দায়ের করা হয়েছে। এই ছয়টি কেসের তদন্ত সম্পাদন ও চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আর এ কারণে হাসিনা পরিবারের সাত সদস্যের আন্তর্জাতিক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

আজকের পত্রিকা

সংবিধান সংশোধনের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতার মধ্যেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের অন্য একটি উপায় প্রস্তাব করার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘অধ্যাদেশে পথের দিশা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচিত সংসদই সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনবে, এমনটাই বলছে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। অন্যদিকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চাওয়া, গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংবিধান পুনর্লিখন। জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে। সংবিধান সংশোধনের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতার মধ্যেই অন্য একটি উপায় প্রস্তাব করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন ‘অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন সম্ভব’।

গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মত দেন সম্প্রতি সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করা অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অতীতে অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনী হয়েছে, যা পরবর্তী সময়ে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়েছে। ফলে এটা এটা হয়েছে, এটা সম্ভব। কিন্তু সেটাই একমাত্র বিবেচনা আমাদের ছিল না। কারণ আমরা কোনো কিছুই অ্যাজেন্ডা সেট করছি না।’

বাংলাদেশ প্রতিদিন

ধর্ষণে জড়িত জড়িত অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষুব্ধ মানুষের নানা কর্মসূচি পালনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘সংস্কারে ঐক্যের কঠিন চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নানা পথ ও মতকে এক কাতারে নিয়ে এগোতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর সবকিছুই হবে আলোচনার টেবিলে। আর এই চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ আলোচনা করে ঐকমত্যে পৌঁছাতে চায় কমিশন।

পাশাপাশি স্বল্প সময়ের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছে ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি করতে চায় তারা। এ ছাড়া শিগগিরই নির্বাচন নিয়ে আরও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে সরকার গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা ও গ্রহণ করার লক্ষে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।  

দেশ রূপান্তর

নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিবন্ধনের জন্য ঈদের পর নির্বাচন কমিশনে আবেদন করবে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘শর্ত শিথিলের সুযোগে নিবন্ধনের পথে এনসিপি’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারুণ্য শক্তির রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ ঘটে ২৮ ফেব্রুয়ারি। দুই সপ্তাহ না পেরোতেই দলটি ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রস্তুতিতে সর্বোচ্চ চেষ্টায় রয়েছে। এ লক্ষ্যে দলের নিবন্ধনের জন্য ঈদের পর নির্বাচন কমিশনে আবেদন করবে এনসিপি। ভোটে দলীয় প্রতীকও চূড়ান্ত করা হবে দলীয় ফোরামে ফয়সালা করে। এদিকে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনও দলীয় নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত শিথিলের প্রস্তাব রেখেছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি ইতিমধ্যেই দুই দফায় ২১৬ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছে। তবে এ কমিটি আরও বর্ধিত করা হবে। তাছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির ৪৩০-এর অধিক জেলা-উপজেলা কমিটি বিদ্যমান রয়েছে। কমিটিগুলো এনসিপির কমিটি হিসেবেই কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বা জুলাই স্পিরিটকে ধারণ করে কেউ যোগ দিতে চাইলে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। গত ৪ মার্চ সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং রায়েরবাজারে চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি পালন শুরু করে এনসিপি। এরপর নিয়মিত দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

আরও পড়ুন