ইউক্রেনের কৌশলগত খনিজ সম্পদ উত্তোলনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে দেশ দুটির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। ইউক্রেনের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া স্ভিরিডেনকো এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে ইউলিয়া লিখেছেন, “আমাদের আমেরিকান অংশীদারদের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ঘোষণা করতে পেরে আমরা আনন্দিত, যা একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি এবং ইউক্রেনের পুনর্গঠনের জন্য বিনিয়োগ তহবিল প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করবে।”
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের কৌশলগত খনিজ উত্তোলনের বিষয়ে এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে মতবিরোধের কারণে চুক্তি স্বাক্ষর আটকে যায়।
এই চুক্তির আওতায় ইউক্রেনীয় খনিজ সম্পদ ও বিরল খনিজ বিক্রি থেকে হওয়ার মুনাফার ওপর যুক্তরাষ্ট্রকে রয়্যালটি প্রদান করা হবে। ট্রাম্প চান, এই চুক্তির মাধ্যমে তার পূর্বসূরি জো বাইডেনের ইউক্রেনকে দেওয়া বিপুল পরিমাণ সহায়তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য হোক।
ইউক্রেনীয় অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হওয়া সমঝোতা স্মারকের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেননি। তবে বলেছেন যে, একটি চূড়ান্ত চুক্তি সুরক্ষিত করার জন্য কাজ অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা আশা করি এই তহবিল আমাদের দেশের পুনর্গঠন, অবকাঠামোর আধুনিকীকরণ, ব্যবসাকে সমর্থন এবং নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করার জন্য বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।”
ইউলিয়া আরও বলেন, “করার মতো অনেক কাজ আছে, তবে বর্তমান গতি এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আশা জাগায় যে এই নথি উভয় দেশের জন্যই খুব উপকারী হবে।”
ট্রাম্প প্রশাসন একটি নতুন আরও বিস্তৃত চুক্তির প্রস্তাব দেওয়ার পর ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদল গত সপ্তাহের শেষে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন সফর করে।
এর আগে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আমাদের মধ্যে একটি খনিজ চুক্তি রয়েছে, যা আমার মনে হয় বৃহস্পতিবার স্বাক্ষরিত হবে।” জেলেনস্কিও এর আগে বলেছিলেন, দুটি দেশ অনলাইনে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে পারে।
কিয়েভে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জেলেনস্কি বলেছিলেন, “এটি একটি সমঝোতা স্মারক এবং আমাদের ইতিবাচক, গঠনমূলক উদ্দেশ্য রয়েছে।” তিনি আরও জানান, পূর্ণাঙ্গ চুক্তি সইয়ের আগে এই সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তাবটি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনে আমেরিকান ব্যবসায়িক স্বার্থ বৃদ্ধি পেলে তা যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে রাশিয়াকে ভবিষ্যতে আগ্রাসন থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, কিয়েভ রাশিয়ার সঙ্গে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে যেকোনো চুক্তির জন্য সুনির্দিষ্ট সামরিক ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাইছে।