ভেনেজুয়েলার সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের একটি দলের নির্বাসন স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। একটি নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী টেক্সাসে আটক থাকা এই ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানো ঠেকাতে মামলা করেছিল। তাদের অভিযোগ, ওই ব্যক্তিরা আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা লড়ার সুযোগ পাননি।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযুক্ত ভেনেজুয়েলার গ্যাং সদস্যদের এল সালভাদরের একটি কুখ্যাত কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে তিনি ১৭৯৮ সালের এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট প্রয়োগ করেছিলেন, যা দেশটির প্রেসিডেন্টকে ‘শত্রু’ দেশের নাগরিকদের বা বাসিন্দাদের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ছাড়াই আটক ও নির্বাসনের ক্ষমতা দেয়। এর আগে এই আইনটি মাত্র তিনবার ব্যবহার করা হয়েছিল, তা-ও যুদ্ধের সময়।
এদিকে, হোয়াইট হাউস এই আইনের মাধ্যমে ব্যাপক নির্বাসনের বিরুদ্ধে করা চ্যালেঞ্জগুলোকে “অসার মামলাবাজি” বলে অভিহিত করেছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, “আমরা প্রশাসনের পদক্ষেপের বৈধতার বিষয়ে এবং শেষ পর্যন্ত উগ্র কর্মীদের অসার মামলাবাজির বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। এই কর্মীরা আমেরিকান জনগণের চেয়ে সন্ত্রাসী এলিয়েনদের অধিকার নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন।”
এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট শেষবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রয়োগ করা হয়েছিল, যখন জাপানি বংশোদ্ভূত লোকদের বিনা বিচারে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল এবং হাজার হাজার মানুষকে অন্তরীণ শিবিরে পাঠানো হয়েছিল।
এর আগে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো ভেনেজুয়েলার ২৬১ জন অভিবাসীর মধ্যে ১৩৭ জনকে এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্টের অধীনে ফেরত পাঠানো হয় বলে সিবিএস নিউজকে জানান একজন ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
তার আগে গত ১৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত এই নির্বাসন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিল। তবে ৮ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে বলা হয়, ট্রাম্প সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের নির্বাসনের জন্য এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট ব্যবহার করতে পারেন, তবে নির্বাসিতদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ দিতে হবে।
যে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সুপ্রিম কোর্ট ভেনেজুয়েলার আটক অভিবাসীদের নির্বাসন স্থগিত করেছে, সেই মামলায় বলা হয়েছে, উত্তর টেক্সাসে আটক ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের তাদের আসন্ন নির্বাসন সম্পর্কে ইংরেজিতে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, যদিও একজন বন্দি কেবল স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেন। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের চ্যালেঞ্জে আরও বলা হয়েছে যে পুরুষদের তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার সম্পর্কে জানানো হয়নি।
মামলায় আরও বলা হয়, “আদালতের হস্তক্ষেপ ছাড়া, প্রস্তাবিত শ্রেণির শত শত সদস্যকে এল সালভাদরে সম্ভাব্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে পাঠানো হতে পারে।”
এর আগে ‘ভুল’ করে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো কিলমার আব্রেগো গার্সিয়া নামে এক ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনার আদেশ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিনি কখনও যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসবেন না।