যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেই একে একে নির্বাহী আদেশ দিতে শুরু করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসব আদেশের একটির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া বিদেশি সব সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ দেশটির পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
বিদেশি সহায়তা বন্ধের ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় আসে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তাকারী সংস্থা ইউএসএআইডি। সংস্থাটির ইতিবাচক ইমেজের অন্তরালে থাকা বিভিন্ন নেতিবাচক দিক ক্রমশ সামনে আনছেন ট্রাম্পের সহকর্মীরা। ফলে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বেকায়দায় ডেমোক্র্যাটদের প্রতিষ্ঠিত সংস্থা ইউএসএআইডি। শুধু তাই নয়, প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে দেশটির সাবেক সরকারগুলোও।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হাত ধরে ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইউএসএআইডি। মূলত তখন সোভিয়েত ইউনিয়নকে টেক্কা দিতে মিত্রদের সমন্বয়ের উদ্দেশ্য নিয়েই গঠিত হয়েছিল সংস্থাটি। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে সংস্থাটির বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অশান্তি সৃষ্টি ও শাসন বা শাসক পাল্টানোর মেকানিজম করার অভিযোগ আছে।
ট্রাম্পের গত ২১ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশে ৯০ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তা প্রোগ্রামের অর্থায়ন স্থগিত করা হয়। এই সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে, এসব প্রোগ্রাম ট্রাম্পের `আমেরিকা ফার্স্ট‘ নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা।
এরপর ২৫ জানুয়ারি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব আন্তর্জাতিক সহায়তায় অর্থায়ন স্থগিতের আদেশ দেয়। শুধুমাত্র জরুরি খাদ্য সহায়তা এবং ইসরায়েল ও মিশরে সামরিক সহায়তা এই স্থগিতের বাইরে রাখা হয়।
২০২৩ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র ৭২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে। এটি দেশটির বাজেটের প্রায় ১ শতাংশ। বিশ্বের ২০৪টি দেশ ও অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামে এই অর্থ যায়। এর মধ্যে রয়েছে দুর্যোগ সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা ও তথাকথিত গণতন্ত্রপন্থী উদ্যোগ।

বিদেশি সহায়তা বন্ধে ট্রাম্পের আদেশের ফলে ইউএসএআইডি বড় ধাক্কা খেয়েছে। সংস্থাটির জন্য বরাদ্দ থাকা ৪২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার এখন আটকে দেওয়া হয়েছে। ইউএসএআইডির অনেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ছাটাই, বরখাস্ত ও শাস্তিমূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ওয়াশিংটনে অবস্থানরত কয়েকশ’ ঠিকাদার ও বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও কর্মীদের ছাঁটাই করা হয়। ইউএসএআইডির ওয়েবসাইট অফলাইন হয়ে যায় এবং সংস্থার কম্পিউটার সার্ভারগুলো নিয়ে যাওয়া হয়।
ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএআইডিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাখতে চাইছে। এর লক্ষ্য করদাতাদের অর্থ বাঁচানো নয়, বরং প্রেসিডেন্ট যেভাবে মনে করেন সেভাবে অর্থ খরচ করা।
যদিও এটি স্পষ্ট নয়, প্রেসিডেন্টের কাছে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে ইউএসএআইডিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একীভূত করার আইনগত ক্ষমতা রয়েছে কি না। ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন, কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই তিনি সংস্থাটি বন্ধ করতে পারবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের জানান, তাকে ইউএসএআইডির কার্যকরী পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।
ট্রাম্পের সহযোগী ও টেক জায়ান্ট ইলন মাস্কও ইউএসএআইডিকে ‘বন্ধ‘ করার বিষয়ে একমত।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডিতে কর্মরত রয়েছেন ১০ হাজার কর্মী। তাদের দুই-তৃতীয়াংশেরই কর্মস্থল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
এই কর্মীদের মধ্যে ৬১১ জনকে রেখে বাকি সবাইকে ছুটিতে পাঠাতে চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তার আগেই তাদের ছুটি এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প-মনোনীত বিচারক নিকোলস।
ক্ষমতা পরিবর্তনের হাতিয়ার
পর্যবেক্ষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বিদেশি সহায়তার একটি অন্ধকার দিক রয়েছে, বিশেষত ইউএসএআইডি সম্পর্কিত।
বিভিন্ন দেশের অধিকারকর্মীরা বলে আসছেন, বিদেশের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অসৎ এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হয়েছে ইউএসএআইডি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্ষমতা পরিবর্তন‘ পরিকল্পনাগুলোর আড়াল হিসেবে কাজ করেছে, কিউবা থেকে সিরিয়া ও ভেনেজুয়েলা পর্যন্ত।

ব্রিটিশ সাংবাদিক ও লেখক আফশিন রত্তানসি উল্লেখ করেন, ইউএসএআইডি ‘শাসনপরিবর্তন ও উপদ্রবের হাতিয়ার‘ হিসেবে কাজ করে গ্লোবাল সাউথের সমাজে প্রবেশ করে। সেখানকার নেতাদের বিরুদ্ধে অস্থিরতা উসকে দেয় যারা ওয়াশিংটনের অর্থনৈতিক নীতি মেনে চলে না বা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে একমত নয়।
রত্তানসি সম্প্রতি সোশাল মিডিয়া এক্সে লেখেন, “গ্লোবাল সাউথের মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ এই সংস্থার অবসান উদযাপন করবে, যা ভুয়া নিলিবারেল বিপ্লব তৈরির মাধ্যমে প্রকৃত বিপ্লবী আন্দোলন ও সরকারগুলো ধ্বংস করেছে।”
কিছু অধিকারকর্মী মনে করেন, ইউএসএআইডির অর্থায়ন স্থগিত করার পদক্ষেপটি ডিপ স্টেটের স্বার্থের বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত, যাদের লক্ষ্য নীতি প্রভাবিত করা এবং নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা।
স্বাধীন সাংবাদিক ও ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র নির্মাতা জেমস লি বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএআইডি বন্ধ করার চেষ্টা করছে। ডিপ স্টেট রেগে গিয়েছে। কেন? কারণ ইউএসএআইডি আসলে ‘মানবিক সহায়তা সংস্থা’ নয় — এটি একটি গোপন গুপ্তচর সংস্থা যা অভ্যুত্থান, প্রতিবাদ ও ক্ষমতা পরিবর্তনে অর্থায়ন করে।”
কিউবায় বিদ্রোহ উসকে দিতে ইউএসএআইডির প্রোগ্রাম
২০০৯ সালের অক্টোবরে ইউএসএআইডির একটি প্রকল্পে ভেনেজুয়েলা, কোস্টা রিকা ও পেরুর তরুণদের কিউবায় পাঠানো হয় স্বাস্থ্য ও নাগরিক প্রোগ্রামের নামে। তবে গোপন উদ্দেশ্য ছিল বিদ্রোহ উসকে দেওয়া।

তারা গোপনে কাজ করতেন এবং পর্যটক হিসেবে পুরো দ্বীপজুড়ে ভ্রমণ করতেন রাজনৈতিক কর্মী বানানোর জন্য উপযুক্ত মানুষ খুঁজে বের করতে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের ২০১৪ সালের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।
ইউএসএআইডি একটি ভুয়া কিউবান টুইটার প্ল্যাটফর্ম, জুনজুনিও তৈরি করেছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল তরুণ ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করা এবং ধীরে ধীরে তাদেরকে সরকারবিরোধী কনটেন্টের সঙ্গে পরিচিত করিয়ে প্রতিবাদ উসকে দেওয়া।
ভেনেজুয়েলায় টার্গেট শ্যাভেজ ও মাদুরো
ইউএসএআইডি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ ও নিকোলাস মাদুরোকে উৎখাত করতে ২০০২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিরোধী দলগুলোর কাছে কোটি কোটি ডলার পাঠিয়েছে, এমন অভিযোগ আছে।
২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট শ্যাভেজের বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা সমর্থন করেছিল। শ্যাভেজ সেই সময় ভেনেজুয়ালার জন্য সামাজিক প্রোগ্রামে বড় আকারে বিনিয়োগ করছিলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা অস্বীকার করছিলেন।

যদিও জর্জ বুশ প্রশাসন অভ্যুত্থান থেকে নিজেকে আলাদা করার চেষ্টা করেছিল, তবুও তাৎক্ষণিকভাবে তারা ব্যবসায়ী পেদ্রো কারমোনার নেতৃত্বে গঠিত সরকারকে সমর্থন জানায়। তবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শ্যাভেজের সমর্থকরা রাস্তায় বের হয়ে অভ্যুত্থান উল্টে দেয়।
২০১৩ সালে উইকিলিকস ২০০৬ সালের যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি কেবল (তারবার্তা) প্রকাশ করে। এতে বুশ প্রশাসনের শ্যাভেজকে দুর্বল করার কৌশল বর্ণনা করা হয়েছিল।
এই কেবল ২০০৪ সালের আগস্টে তৎকালীন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম ব্রাউনফিল্ড সই করেছিলেন। সেখানে পাঁচটি মূল কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছিল: “শ্যাভেজের রাজনৈতিক ভিত্তি দুর্বল করা, শ্যাভিজমকে বিভক্ত করা, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা রক্ষা করা ও শ্যাভেজকে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করা।“
এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে ‘গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা‘ হবে, লেখা ছিল কেবলে।
ব্রাউনফিল্ড লিখেছিলেন, ইউএসএআইডির ট্রানজিশন ইনিশিয়েটিভসের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটি শ্যাভেজের বিরুদ্ধে কাজ করতে ‘গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করার‘ ওপর মনোযোগ দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, “সংগঠিত নাগরিক সমাজ গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ, যেখানে প্রেসিডেন্ট শ্যাভেজ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি।”
আমেরিকান আইনজীবী, লেখক ও সাংবাদিক ইভা গোলিঙ্গার উল্লেখ করেন, শ্যাভেজকে উৎখাত করতে ব্যর্থ হওয়ার পর, ইউএসএআইডি/ওটিআই তার অর্থায়ন বাড়ায়, বাজেট বৃদ্ধি করে এবং নতুন প্রযুক্তি যেমন টুইটার, ফেইসবুক ও অন্যান্য ইন্টারনেট মাধ্যমে বিরোধী ‘যুব আন্দোলন‘ তৈরিতে মনোযোগ দেয়।
গোলিঙ্গার বলেন, “২০০৬ থেকে ২০১০ পর্যন্ত, ইউএসএআইডির বাজেটের ৩৪ শতাংশেরও বেশি—প্রায় প্রতি বছর ১৫ মিলিয়ন ডলার—যুবকদের মধ্যে একটি অ্যান্টি-শ্যাভেজ আন্দোলন তৈরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রাম, কর্মশালা এবং অন্যান্য ইভেন্টে ব্যয় করা হয়।”
২০১০ সালের মধ্যে ভেনেজুয়েলায় পশ্চিমা সমর্থিত বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর জন্য বাইরের অর্থায়ন ৫৭ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল, যেটি প্রধানত ইউএসএআইডি ও ন্যাশনাল এন্ডোভমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি (এনইডি) থেকে এসেছিল।
সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট পার্টির (পিএসইউভি) প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট দিয়োসদাদো কাবেলো বলেছেন, কিছু বিরোধী নেতা ইউএসএআইডির সঙ্গে সম্পর্কিত দুর্নীতি কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলেন।
কাবেলো বলেন, হুয়ান গুইদো, লিওপোলডো লোপেজ এবং কার্লোস ভেকিও একটি পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন, যেখানে মানবিক সাহায্যের জন্য বরাদ্দ করা অর্থ ভুলভাবে ব্যবহার করা হয় প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে উৎখাতের চেষ্টা করার জন্য।
কাবেলো জানান, এসব নেতারা ইউএসএআইডি থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পেয়েছিলেন। গুইদো পেয়েছিলেন ৩০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি, ভেকিও পেয়েছিলেন প্রায় ১৬০ মিলিয়ন ডলার এবং লোপেজ পেয়েছিলেন ৭০০ মিলিয়ন ডলার।
কাবেলো বলেন, এই অর্থ ‘ক্ষমতা পরিবর্তন‘ প্রচেষ্টায় ব্যবহৃত হয়েছিল, ভেনেজুয়েলার জনগণকে সহায়তা দেওয়ার পরিবর্তে।
ইউএসএআইডি এবং ২০১৪ সালের ইউক্রেনের অভ্যুত্থান
ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিমা সমর্থিত এক অভ্যুত্থানে অবৈধভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। এটি ইউএসএআইডি প্রোগ্রামের মাধ্যমে সুগঠিত একটি ষড়যন্ত্র বলে পর্যবেক্ষকরা উল্লেখ করেছেন।
এই অভ্যুত্থানটি ইউরোমেইদান বা মেইদান বিদ্রোহ দ্বারা প্ররোচিত হয়েছিল, যা ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর কিয়েভের মেইদান নেজালেজনোস্তি (স্বাধীনতা স্কয়ার) থেকে শুরু হয়ে ইউক্রেনজুড়ে বিক্ষোভ ও নাগরিক অস্থিরতার সৃষ্টি করেছিল।
বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল ইয়ানুকোভিচের ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইউক্রেন অ্যাসোসিয়েশন চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর। তিনি রাশিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন এবং ইউরেশীয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের দিকে ঝুঁকে পড়েন।

বিভিন্ন নথি সূত্রে জানা যায়, ইউরোমেইদান শুরুর আগে, ইউএসএআইডি এবং এনইডি ইউক্রেনে বিরোধী দল এবং মিডিয়া গোষ্ঠীগুলোর জন্য উল্লেখযোগ্য অর্থায়ন করেছিল।
এমন দাবি নিশ্চিত করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র, চলচ্চিত্র পরিচালক অলিভার স্টোন ও কেটো ইনস্টিটিউটের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ টেড গ্যালেন কারপেন্টার।
এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র বলেন, সিআইএ, ইউএসএআইডির মাধ্যমে ২০১৪ সালের কালার রেভোলিউশন প্ররোচিত করতে ৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিল।
তিনি বলেন, “ইউক্রেনে মেইদান নামে যে দাঙ্গা হচ্ছে, আমরা জানি না যে আমরা এসব দাঙ্গায় অর্থায়ন করছি। সংবাদপত্রগুলো কখনো আমাদের বলেনি, আমাদের সরকারও কখনো বলেনি যে ইউএসএআইডি, যা সিআইএর একটি আড়াল, পাঁচ বিলিয়ন ডলার এই দাঙ্গাগুলোতে বিনিয়োগ করেছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, এসব কার্যক্রম দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার নামে করা হয়েছিল, যা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে এক ভয়াবহ যুদ্ধের মধ্যে আটকা পড়েছে।
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জেফ্রি পিয়াটের মধ্যে ফাঁস হওয়া এক আলাপচারিতায় ইউক্রেনে বিরোধী দলকে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা আরও স্পষ্ট হয়।
অডিও ক্লিপে নুল্যান্ডকে ইউক্রেনের পরবর্তী সরকারের গঠন নিয়ে মন্তব্য করতে শোনা যায়। নুল্যান্ড রাষ্ট্রদূত পিয়াটকে বলেন, তিনি মনে করেন না যে, বিরোধী দলের প্রধান নেতা এবং প্রাক্তন বক্সার ভিটালি ক্লিটস্কো নতুন সরকারের অংশ হবেন।
এই কথোপকথনটি ইউক্রেনের রাজনৈতিক পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যক্ত ভূমিকার সন্দেহগুলোকে আরো জোরালো করেছে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা বাড়িয়েছে।
বলিভিয়া থেকে ইউএসএআইডিকে বহিষ্কার
২০১৩ সালে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস ইউএসএআইডিকে বহিষ্কার করেন। কারণ তারা বলিভিয়ার জনগণ ও তার সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছিল।
মোরালেসের মতে, ইউএসএআইডির প্রোগ্রামগুলো `সামাজিক` উদ্দেশ্য না হয়ে `রাজনৈতিক‘ উদ্দেশ্য ছিল এবং তারা ইউনিয়ন নেতাদের `ম্যানিপুলেট` ও `ব্যবহার` করছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউএসএআইডি বলিভিয়ার ধনী প্রদেশগুলোতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে অর্থায়ন করছিল।
ইউএসএআইডির বলিভিয়া ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সংস্থাটি ১৯৬৪ সাল থেকে সেখানে স্বাস্থ্য, টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশ সম্পর্কিত প্রোগ্রাম পরিচালনা করার দাবি করেছিল।
সংস্থাটি জানায় যে, ২০১১ সালে বলিভিয়ায় তাদের বাজেট ছিল ২৬ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার।
হাইতির নেতাকে উৎখাতে ইউএসএআইডির ভূমিকা
ইউএসএআইডি ১৯৯১ সালে হাইতির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা জিন-বের্ত্রান্ড অ্যারিস্টিডের উৎখাতের ঘটনায় জড়িত ছিল।
জানা যায়, ইউএসএআইডি বিরোধী দল এবং ডেথ স্কোয়াডের প্রতি সমর্থন জানায়। এর ফলে অ্যারিস্টিডের সরকার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এবং উৎখাত হয়।

এই সম্পৃক্ততা অভ্যুত্থানের পর প্রকাশ পায়। তখন জানা যায়, ইউএসএআইডির তহবিল এবং সম্পদ অ্যারিস্টিডেবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করতে ব্যবহৃত হয়েছিল, যাতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
এই কার্যক্রমগুলো হাইতির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে ব্যাপকভাবে নিন্দিত হয়েছে।
অ্যারিস্টিডের অপসারণের পর হাইতি রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সহিংসতায় নিমজ্জিত হয়, যেখানে বিভিন্ন গোষ্ঠী ক্ষমতার জন্য প্রতিযোগিতা করছিল।
এই অস্থিরতা বছরের পর বছর স্থায়ী হয়। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়েছিল হাইতির জনগণের ওপর এবং তাদের আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করেছিল।
ইউএসএআইডি আফগানিস্তানে ‘কাউন্টারইনসার্জেন্সি অপারেশন’ এর আড়াল
২০০১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র বাহিনীর দখলদারিত্বের সময়, ইউএসএআইডিকে `কাউন্টারইনসার্জেন্সি অপারেশনের আড়াল‘ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
সহায়তাকারীরা আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকার মানচিত্র তৈরি করত, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করত এবং তালেবান সমর্থকদের শনাক্ত করতে সাহায্য করত, যারা ড্রোন হামলার টার্গেট ছিল।

২০১০ সালের `ফিক্সিং ইনটেল: আফগানিস্তানে গোয়েন্দা তথ্যকে কার্যকর করার একটি নীলনকশা‘ প্রতিবেদনে মেজর জেনারেল মাইকেল টি. ফ্লিন এবং অন্যান্য লেখকরা আফগানিস্তানে গোয়েন্দা কার্যক্রমের উন্নতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
তারা স্থানীয় সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন এবং উল্লেখ করেন যে, সহায়তাকারী দলগুলোর মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য সামরিক অপারেশনের জন্য মূল্যবান হতে পারে।
দুই দশকের সামরিক দখলদারিত্বের সময়ে, হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় নিহত হয়। তবে এজন্য কাউকে কখনো দায়ী করা হয়নি।
চিলিতে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ক্যু
চিলির গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর গুরুতর আঘাত পায়। তখন দক্ষিণ আমেরিকার প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট স্যালভাদর আলেন্দেকে জেনারেল অগুস্তো পিনোচেতের নেতৃত্বে এক রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে হটিয়ে দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ওই অভ্যুত্থানকে প্রধান সমর্থন দেয়। বিশ্লেষকদের মতে, আলেন্দেকে যুক্তরাষ্ট্র আঞ্চলিক স্বার্থের জায়গা থেকে হুমকি হিসেবে দেখত।

সিআইএ সমর্থিত এই অভ্যুত্থানের আগে ইউএসএআইডি ছিল একটি চ্যানেল, যার মাধ্যমে সিআইএ মিডিয়া প্রচার এবং বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর জন্য কোটি কোটি ডলার দিয়েছিল। আর ওই ডলার ব্যয় হয়েছিল আলেন্দের বিরুদ্ধে।
১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বরে অভ্যুত্থানের আগে চিলি রুটির সংকটে পড়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩ লাখ টন গম কেনার জন্য ক্রেডিট চেয়েছিল। রিচার্ড নিক্সন প্রশাসন এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। এতে অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়ে এবং অভ্যুত্থানের ক্ষেত্র তৈরি হয়।
অভ্যুত্থানের এক মাস পর ১৯৭৩ সালের ৫ অক্টোবর নিক্সন প্রশাসন চিলির ক্ষমতা দখলকারী জুন্তাকে ২৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন গম ক্রেডিট দেয়।
২০১১ সালে চিলির সরকার স্বীকার করে, পিনোচেতের শাসনামলে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ হত্যা, গুম বা নির্যাতিত হয়েছে।
স্লোভাকিয়ায় অভ্যুত্থান চেষ্টায় যুক্ত হয়ে ধরা ইউএসএআইডি
ইউএসএআইডি, এনইডি এবং অন্যান্য এনজিও স্লোভাকিয়ায় বিক্ষোভ সৃষ্টি করে সরকারকে অস্থিতিশীল করা এবং পশ্চিমা সমর্থিত সরকার আনতে মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
এগুলো `সিভিল সোসাইটি` এবং `গণতন্ত্র প্রচার` নামে স্লোভাকিয়ান এনজিওগুলিকে তহবিল দিয়েছে।
স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো এখন পর্যন্ত বিদেশী শক্তির মাধ্যমে তার সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা মোকাবেলা করেছেন। ফিকোর দাবি, গত বছরের শুরু হওয়া সরকারবিরোধী প্রতিবাদগুলো বিদেশী শক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।

সম্প্রতি ফিকো জানান, জর্জিয়ার ন্যাশনাল লিজিয়ন, যা ইউক্রেনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধেরত, এই ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে সমন্বয় করছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিবাদকারীদের এক-তৃতীয়াংশ ইউক্রেনীয় এবং অন্যান্য বিদেশী নাগরিক।
ইউক্রেনীয় মিডিয়া প্রকাশ্যে বিক্ষোভগুলোকে সমর্থন জানাচ্ছে এবং কিয়েভ-সংযুক্ত সংগঠনগুলো সক্রিয়ভাবে অস্থিরতা তৈরি করছে। পশ্চিমা দূতাবাসও বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে প্রকাশ্যে সহযোগিতা করছে, আগের কালার রেভোলিউশনের মতো।
গত মে মাসে যখন ফিকো এনজিওগুলোর প্রভাব সীমিত করতে এবং বিদেশি এজেন্টদের দেশে প্রবেশ বন্ধ করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তখনই তাকে হত্যার চেষ্টা হয়।
সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতন ও ইউএসএআইডি
সিরিয়ায় সরকার পরিবর্তন হয়েছে। বাশার আল আসাদের পতন হয়েছে। দশকের পর দশক ধরে ইউএসএআইডি, এনইডি এবং পশ্চিমা-সমর্থিত এনজিওগুলো সিরিয়ার যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। এগুলো বিরোধী গোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তা, প্রচারও মানবিক সহায়তার আড়ালে গোয়েন্দা কার্যক্রম চালাত।
ইউএসএআইডি ১৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ সিরিয়ায় দিয়েছে। এই অর্থ দিয়ে গোপনে সশস্ত্র গোষ্ঠী, ভাড়াটে সৈন্য, বিরোধী নেটওয়ার্ক এবং বিভিন্ন সরকারবিরোধী কার্যক্রম হয়েছে।

হোয়াইটস হেলমেটস নামের একটি গোষ্ঠীকে অর্থায়ন করেছিল ইউএসএআইডি। গোষ্ঠীটি পরবর্তীতে আল-কায়েদা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সহযোগিতা ও যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের পক্ষে প্রচারণামূলক ভিডিও তৈরি করে ধরা পড়ে।
এছাড়া ইউএসএআইডি নির্বাসিত বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর জন্য লজিস্টিক সহায়তা দিয়েছিল। সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ছায়া সরকার গঠনে সহায়তা করেছিল।
প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকার এই বিদেশী সমর্থিত অস্থিরতা তৈরির প্রচেষ্টাগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে প্রতিরোধ করেছে। ২০১৪ সালে সিরিয়া কয়েকটি ইউএসএআইডি সমর্থিত এনজিওকে বহিষ্কার করে। কারণ তাদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের আর্থিক সম্পর্ক ছিল।
যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা আসাদকে উৎখাতের লক্ষ্য থেকে পিছু হটেনি। ২০১৮ সালে আসাদ বলেছিলেন, “এনজিওগুলো সিরিয়াকে অস্থিতিশীল করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। তারা সাহায্য করার ভান করে। কিন্তু বাস্তবে তারা বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার জন্য কাজ করে।”
অর্থনৈতিক যুদ্ধে ইউএসএআইডির ব্যবহার
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর স্পেশাল অপারেশনস ফোর্সের (এআরএসওএফ) একটি ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ইউএসএআইডি প্রোগ্রামসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক উপকরণকে ব্যবহার করে।
নথিটি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরেছে, যেমন সেনাবাহিনী, পররাষ্ট্র দপ্তর, গোয়েন্দা সংস্থা, বাণিজ্য দপ্তর ও ইউএসএআইডি।

নথিতে বলা হয়েছে, এআরএসওএফ লক্ষ্যভিত্তিক অর্থনৈতিক প্রেরণা এবং বিরোধীতা চালানোর অনুমোদন পেয়েছে। এর মাধ্যমে `প্রতিদ্বন্দ্বী, মিত্র এবং অনুসারীদের` আচরণ প্রভাবিত করা হয়।
এই অর্থনৈতিক পদক্ষেপগুলো একটি পরিকল্পিত এবং সমন্বিত অবৈধ যুদ্ধের অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত হয়। এছাড়া এআরএসওএফকে পররাষ্ট্র দপ্তর এবং গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে, যেন তারা একটি লক্ষ্যভিত্তিক এলাকায় দুর্বল গোষ্ঠী চিহ্নিত করতে এবং অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের ফলাফল পূর্বানুমান করতে পারে।
ইউএসএআইডির বিদেশি দেশে উপস্থিতি এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে এর মিশন যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তার করার একটি সুযোগ দেয় বলেও নথিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া বাণিজ্য দপ্তর তার বিদেশে কার্যরত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির সঙ্গে সম্পর্ক ব্যবহার করে কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করতে পারে।
ফাঁস হওয়া এই নথিটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি এবং সংস্থাগুলোর সমন্বিত প্রয়োগ, বিশেষ করে ইউএসএআইডি, অর্থনৈতিক যুদ্ধের মাধ্যমে কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের একটি অগ্রগামী চিত্র তুলে ধরে।
সাংবাদিক জেমস লি সোশাল মিডিয়া এক্সে এক পোস্টে লেখেন, “স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, ইউএসএআইডি `গণতন্ত্র` ও `সাহায্য’ করার কথা বললেও, বাস্তবে এটি সবসময়ই যুক্তরাষ্ট্রের গোপন হাতিয়ার— সিআইএ-সমর্থিত ক্ষমতার পরিবর্তন, নির্বাচনী হস্তক্ষেপ এবং ‘মানবিক সহায়তা’ হিসেবে নাগরিক অস্থিরতা তৈরিতে কাজ করে।”
তথ্যসূত্র : এপি, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, দ্য হেরাল্ড।