সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদীর ঝিনাইদহ শহরের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে ১০ থেকে ১২ জন ব্যক্তি ওই হামলা চালায়।
বাড়ির নিরাপত্তা প্রহরী ফেরদৌস হাসান জানান, মাগরিবের আজানের সময় হঠাৎ কয়েকজন লোক বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করে। দুজন ভেতরে ঢুকে তিনটি মোটরসাইকেল, চেয়ার ও সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর এবং তাকে মারধর করে।
তবে মূল ভবনের ভেতরে ফটকে তালা থাকায় তারা সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি বলে জানান তিনি।
নাসের শাহরিয়ার জাহেদী পরিচালিত জাহেদী ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী তবিবুর রহমান বলেন, “মণ্ডল সাহেব চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে আছেন। বাড়িতে কেউ না থাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা কিছুটা শিথিল ছিল। সন্ধ্যায় হঠাৎ দুর্বৃত্তরা বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। মণ্ডল সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। তার নির্দেশে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে বাংলাদেশে তথাকথিত তার্কিস লবির অন্যতম প্রধান ব্যক্তি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। এই লবির মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়।

ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিগত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের কোনো কার্যক্রম বা কর্মসূচিতে তাকে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল বৈঠকে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে তাকে ভর্ৎসনা করে বলেন, “দলের সঙ্গে বেইমানির মূল্য দিতে হবে।”
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহসভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন নাসের শাহরিয়ার জাহেদী।
স্থানীয়রা বলছেন, জাহেদী ইতোমধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে অর্থনৈতিক লিয়াজোঁর মাধ্যমে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। ঝিনাইদহ-২ আসনে তিনি এবার বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন বলেও জোর গুঞ্জন রয়েছে।
এবার গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের এই আসনে নির্বাচন করার কথা রয়েছে। বিএনপিও আসনটিতে নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।
তবে সম্প্রতি তারেক রহমানের সঙ্গে জাহেদীর যোগাযোগের তথ্য ফাঁস হলে স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ জাহেদীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
“জুলাই আন্দোলনকারীদের ব্যবহার করে” বিএনপি তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলেও স্থানীয়দের কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।”



