বিভিন্ন বিষয়ের খবর দিয়ে বুধবার সংবাদপত্রগুলো তাদের প্রধান প্রতিবেদন করেছে। মঙ্গলবার সেহরির সময় গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো ভয়াবহ ইসরায়েলি হামলায় চার শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবরকে গুরুত্ব দিযে প্রধান শিরোনাম করেছে কয়েকটি সংবাদপত্র। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য, শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতার কারণে পড়াশোনায় শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে পড়া ও খাদ্য আমদানি পরিস্থিতি বিষয়ক খবরও গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে সংবাদপত্রগুলো। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বুধবার কোন সংবাদপত্র কোন খবরকে প্রধান শিরোনাম করেছে।

কালের কণ্ঠ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা, শিক্ষকদের আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনসহ নানা কারণে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে– এমন খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে কালের কণ্ঠ। ‘পড়াশোনায় পেছাচ্ছে শিক্ষার্থীরা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা, শিক্ষকদের আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনসহ নানা কারণে পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া সময়মতো বই দিতে না পারায় গত আড়াই মাসে সঠিকভাবে পড়াশোনা করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। বেসরকারি স্কুল-কলেজে শিক্ষকসংকট প্রকট। এতে চলতি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতির আশঙ্কা করছেন শিক্ষাবিদরা।
গত সাত মাসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ নানা দাবিতে আন্দোলন জোরদার হয়। বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের মধ্যে মারামারি, সংঘর্ষেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর বড় উদাহরণ। রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনও বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করে। বর্তমানে ছোটখাটো দাবিতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের আন্দোলন করছেন। এমনকি যা আলোচনার টেবিলে সমাধান সম্ভব, সেগুলো নিয়ে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাইরে বিক্ষোভ করছেন, ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ করছেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভোস্টের পদত্যাগ নিয়েও অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা এখন কথায় কথায় আন্দোলনে নেমে যাচ্ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
পত্রিকাটির ‘মূলধন ঘাটতির চোরাবালিতে পড়তে যাচ্ছে ব্যাংক খাত’ শিরোনামের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা মোটেও ভালো চলছে না। পলাতক হাসিনা সরকারের আমলে এই খাত থেকেই লুট করা হয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে ব্যাংক খাতের দগদগে ক্ষত। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। আর এই খেলাপি ঋণ মূলধন ঘাটতির চোরাবালির দিকে নিয়ে যাচ্ছে পুরো খাতকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়ে তিন লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকায় ঠেকেছে। এটি মোট ঋণের ২০.২০ শতাংশ। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে পরিচালন মুনাফার ০.৫ থেকে ৫ শতাংশ সাধারণ ক্যাটাগরির ঋণের বিপরীতে প্রভিশন হিসেবে রাখতে হয়।
নিম্নমানের খেলাপি ঋণের বিপরীতে ২০ শতাংশ এবং সন্দেহজনক খেলাপি ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ রাখতে হয়। এ ছাড়া প্রতিটি ব্যাংকের জন্য মন্দ বা লোকসান ক্যাটাগরির খেলাপি ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশনিং আলাদা করে রাখার বিধান রয়েছে। প্রভিশন ঘাটতি ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি অশনিসংকেত। কারণ এটি ব্যাংকগুলোর দুর্বল আর্থিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে, যা মূলত উচ্চ খেলাপি ঋণের ফল।

প্রথম আলো
সেহরির সময় গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা চালানোর খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে প্রথম আলো। ‘যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের অনেকে তখন গভীর ঘুমে। কেউ কেউ সাহ্রির প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এমন সময় শুরু হয় একের পর এক বোমা হামলা। ইসরায়েলি বাহিনীর সেই হামলায় হতাহত হতে থাকেন নারী-শিশুসহ সব বয়সী ফিলিস্তিনি। রাতের অন্ধকারে চলতে থাকে আহত রক্তাক্ত মানুষের আর্তচিৎকার আর আতঙ্কিত মানুষের দিগ্বিদিক ছোটাছুটি। যুদ্ধবিরতির মধ্যে আবার দুঃস্বপ্নের রাত ফিরে এল ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এ উপত্যকায়।
১৫ মাস ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর গাজাবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছিল যুদ্ধবিরতি। ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন করে গাজায় হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার। গত সোমবার মধ্যরাতের পরে ঘুমন্ত গাজাবাসীর ওপর এই হামলায় অন্তত ৪০৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার দক্ষিণের খান ইউনিস ও রাফা, উত্তরের গাজা নগর এবং মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহসহ গাজার প্রায় সব জায়গায় যুদ্ধবিমান ও ড্রোন থেকে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ৫৬২ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

সমকাল
খালের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও অবস্থান নির্ধারণ নিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বিড়ম্বনায় পড়ার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে সমকাল। ‘খালের সীমানা নিয়ে ঢাকার দুই সিটি উভয় সংকটে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাল হস্তান্তরের চার বছর পেরিয়ে গেলেও মালিকানা বুঝে পায়নি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এ কারণে খালের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও অবস্থান নির্ধারণ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে সংস্থা দুটি। খালপাড় নিয়ে পরিকল্পনাও করতে পারছে না তারা।
এদিকে, সীমানার সুরাহা না হওয়ায় খালপাড়ের জমির মালিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পড়েছে মহাবিপদে। খাল এলাকার জমি হলে সিটি করপোরেশন থেকে নিতে হয় অনুমতি। ঢাকা মহানগরীর প্রায় প্রতিটি মৌজাতেই খালের অস্তিত্ব বিদ্যমান। ফলে যেসব মৌজায় খাল রয়েছে, ঘরবাড়ি বানাতে গেলেই লাগছে সিটি করপোরেশনের অনুমোদন। তবে আবেদন করেও তা মিলছে না। ওই সব জমির মালিক অবকাঠামো তৈরির জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছে আবেদন করেও বছরের পর বছর ঘুরছেন। সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, খালের মালিকানা মুখে মুখে পেলেও কাগজপত্র, নকশার গেজেটেড কপি সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেয়নি ঢাকা ওয়াসা বা জেলা প্রশাসক (ডিসি) কার্যালয়। লিখিত কাগজপত্র না পাওয়ায় সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ খালপাড়ে ইমারত নির্মাণের অনুমতি দিচ্ছে না।

যুগান্তর
ভারতে বসে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হওয়া আলোচনা-সমালোচনার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে যুগান্তর। ‘ভারতীয় প্রোপাগান্ডায় তুলসীর তাল’শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে বসে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যকে ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। কোনো নির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই এই ধরনের বিভ্রান্তিকর অভিযোগ অন্যায় ও অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।
তুলসীর এই মন্তব্য ভারতীয় প্রোপাগান্ডানির্ভর এবং সত্যের অপলাপ বলে মনে করছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল এবং কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারাও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমনির্ভর হয়ে তুলসী গ্যাবার্ডের দেওয়া এই ধরনের অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, তুলসী গ্যাবার্ড ভারতীয় প্রোপ্রাগান্ডার সুরে তাল মিলিয়েছেন। অন্যদিকে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলেও তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইত্তেফাক
সেহরির সময় গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা চালানোর খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে ইত্তেফাকও। ‘গাজায় ইসরাইলের নারকীয় হামলা, চার শতাধিক নিহত’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় নারকীয় হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। সোমবার রাত থেকে চালানো হামলায় নিহতের সংখ্যা চার শতাধিক ছাড়িয়েছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজার উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ইসরাইলের এই হামলায় বিশ্ব জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা হামাস নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে।
গাজার উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং হামাসের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাহমুদ আবু ওয়াফাহ একটি হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর গাজায় এটিই সবচেয়ে বড় বিমান হামলা। যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর আলোচনা সমঝোতায় পৌছাতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, পবিত্র রমজান মাস হওয়ায় অনেক লোক সেহরি খাচ্ছিলেন, তথনই গাজায় বিস্ফোরণ শুরু হয়। ২০টিরও বেশি ইসরাইলি যুদ্ধবিমান গাজা সিটি, রাফাহ ও খান ইউনিসের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে শুরু করে বলে তারা জানিয়েছেন।

বণিক বার্তা
খাদ্য আমদানি পরিস্থিতির সর্বশেষ খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বণিক বার্তা। ‘খাদ্য আমদানি প্রয়োজন প্রায় ৮০ লাখ টন, হয়েছে ৪৮ লাখ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে অন্তত ৬৮ লাখ টন গম আমদানির প্রয়োজন পড়বে বলে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এছাড়া পর পর দুটি বন্যায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দেশে চাল উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ লাখ টন। সে হিসেবে রক্ষণশীলভাবে হিসাব করলেও চলতি অর্থবছরে সর্বমোট চাল ও গম আমদানির প্রয়োজন পড়ে ৮০ লাখ টনের বেশি।
গত ১৭ মার্চ পর্যন্ত দেশে খাদ্যশস্য দুটি আমদানির পরিমাণ ছিল ৪৮ লাখ টনের বেশি। এ অনুযায়ী বাকি তিন মাসে আমদানি করতে হবে ৩২ লাখ টন। ইউএসডিএর পরিসংখ্যানকে আমলে নিয়ে অত্যন্ত রক্ষণশীলভাবে হিসাব করতে গেলেও অর্থবছরের বাকি সময়ে প্রতি মাসে গড়ে ১০ লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্য আমদানি করতে হবে। বন্যায় উৎপাদন হ্রাসের প্রেক্ষাপটে বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং খোলাবাজারে চাল বিক্রিসহ সরকারের খাদ্যভিত্তিক সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলো নির্বিঘ্ন রাখতে এ পরিমাণ আমদানির বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
মিয়ানমার ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহর খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। ‘সীমান্তের আতঙ্ক আতাউল্লাহ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আতঙ্কের নাম আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি) প্রধান আতাউল্লাহ। পুরো নাম আতাউল্লাহ ওরফে ‘আবু আমর জুনুনি’। শুধু মিয়ানমার নয়, বাংলাদেশের সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকার শীর্ষে এই দুর্ধর্ষ রোহিঙ্গা।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু কোনারপাড়া এলাকায় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) এক কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উঠে আসা ৪৯ জন দুর্ধর্ষ আসামির মধ্যে অন্যতম ছিলেন এই আতাউল্লাহ।
জানা গেছে, মিয়ানমার ভিত্তিক বিদ্রোহী সংগঠন ‘হারাকাহ আল ইয়াকিন’। পরে সংগঠনটি পরিচিতি পায় ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ বা আরসা নামে। বিদ্রোহী এ সংগঠনটির প্রধান আতাউল্লাহ। তিনি রোহিঙ্গাদের কাছে আলোচিত-সমালোচিত। ২০১৭ সালে তার বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর শুরু হয় দমন নিপীড়ন। লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে পালিয়ে আসতে হয় বাংলাদেশে।

নয়া দিগন্ত
সেহরির সময় গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা চালানোর খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে নয়া দিগন্তও। ‘গাজায় ফের ইসরাইলি হামলা, নিহত ৪১৩’শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ফের হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। এই হামলায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অন্তত ৪১৩ জন ফিলিস্তিনির নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছে। নিহতদের বেশির ভাগই নারী, শিশু এবং বয়স্ক নাগরিক। গাজার উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং হামাসের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাহমুদ আবু ওয়াফাহ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার নিজেদের পৃথক লাইভ আপডেটে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি ও আলজাজিরা।
আলজাজিরা তাদের সরাসরি সম্প্রচারিত আপডেটে জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটিয়েছে ইসরাইল এবং এরপর অবরুদ্ধ এই উপত্যকাজুড়ে বিমান হামলা শুরু করেছে। বর্বর এই হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪১৩ জন ফিলিস্তিনির নিহত এবং অন্যান্য আরো অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশুও রয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসা সূত্র। গাজার উত্তরাঞ্চলেই প্রাণ হারিয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ।

আজকের পত্রিকা
আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যবস্থা নেওয়ার খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে আজকের পত্রিকা। ‘জুলাইয়ের নিপীড়কদের শাস্তি দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার পতন ঘটানো জুলাই আন্দোলনের শুরুটা হয়েছিল দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে। এই আন্দোলনে প্রথম হামলা ও নিপীড়নের শুরুটাও হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। আন্দোলনকারীদের ওপর এসব হামলায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। পাশাপাশি হামলায় উসকানি দেওয়া শিক্ষকেরাও শাস্তি পেতে যাচ্ছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে চার শ শিক্ষার্থী ও নয়জন শিক্ষককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৮, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮৯ এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ১৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এসব শিক্ষার্থীর বেশির ভাগই নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
শুধু এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হামলার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে। এসব ঘটনাকে আমলে নিয়ে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।

দেশ রূপান্তর
রাজধানী ঢাকার উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) সংশোধনের খবর দিয়ে প্রধান প্রতিবেদন করেছে দেশ রূপান্তর। ‘ভবন নির্মাণে শর্ত শিথিল হচ্ছে’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবশেষে সংশোধন হতে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকার উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ)। আজ বুধবার এ-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সংশোধনী চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে সরকার। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু জটিল শর্ত শিথিল করে রাজধানী উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষ (রাজউক) প্রণীত ড্যাপের সংশোধনী চূড়ান্ত করা হয়েছে। সংশোধিত ড্যাপে সরকারি-বেসরকারি আবাসন, ব্লকভিত্তিক আবাসন, একত্রীভূত প্লটের মালিকদের কিছুটা ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) বাড়ানো হয়েছে। এতে আগের চেয়ে ভবনের প্রশস্ততা ও উচ্চতা বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আগের তুলনায় বেশি উচ্চতার ভবন নির্মাণের সুবিধা পাবেন ভূমিমালিকরা। সব মিলিয়ে কম জায়গায় বেশি মানুষের আবাসনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।