আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিংস পার্টি হিসেবে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়নি, তাই বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগকে মুছে ফেলাও এত সহজ নয়।
সোমবার ২৩ জুন ৭৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে প্রকাশিত এক বাণীতে তিনি একথা বলেন।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এ দলটির বর্তমান সভানেত্রী তারই মেয়ে শেখ হাসিনা, যিনি ভারতে অবস্থান করলেও তার দিকনির্দেশনাতে চলছে দলের যাবতীয় কার্যক্রম।
ইয়াহিয়ার আমলে বিচ্ছিন্নতাবাদির তকমা পাওয়া মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দলটি মুহাম্মদ ইউনূসের জমানায় দৃশ্যত কাঠগড়ায়।
গত ১০ মে রাতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক নজিরবিহীন বিশেষ সভায় দলটির কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, “তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের বিরোধিতা করে জন্ম নেওয়া এই দল কখনো ক্ষমতার তোয়াক্কা না করে মানুষের অধিকার আদায়ে যেমন সোচ্চার, তেমনি জনকল্যাণেও সর্বাগ্রে। ৭৬ বছরের প্রাজ্ঞ এই দলের সবচেয়ে বড় অর্জন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আর আওয়ামী লীগ সমার্থক। বাংলাদেশের মাটি থেকে কেউ আওয়ামী লীগকে মুছে ফেলতে পারবে না।”
গেল বছর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের নামে শুরু হওয়া আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট ক্ষমতা হারায় টানা ১৫ বছর শাসন করা এই দলটি। এর পর থেকে ভারতে অবস্থান নিয়ে সেখান থেকেই দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
বাণীতে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “আজকের এই দিনে আমি শ্রদ্ধা জানাই আওয়ামী লীগের অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রবাদপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শ্রদ্ধা নিবেদন করছি, কৃষক-জনতার নেতা শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরোওয়ার্দী ও মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে।”
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “বেদনার সঙ্গে বলতে হয়, আজ আমরা গভীর সংকট পার করছি। একটি অসাংবিধানিক সরকার অন্যায়ভাবে আমাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে, যেমনটি ১৯৭১ সালে ইয়াহিয়া খানও করেছিল।”
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের দমন-পীড়নের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে, লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এই দমন-পীড়ন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নয়, এটি জনগণের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র।”
দলের নেতাকর্মীদের সাহস জুগিয়ে তিনি বলেন, “সাহস হারাবেন না। অতীতের মতো এবারও বাংলাদেশকে রাহুমুক্ত করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর সাহস, ধৈর্য ও বিচক্ষণতার শিক্ষাই আমাদের যুদ্ধ জয়ের অস্ত্র।”
এ সম্পর্কিত আরও খবর: