শুল্ক যুদ্ধে চীনের হাতিয়ার কি

XI

সময় যত গড়াচ্ছে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ ততটাই উত্তাপ ছড়াচ্ছে। শুল্ক যুদ্ধের শুরুটা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করেছেন। চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। শুল্ক থেকে ৯০ দিনের জন্য অন্য অনেক দেশকে রেহাই দিলেও, চীনকে কোনো ছাড় দেননি ট্রাম্প।

অবশ্য অন্য দেশগুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হাতজোড় করেনি চীন। উল্টো চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর শুল্ক আরোপ করতে দেখা গেছে ধীরে ধীরে। বেইজিং ট্রাম্পের মতো শুল্ককে সর্বাঙ্গীন বাণিজ্য যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে না। কারণ ট্রাম্পের প্রথম আমল থেকে শুরু হওয়া বাণিজ্যযুদ্ধের পর থেকেই ধীরে ধীরে প্রস্তুতি নিয়েছে চীন, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায়।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকেই বাণিজ্য যুদ্ধের ক্ষেত্রে চীন নানা ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছে। এখন চীন এসব ব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে ব্যবহার করতে প্রস্তুত হচ্ছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চীন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। 

এছাড়া চীন যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি কোম্পানিকে, যাদের মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ-সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান যেমন শিল্ড এআই ও সিয়েরা নেভাদাকে বাণিজ্যিক কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এক ডজন কোম্পানির ওপর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে চীন। এর মধ্যে রয়েছে আমেরিকান ফটোনিক্স ও বিআরআইএনসি ড্রোনস নামক কোম্পানি।

চীনের এসব পদক্ষেপ ট্রাম্পকে আরও উত্তেজিত করেছে। গত বুধবার তিনি অনেক দেশের ওপর উচ্চ শুল্ক স্থগিত রাখার ঘোষণা দিলেও চীনকে লক্ষ্য করে শুল্ক আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, একের পর এক শুল্কহার বাড়িয়েই চলেছেন তিনি।

এই পরিস্থিতির ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এখন একটি পূর্ণমাত্রার অর্থনৈতিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ট্রাম্প মূলত শুল্ককে বাণিজ্য যুদ্ধের প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। কিন্তু চীন শুল্ক ছাড়াও আরও অনেক কৌশল ব্যবহার করছে। চীন চায় যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করে তাদের জন্য চীনের বাজারে ব্যবসা করা কঠিন করে তুলতে।

চীন ইতোমধ্যে যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও ব্যবহার করতে পারে তার মধ্যে রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামালের ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা, ভয় দেখাতে ও শাস্তি দিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তদন্ত,যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে চীনে পণ্য বিক্রি করতে বাধা দেওয়ার জন্য কালো তালিকাভুক্ত করা।

এছাড়া চীনের কর্তৃপক্ষ এমন নতুন কৌশল নিয়েও কাজ করছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে বাধ্য করা যায় নিজেদের মূল্যবান মেধাস্বত্ব হস্তান্তর করতে। অন্যথায় তাদের চীনের বাজার থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।

চীনের এই নতুন বাণিজ্যিক ব্যবস্থা দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা প্রকাশ করে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নিজেদের অর্থনীতি যখন একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন করার পথে এগোচ্ছে, তখন এটি আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, চীনে ব্যবসা, বিনিয়োগ বা শুধু বাণিজ্য করাও এখন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য বিপদের।

ওবামা প্রশাসনের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং বর্তমানে জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এভান মেদেইরোস বলেন, “চীন একটি নতুন ধরণের বাণিজ্যিক অস্ত্রভান্ডার তৈরি করেছে। এর উদ্দেশ্য হলো—চীনের ক্ষতির পাল্লা কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করা। এই প্রস্তুতি চীনের জন্য অসম শক্তির সুবিধা এনে দিয়েছে।”

চীনের সরকার ও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সাহসী ও চ্যালেঞ্জপূর্ণ ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, “যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে কাজ চালিয়ে গেলে চীন শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।”

বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বেইজিং দেশের স্বার্থ রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেবে। তবে তারা আলোচনার দরজাও খোলা রেখেছে। তবে তা হতে হবে “সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বিনিময়ের নীতির” ভিত্তিতে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে চীনের সঙ্গে সেবা খাতে বাণিজ্যে লাভবান হয়ে আসছে। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র এই খাতে ২৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত আয় করেছে।

চীন যুক্তরাষ্ট্রে যত পণ্য রপ্তানি করে, যুক্তরাষ্ট্র চীনে তার চেয়ে অনেক কম পণ্য রপ্তানি করে। তারপরও চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের তৃতীয় বৃহত্তম ক্রেতা। সয়াবিন, উড়োজাহাজ ও খনিজ তেল হলো যুক্তরাষ্ট্রের চীনে রপ্তানিকৃত প্রধান পণ্য।

তবে এমন কিছু পন্থা রয়েছে, যেগুলোর ব্যবহার চীন আপাতত এড়িয়ে চলবে। কারণ তাতে চীন নিজেরও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ইউয়ানের মান উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেওয়া অথবা যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বন্ড দ্রুত বিক্রি করে দেওয়া। এসব পদক্ষেপ চীনের আর্থিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের কৌশলে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সম্প্রতি চীনের কর্মকর্তারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশের সঙ্গে (কম্বোডিয়া, লাওস ও থাইল্যান্ড) বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। সেই সঙ্গে এই অঞ্চলের দেশে চীনা মুদ্রা ইউয়ান ব্যবহার করে লেনদেন সম্পন্ন করার প্রচারও চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মাধ্যমে।

চীনা কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, বেইজিং চায় ইউয়ানের মান মোটামুটি স্থিতিশীল রাখতে। এর উদ্দেশ্য হলো—‘ডি-ডলারাইজেশন’ কৌশল বাস্তবায়ন করা। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের পরিবর্তে ইউয়ান ব্যবহার বাড়ানো।

বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। ট্রাম্প বারবার চীনের ওপর শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় শি জিনপিংয়ের সরকারও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। শি সরকার শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার আশা করেছিল। কিন্তু এখন সেই আশা ক্ষোভ ও অসন্তোষে পরিণত হয়েছে।

চীনের সাম্প্রতিক পাল্টা পদক্ষেপগুলোর ধরন দেখলে বোঝা যায়, দেশটি এখন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। বিশেষ করে যেসব কোম্পানি উন্নত প্রযুক্তি খাতে কাজ করে। সেগুলোর ওপর চীন বেশি নজর দিচ্ছে।

ওয়াশিংটনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেও চীন এখনো তার বাজারের আকর্ষণকে ব্যবহার করছে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে টানার জন্য। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে গেছে। তবুও চীন প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব পাওয়ার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে চায়।

গত কয়েক বছরে চীনে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ অনেক কমে গেছে। তারপরও সাম্প্রতিক বেশ কিছু জরিপে দেখা গেছে—গাড়ি নির্মাতা, ওষুধ প্রস্তুতকারক ও চিপ নির্মাতা অনেক আন্তর্জাতিক কোম্পানি এখনো চীনে ব্যবসায় জড়িত থাকতে আগ্রহী।

তবে এসব কোম্পানি এখন ক্রমেই চীনের নানাবিধ ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অব কমার্স ফাউন্ডেশনের জন্য পরিচালিত একটি নতুন প্রতিবেদনে দেখা গেছে—গত কয়েক বছরে জরিপ করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২০০টি কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগই চীনকে তাদের প্রধান ভূরাজনৈতিক ঝুঁকির উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

চীন তার ভূরাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে কৌশলগুলো ব্যবহার করছে, তার মধ্যে একটিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে দেশটির অ্যান্টিমনোপলি আইন। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য লাভজনক হতে পারত এমন কিছু ব্যবসায়িক একীভবনের প্রস্তাব (যেমন ইন্টেলের ইসরায়েলের টাওয়ার সেমিকন্ডাক্টর অধিগ্রহণের চেষ্টা) চীনা কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বাস্তবায়িত হয়নি।

সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর চীন পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ডু পঁ’র চীনে পরিচালিত কার্যক্রমের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু করেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো—২০২৩ সালে ডু পঁ’র মোট আয়ের ১৯ শতাংশই এসেছে মূল ভূখণ্ড চীন ও হংকং থেকে। তবে এই তদন্ত শুরু করার পেছনে চীনা কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।

চীনের মনোপলি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বর্তমানে আরও একটি চুক্তির মূল্যায়ন করছে। এই চুক্তিতে পানামার দুটি বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব হংকংয়ের ধনী উদ্যোক্তা লি কা-শিংয়ের পরিবার নিয়ন্ত্রিত কোম্পানি সিকে হাচিসন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারী গ্রুপ ব্ল্যাকরকের নেতৃত্বাধীন একটি দলের হাতে যাওয়ার কথা। এই চুক্তিতে অংশ নেওয়া কোনো কোম্পানি বা সম্পদ চীনের মূল ভূখণ্ডে অবস্থিত নয়। তবুও বেইজিংয়ের তদন্তের ফলে এই চুক্তি বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই বিষয়টি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনার একটি কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

এদিকে পানামার শীর্ষ অডিট সংস্থা জানিয়েছে, সিকে হাচিসন বন্দর পরিচালনার জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ করেনি এবং প্রয়োজনীয় অনুমতি সংগ্রহে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এই চুক্তি এখন বড় বাধার সম্মুখীন।

চীন যে আরেকটি শক্তিশালী বাণিজ্যিক অস্ত্র তৈরি করেছে, সেটি হলো তথাকথিত “আররিলায়েবল এনটিটি লিস্ট”। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সেই তালিকার অনুরূপ, যেখানে বিদেশি কোম্পানি ও ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমিকর বিবেচনা করে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

চীন ২০১৯ সালে এই কালো তালিকা তৈরি করে। তার আগে যুক্তরাষ্ট্র চীনের টেলিকম কোম্পানি হুয়াওয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। যেসব কোম্পানিকে চীন ‘অবিশ্বস্ত সত্তা’ হিসেবে চিহ্নিত করে, তাদের চীনে বিনিয়োগ বা চীনা কোম্পানির সঙ্গে বাণিজ্য করার অনুমতি থাকে না। সেই সঙ্গে এসব কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের ওপর চীনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়।

জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির মেদেইরোস এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রিভিয়াম চায়নার সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ড্রু পোল্কের একটি নতুন গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে—চীন ‘আনরিলায়েবল এনটিটি লিস্ট’ ব্যবহারে দীর্ঘ সময় ধরে ধীরে ও সতর্কভাবে এগিয়েছে। তবে সম্প্রতি চীন এই তালিকার ব্যবহার বাড়াতে শুরু করেছে।

চীন ২০২৩ সালে এই তালিকা ব্যবহার শুরু করে। তখন তারা যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন ও রেথিয়ন মিসাইলস অ্যান্ড ডিফেন্স নামের দুটি কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করে। এই দুই কোম্পানি তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিল। যদিও এই পদক্ষেপের প্রভাব সীমিত ছিল। কারণ এই দুটি কোম্পানি চীনের মূল ভূখণ্ডে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত ব্যবসা খুব কমই করে। রেথিয়নের সঙ্গে যুক্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরও এই তালিকা কোনো বড় প্রভাব ফেলেনি।

তবে মেদেইরোস ও পোল্কের গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ দিকে ও ২০২৫ সালের শুরুর দিকে চীন এই তালিকার ব্যবহার আরও বাড়িয়ে দেয়। এই সময় তারা শুধু তালিকাভুক্তির সংখ্যা বাড়ায়নি। বরং এর আওতাও প্রসারিত করেছে। এই গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ওয়াশিংটন কোয়ার্টারলি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্কবৃদ্ধিমূলক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় চীন যুক্তরাষ্ট্রের আরও কিছু কোম্পানিকে এই তালিকায় যুক্ত করেছে। এবার শুধু প্রতিরক্ষা খাতের কোম্পানি নয়, বরং অন্যান্য খাতের কোম্পানিও তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পিভিএইচ (ক্যালভিন ক্লেইন ও টমি হিলফিগারের মূল কোম্পানি) ও বায়োটেকনোলজি প্রতিষ্ঠান ইলুমিনা।

পিভিএইচ চীনের রোষানলে পড়ে। কারণ কোম্পানিটি জানিয়েছিল, তারা যুক্তরাষ্ট্রের আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে শিনজিয়াং অঞ্চলের তুলা উৎপাদন থেকে সরে আসবে। চীনা কর্মকর্তাদের মতে, ইলুমিনা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা প্রতিযোগীদের বাদ দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছে।

মেদেইরোস ও পোল্ক জানিয়েছেন, এই সপ্তাহের শুরু পর্যন্ত চীন যুক্তরাষ্ট্রের মোট ৩৮টি কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। তারা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের প্রতিযোগিতা আরও বাড়ার ফলে আরও অনেক কোম্পানি এই তালিকায় যুক্ত হতে পারে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads