আমেরিকার ৪৭-তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। তার শপথ অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতাকে।
২০ জানুয়ারি সোমবার বিশাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন তিনি। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে থাকছেন খোদ জো বাইডেন। অবশ্য এনিয়ে মাঝে অপপ্রচার ছড়িয়েছিল ‘বাইডেন থাকছেন না’, যদিও রিপাবলিকানদের এমন দাবি উড়িয়ে দিয়ে বাইডেন নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে তিনি অবশ্যই উপস্থিত থাকবেন।
উপস্থিতির মধ্যে থাকতে পারেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ট্রাম্প নিজে তাকে আসার অনুরোধ করেছেন। তবে শি নিজে না এসে তার একটি প্রতিনিধি দলকে পাঠাতে পারেন অনুষ্ঠানে।
এছাড়া আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জেভিয়ার মিলেই থাকবেন। আমন্ত্রণ করা হয়েছে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিকে। আমন্ত্রণ পেয়েছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এই বিশাল আয়োজনের জন্য অঢেল অর্থ ব্যয় করা হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ট্রাম্প নিজেই তার আসন্ন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য ১৭ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছেন। দেশের বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি, বৃহৎ ব্যবসায়ীরা উৎসবের খরচ বাবদ মোটা অঙ্কের চেক দিয়েছেন ট্রাম্পকে।
সব মিলিয়ে আগামী ২০ জানুয়ারি জুনিয়র মার্টিন লুথার কিং দিবসের ছুটির দিনে শপথ নিতে চলেছেন ট্রাম্প।
আমেরিকায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয় প্রতি চার বছর অন্তর ২০ জানুয়ারি অথবা রোববার পড়লে ২১ জানুয়ারি। এবার ২০ জানুয়ারি পড়েছে সোমবার। এইদিন আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি-র ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে মূল অনুষ্ঠান হবে।
বাংলাদেশ সময় রাত ১১ থেকে সাড়ে ১১টার সময় মার্কিন টিভি চ্যানেলগুলোতে সরাসরি দেখা যাবে অনুষ্ঠান। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস।
প্রেসিডেন্টের আগে শপথ নেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। এবার ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন জেডি ভ্যান্স। দিনের শুরুতে একটি শোভাযাত্রা করে সবাই ইউএস ক্যাপিটলে ঢুকবেন। সেই মিছিলে থাকেন বিদায়ী প্রেসিডেন্টসহ তার মন্ত্রিপরিষদ এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও তার হবু মন্ত্রীরা।
ডানহাত উঁচু করে বাম হাত বাইবেলের উপর রেখে শপথ নেন প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ভাবী মন্ত্রীরা। সাধারণত প্রেসিডেন্টের স্ত্রী বাইবেলটি ধরে রাখেন। এরপর নতুন প্রেসিডেন্ট একটি ভাষণ দেন। এরপর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি আনুষ্ঠানিকভাবে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন।
১৯৭৭ সাল থেকে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের সম্মানে হেলিকপ্টারে স্ত্রীকে নিয়ে ঠিকানা বদল করেন তারা।
এরপর নতুন প্রেসিডেন্ট ওভাল অফিসে নিজের কক্ষে গিয়ে বসেন এবং কাগজপত্রে আনুষ্ঠানিকভাবে সই করে দায়িত্বভার নেন। এরপর ভাইস প্রেসিডেন্টসহ অন্য অতিথির সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট। সাধারণত এই ভোজে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের নিজস্ব প্রাদেশিক রান্না হয়ে থাকে।
খাওয়াদাওয়া শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইস্টফ্রন্ট স্টেপে গিয়ে সেনাদলের সঙ্গে মিলিত হবেন এবং তারপরেই পেনসিলভ্যানিয়া অ্যাভিনিউ থেকে হোয়াইট হাউস পর্যন্ত একটি প্যারেডে অংশ নেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে।