দিল্লিতে ‘কূটনৈতিক চিঠি’ পাঠানোর পর এই মুহূর্তে কিছুটা ‘ধীরে চলো’ নীতিতে এগোতে চায় বাংলাদেশ। ভারতের পক্ষ থেকে জবাব পাওয়ার পরই হাসিনার প্রত্যর্পণের প্রসঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে ইউনূসের প্রশাসন।
ওদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠির কোনো ‘আইনি বৈধতা’ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে চাইছে দিল্লি।
দুইয়ে মিলিয়ে এক্ষেত্রে ‘খানিকটা সময় লাগবে’ তা মুখে না বললেও আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুহাম্মদ রফিকুল আলম।
কারণ হিসেবে যে বিষয়টি সামনে আসছে তা হলো- দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্দিবিনিময় চুক্তিতে নেই কোনও সময়ের সীমা।
দৈনিক প্রথম আলো এক প্রতিবেদনে রফিকুল আলমকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, দেশটি অপেক্ষা করতে চায়, কারণ বিষয়টি দুই দেশের কূটনৈতিক বিষয়।
অবশ্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পাঠানো কূটনৈতিক বার্তার ‘আইনি বৈধতা’ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতের বাংলা দৈনিক, আনন্দবাজার।
পত্রিকাটি লিখেছে, কোনও অন্তর্বর্তী সরকার অন্য রাষ্ট্রের নির্বাচিত সরকারের কাছে কোনও রাজনৈতিক নেতার প্রত্যর্পণ চাইলে, তার সমস্ত আইনি দিকগুলি খতিয়ে দেখতে চায় ভারত। এক্ষেত্রে দিল্লি কোনোরকম তাড়াহুড়া করতে চায় না।
এর আগে অক্টোবরের শেষের দিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ফিনান্সিয়াল টাইমস’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও ইউনূস তার অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থানের কথা জানিয়েছিলেন।
তার ভাষ্য ছিল, এখনই হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর কোনও ভাবনা তাদের নেই।
ইউনূস বলেছিলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। আদালতের রায় ঘোষণা হলে আমরা ভারতের সঙ্গে অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে তাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করব।”
বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগের সরকারের। সেই দিনই বাংলাদেশ ছাড়েন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাময়িক ভাবে আশ্রয় নেন ভারতে।
হাসিনার দেশত্যাগের পর তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত দুইশ’র বেশি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৮টি ক্ষেত্রে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল।