প্রচারণার পুরো সময় জুড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথম দিনের কাজের নানা ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জয় পেয়েছেন। ২০ জানুয়ারি তার জন্য খুলছে হোয়াইট হাউসের দড়জা। প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, প্রতিশ্রুত কাজগুলো তিনি কি প্রথম দিনে সারবেন, নাকি অপেক্ষা করবেন?
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের হিসেব অনুযায়ী, রিপাবলিকান শিবিরের খলিফা ট্রাম্পের প্রথম দিনের কাজের ফর্দে ৪১টি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অপেক্ষমান।
এর মধ্যে রয়েছে অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়নে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা, প্রায় ৫০ হাজার ফেডারেল কর্মচারীদের চাকরির নিরাপত্তা প্রত্যাহার এবং স্কুলে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ শিক্ষার্থীদের জন্য সুরক্ষা ফিরিয়ে আনা।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল, জন্মগত নাগরিকত্ব আইন বাতিল, জ্বালানি ও খনিজ আহরণ সংক্রান্ত বাইডেন প্রশাসনের নীতি প্রত্যাহার এবং ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের পক্ষে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
এরই মধ্যে গেল মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আপনি যখন দেখবেন কী ঘটতে যাচ্ছে তখন আপনার মাথা ঘুরবে।”
বিজনেস ইনসাইডারে ব্রায়ান মেটজগার এবং ব্রেন্ট ডি গ্রিফিথস মত দিয়েছেন, কোনো কোনো ‘একদিনের’ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন প্রায় অসম্ভব। বিশেষ করে মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলায় তার পরিকল্পনা এবং ‘টিপস’ ও ‘ওভারটাইমের’ উপর কর রেয়াতের প্রতিশ্রুতি।
তবে কিছু কিছু স্বাক্ষর প্রদানের মতো প্রতিশ্রুতি নির্বাহী আদেশে হয়তো আলোর মুখ দেখবে।
দ্য নিউ রিপাবলিকের ফেদেরিকো ফিনচেলস্টেইন এবং ইমানুয়েল গুয়েরিসোলি বলেছেন, প্রেসিডেন্টের বিরোধী পক্ষকে লক্ষ্যবস্তু করতে বিচার বিভাগকে নির্দেশ দেওয়াসহ ‘একনায়কত্বমূলক উদ্দেশ্যে তার ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন’।
যাই হোক, “এমনকি ক্ষমতাধর ব্যক্তিও এক পর্যায়ে আবিষ্কার করতে পারে তারও সীমাবদ্ধতা রয়েছে,” লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসে ডয়েল ম্যাকম্যানাস এমনটি বলেছেন।
তবে তারপর?
এমনটি হলে বিরোধী পক্ষ থেমে থাকবে বিষয়টি তেমন নয়। নিঃসন্দেহে ট্রাম্পের প্রথম দিনের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবে, যেমনটি হয়েছিল ২০১৭ সালে।
সেসময় ট্রাম্পের অনেক আদেশকে “দ্রুত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল, বিচারকদের দ্বারা কয়েক মাস বা এমনকি বছর ধরে আটকে রাখা হয়,” নিউ ইয়র্ক টাইমসে বলেছেন থিওডোর শ্লেফার।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ১৬০টি ‘মাল্টিস্টেট লিগ্যাল ফাইলিংয়ের’ মুখোমুখি হয়ে ৯৪টিতে উতরে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম এবং ইলিনয় গভর্নর জেবি প্রিটজকারের মতো ডেমোক্রেট নেতারা ইতোমধ্যে তাদের সমর্থনপুষ্ট রাজ্যগুলোতে ট্রাম্পের এজেন্ডার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷
নিউজম ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যকে ‘ট্রাম্প-প্রুফ’ করার জন্য রাজ্য আইনসভার একটি বিশেষ অধিবেশনও ডেকেছে।
দ্য উইক অবলম্বনে