কিরিলভকে কেন হত্যা করল ইউক্রেন?

ইগর কিরিলভ
ইগর কিরিলভ

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন শীর্ষস্থানীয় রুশ সামরিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কিরিলভ ও তার এক সহযোগী।

ইতোমধ্যে মঙ্গলবারের ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইউক্রেন।

তারা দাবি করেছে, এর পেছনে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা সিকিউরিটি সার্ভিস অব ইউক্রেনের (এসইউবি) হাত রয়েছে।

কিয়েভের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়ায় তিনি ছিলেন তাদের ‘লক্ষ্যবস্তু’।

কিরিলভ ছিলেন রাশিয়ার ‘নিউক্লিয়ার, বায়োলজিক্যাল অ্যান্ড কেমিক্যাল প্রোটেকশন ট্রুপস’ বাহিনীর প্রধান।

এক সহযোগীকে নিয়ে একটি আবাসিক ভবনে প্রবেশ করার সময় বিস্ফোরণে নিহত হন তিনি।

রুশ তদন্ত দলের দাবি, ঘটনাস্থলে একটি স্কুটারে লুকিয়ে রাখা বোমায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কিরিলভ ও তার এক সহযোগীকে হত্যা করা হয়।

অবশ্য কিরিলভ ও তার সহযোগীকে হত্যার জন্য কারা দায়ী, তা এখনো স্পষ্ট করেনি ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি। এ ঘটনা খতিয়ে দেখছে বলে তারা জানিয়েছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম তাসের খবরে বলা হয়েছে, ২০১০ সালে মস্কোর মেট্রোতে আত্মঘাতী বোমা হামলায় যে পরিমাণ বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল, সম পরিমাণ বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে মঙ্গলবারের হামলায়। ২০১০ সালের ওই ঘটনায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছিলেন।  

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কিরিলোভ (৫৪), ২০১৭ সাল থেকে রুশ সামরিক বাহিনীর রেডিওলজিক্যাল, রাসায়নিক এবং জৈবিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান ছিলেন।

তবে ইউনিটটি রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের তদারকি করে না।

ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্রের কথিত ব্যবহারের জন্য যুক্তরাজ্য তাকে এবং তার ইউনিটকে গেল অক্টোবরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধাপরাধ’ করার অভিযোগে একদিন আগেই তাকে অভিযুক্ত করেছিল ইউক্রেন, যার এক দিনের মাথায় করা হলো তাকে।

তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন।

কিরিলভের মৃত্যুর পর তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয় রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, রাশিয়ার জন্য ‘নির্ভীকভাবে’ কাজ করে গেছেন কিরিলভ। তিনি কখনো ‘আড়ালে লুকিয়ে’ থাকেননি।

রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের প্রতিরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান আন্দ্রেই কারতাপোলভ তাকে একজন ‘সম্মানিত রুশ জেনারেল’ বলে অভিহিত করেছেন।

কিরিলভ তার জীবদ্দশায় বিভিন্ন সময়ে দাবি করেছিলেন, ইউক্রেনসহ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে জৈব অস্ত্রের গবেষণাগার স্থাপন করছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিস্ফোরণের ঘটনার পর অনেক রুশ কর্মকর্তা সেই অভিযোগের বিষয়টি সামনে আনছেন।

আরও পড়ুন