সমালোচনার মুখে বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার পর নিজের ফেইসবুকের ভেরিফাইড একাউন্ট থেকে দেওয়া পোস্টে বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চান তিনি।
লাইসেন্সটি ব্যবহার করে কাজের জন্য কোনো প্রকার আবেদন করা হয়নি এবং ইতোমধ্যে তা বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা।
এর আগে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের এক ফেইসবুক পোস্টের পর উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা ঠিকাদারি লাইসেন্সের বিষয়টি সামনে আসে।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
এর পরই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেন আসিফ মাহমুদ। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফেইসবুকে দেওয়া পোস্টে প্রথমেই তিনি তার বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চান।
সেটি হুবুহু তুলে ধরা হলো:

“প্রথমেই আমার বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
গতকাল রাত ৯ টার দিকে একজন সাংবাদিক কল দিয়ে আমার বাবার নামে ইস্যুকৃত ঠিকাদারি লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলেন। বাবার সাথে কথা বলে নিশ্চিত হলাম তিনি জেলা পর্যায়ের (জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার এর কার্যালয় থেকে ইস্যুকৃত) একটি লাইসেন্স করেছেন। বিষয়টি উক্ত সাংবাদিককে নিশ্চিত করলাম। তিনি পোস্ট করলেন, নিউজও হলো গণমাধ্যমে। নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে তাই ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজনবোধ করলাম।
আমার বাবা একজন স্কুল শিক্ষক। আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুঁইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার সুবিধার্থে বাবার পরিচয় ব্যবহার করার জন্য বাবাকে লাইসেন্স করার পরামর্শ দেন। বাবাও তার কথায় জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার থেকে একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স করেন। রাষ্ট্রের যেকোন ব্যক্তি ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে যেকোন লাইসেন্স করতেই পারে। তবে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় বাবার ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়ানো স্পষ্টভাবেই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। বিষয়টি বোঝানোর পর আজ বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে লাইসেন্সটি বাতিল করা হয়েছে।
বাবা হয়তো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের বিষয়টি বুঝতে পারেন নি, সেজন্য বাবার পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
উল্লেখ্য, মধ্যবর্তী সময়ে উক্ত লাইসেন্স ব্যবহার করে কোনো কাজের জন্য আবেদন করা হয়নি।”
উপদেষ্টার বাবার লাইসেন্স করা, পরে তা বাতিল করার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা চলছে।
এব্যাপারে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট আরিফ জেবতিক বলেছেন, “অন্য কিছু সমন্বয়কের বাবাদের কাছ থেকে উনার শেখা উচিত ছিল কীভাবে ‘কাজকর্ম’ করতে হয়। নিজের নামে লাইসেন্স করা লাগে না, বরং তদবিবাজি করে বেশি কামাতে পারবে। ভদ্রলোক মনে হচ্ছে হাওভাও বেশি বুঝছেন না।”
এর আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ উঠে। বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অর্থের বিনিময়ে পুনর্বাসনে সহায়তা করার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ পায়।
ব্যাপক সমালোচার মুখে সচিব (এপিএস) মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।