বিশ্বে কেন কদর হারাচ্ছে এমবিএ?

MBA_Crisis

কয়েক দশক ধরেই বহু মানুষের কাছে এমবিএ (মাস্টার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) ছিল উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতীক। ক্যারিয়ারে দ্রুত উন্নতি ও উচ্চ বেতনের প্রতিশ্রুতি পূরণের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল এই ডিগ্রি। এমবিএ ছিল কর্পোরেট জগতে শীর্ষস্থান পাওয়ার পাসপোর্ট ও দক্ষতার অন্যতম স্মারক।

কিন্তু আজ এমবিএ সঙ্কটময় অবস্থায়। বাড়তি টিউশন ফি, নিয়োগকর্তাদের পরিবর্তিত অগ্রাধিকার এবং নতুন শিক্ষা পদ্ধতির উত্থান এমবিএর গুরুত্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই প্রোগ্রামে ভর্তির সংখ্যা ক্রমশ কমছে। ফলে অনেক বিজনেস স্কুল এই ডিগ্রির প্রাসঙ্গিকতা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

বর্তমানে সার্টিফিকেটের চেয়েও দক্ষতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ব্যয় ও সচেতনতা বিবেচনায় শিক্ষার্থীরা চায় বাস্তবমুখী ও সহজলভ্য শিক্ষা। এই পরিস্থিতিতে এমবিএ উচ্চ খরচ ও দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজনীয়তার ন্যায্যতা প্রমাণ করতে হিমশিম খাচ্ছে।

বিজনেস স্কুলগুলো চাপের মুখে তাদের প্রোগ্রাম পুনর্মূল্যায়ন এবং শিক্ষার পরিবর্তিত ধারা ও শিল্পের চাহিদার সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে।

একসময়ের অপ্রতিদ্বন্দ্বী এমবিএ এখন প্রাসঙ্গিকতা ও প্রতিযোগিতার দ্বৈত চ্যালেঞ্জের মুখে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মানে এই নয় যে এমবিএ বিলুপ্তির পথে। বরং ব্যবসায় শিক্ষার একটি সম্পূর্ণ নতুন মডেলের সূচনা হতে যাচ্ছে।

এমবিএর উত্থান

বিশ শতকের দিকে এমবিএ বিশ্বব্যাপী দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এতে ব্যবসায়ের নেতৃত্ব দেওয়ার পদ্ধতি বদলে যায়। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল ও ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে কঠিন তত্ত্বকে আর্থিক, বিপণন এবং কৌশলগত দিক থেকে বাস্তব প্রয়োগের সঙ্গে মিলিয়ে সেরা মানে উন্নীত করেছিল।

১৯৮০ ও ১৯৯০ এর দশকে, এমবিএ ডিগ্রি পাওয়া মানে ছিল বড় অফিসে কাজ ও অনেক বেশি বেতন। যারা এমবিএ পাস করতেন, তাদের বেতন প্রায়ই ৫০ শতাংশ বা তারও বেশি বেড়ে যেত। ১৯৭০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এমবিএ ডিগ্রির সংখ্যা চারগুণ বেড়ে দেড় লাখের বেশি হয়ে যায়।

যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে ২০ শতকের শেষে এমবিএ ডিগ্রি অনেক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৬০ এর দশকে যুক্তরাজ্যে লন্ডন বিজনেস স্কুল ও ম্যানচেস্টার বিজনেস স্কুলের মতো বড় বিজনেস স্কুলগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়। এগুলো এমবিএ কার্যক্রম শুরুর ভিত্তি তৈরি করে। ২০০০ সালে যুক্তরাজ্যে প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার এমবিএ ডিগ্রি দেওয়া হত। এই সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি ছিল।

ইউরোপে এমবিএ প্রোগ্রাম শুরু হয় ১৯৬৪ সালে স্পেনের আইইএসই বিজনেস স্কুলের মাধ্যমে। এটি হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের সঙ্গে মিলে ইউরোপে প্রথম দুই বছরের এমবিএ প্রোগ্রাম চালু করে। ২০ শতকের শেষের দিকে, ইউরোপ এমবিএ শিক্ষা দেওয়ার পীঠস্থান হয়ে ওঠে। সেখানকার বিভিন্ন স্কুল এমবিএ প্রোগ্রাম চালু করে। এতে অনেক শিক্ষার্থীর চাহিদা পূরণ হয়।

ওই সময়ে আফ্রিকায় এমবিএ প্রোগ্রাম তুলনামূলকভাবে কম ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা ও নাইজেরিয়া মতো কিছু দেশে ২০ শতকের শেষ দিকে এমবিএ ডিগ্রি দেওয়া শুরু হলেও, আফ্রিকার অন্য দেশে এমবিএ গ্র্যাজুয়েটদের সংখ্যা যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের চেয়ে কম ছিল।

আফ্রিকায় এমবিএ প্রোগ্রাম গড়ে তোলায় কিছু সমস্যা ছিল, যেমন সীমিত সম্পদ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ের প্রয়োজন অনুযায়ী পাঠ্যক্রম পরিবর্তন। ১৯৭০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে এমবিএ শিক্ষার প্রচুর বিস্তার হলেও, আফ্রিকা ওই শতকের শেষে এই ক্ষেত্রটিতে প্রবেশ করে।

এমবিএর বাড়বাড়ন্তের সময়টি পৃথিবীজুড়ে ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে মিলে যায়। তখন বড় কোম্পানিগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে কাজ করার জন্য দক্ষ ব্যবস্থাপক খুঁজছিল। এমবিএ ডিগ্রি সম্মান ও ক্ষমতার চিহ্ন হয়ে ওঠে এবং বিশ্বের নানা দেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীরা এর পেছনে ছুটছিল।

বিজনেস স্কুলগুলো এই চাহিদা মেটাতে নতুন প্রোগ্রাম ও ক্যাম্পাস শুরু করে। অনেকের জন্য এমবিএ শুধুমাত্র একটি ডিগ্রি নয়, এটি বড় অফিসে কাজ পাওয়ার সুযোগ, ভালো নেতা হওয়ার উপায় এবং দ্রুত বেড়ে চলা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সফল হওয়ার একটি পথ ছিল।

পড়তির দিকে যেভাবে

ঐতিহাসিকভাবে সফল হলেও, এমবিএ এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। গত পাঁচ বছরে পূর্ণকালীন এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। এর কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকরা।

প্রথমত, এমবিএ ডিগ্রির খরচ খুব বেশি। এর পরিমান ৩০ থেকে ৭০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে। আর এই পরিমান অর্থ অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে সহজে বহন করা সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত, চাকরির বাজার এখন অনেক প্রতিযোগিতাপূর্ণ। তাই এই পরিমান খরচ করে কতটুকু লাভবান হওয়া যাবে, সে ব্যাপারে অনেকেই সন্দিহান। এছাড়া এখনকার চাকরির জন্য নিয়োগকর্তারা প্রযুক্তিগত দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণ এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজ করার সক্ষমতাকে বেশি মূল্য দিচ্ছেন, যেগুলো এমবিএ ডিগ্রির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এমবিএ পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আসছে খুব ধীরে। এটি এখনও আধুনিক কর্মস্থলের সমস্যাগুলো যেমন ডিজিটাল পরিবর্তন, পরিবেশবান্ধব কাজ ও সামাজিক দায়িত্বের সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পারছে না। এখন শিক্ষার নতুন উপায় এসেছে যা এমবিএ প্রোগ্রামকে আরও কঠিন করে তুলছে।

কোর্সেরা, ইডিএক্স ও টুইউ এর মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো এখন অনেক সাশ্রয়ী, নমনীয় ও সহজে বিকল্প দিচ্ছে। যেমন, ওয়েস্টার্ন গভর্নর্স ইউনিভার্সিটি (ডব্লিউজিইউ) দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা দিচ্ছে, যা কম খরচে অনেক মানুষ গ্রহণ করতে পারছে। এই পরিবর্তনগুলো এমবিএ প্রোগ্রামে বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী মডেলটির গুরুত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

একসময় হার্ভার্ড, স্ট্যানফোর্ড বা ওয়ার্থনের মতো নামী প্রতিষ্ঠান থেকে এমবিএ করা মানে ছিল ভালো বেতনে চাকরি পাওয়া। কিন্তু এখন এই ডিগ্রি পাওয়ার পরও চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। বর্তমানে চাকরির বাজার অনেকটাই অনিশ্চিত এবং এমনকি জনপ্রিয় ডিগ্রিও এখন চ্যালেঞ্জের মুখে।

এই শীর্ষস্থানীয় প্রোগ্রামগুলো থেকে সম্প্রতি স্নাতক করা অনেক শিক্ষার্থী চাকরি পেতে সংগ্রাম করছেন। আর এটি বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কঠোর চিত্র তুলে ধরছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের (এইচবিএস) এমবিএ গ্র্যাজুয়েটদের ২৩ শতাংশ পাস করার তিন মাস পরেও চাকরি পাননি। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ২০ শতাংশ, ২০২২ সালে ছিল ১০ শতাংশ।

হার্ভার্ডের ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টেন ফিটজপ্যাট্রিক বলেন, “আমরা চাকরির বাজারের সমস্যাগুলো থেকে আলাদা নই। হার্ভার্ডে পড়া এখন আর গুরুত্বপূর্ণ নয়। আপনার দক্ষতা থাকতে হবে।”

এমবিএ গ্র্যাজুয়েটরা আগে প্রযুক্তি ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোতে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে ছিল। কিন্তু এখন আমাজন, মাইক্রোসফট, গুগলসহ বড় কোম্পানিগুলো এমবিএ নিয়োগ কমিয়েছে। ম্যাককিনজির মতো পরামর্শক প্রতিষ্ঠানও তাদের এমবিএ নিয়োগ হ্রাস করেছে।

ম্যাককিনজি ২০২৪ সালে শিকাগো ইউনিভার্সিটির বুথ স্কুল থেকে মাত্র ৩৩ জন এমবিএ নিয়োগ করেছে। এর আগের বছরে এই সংখ্যা ছিল ৭১। ইউভিএ ডারডেনের ক্যারিয়ার সেন্টারের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী জেনি জেনার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেছেন, “কোম্পানিগুলো আমাদের জানিয়েছে, তারা আর ক্যাম্পাসে আসবে না।”

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অটোমেশন বাড়ানোর ফলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। অনেক জায়গায় চাকরি কমছে। এখন নিয়োগকর্তারা নতুন শিক্ষা পদ্ধতিগুলো, যেমন কোডিং কোর্স এবং বিশেষ সার্টিফিকেটকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কারণ এগুলো বর্তমান চাকরির বাজারের চাহিদার সঙ্গে যায়।

ব্যবসায় শিক্ষায় উদীয়মান প্রবণতা

ঐতিহ্যবাহী এমবিএ প্রোগ্রামের প্রাসঙ্গিকতা কমতে থাকায় বিজনেস স্কুলগুলো পরিবর্তিত চাহিদা মেটাতে এবং তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে অভিযোজিত হচ্ছে। অনলাইন এমবিএ প্রোগ্রামগুলো ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, যেমন ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়েসের গিস কলেজ অফ বিজনেস এবং বস্টন ইউনিভার্সিটি তাদের অনলাইন প্রোগ্রামে ভর্তি বাড়ছে। এসব প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক নমনীয় ও সাশ্রয়ী। পাশাপাশি উচ্চ মানের শিক্ষার নিশ্চয়তাও দেয়।

আরেকটি নতুন প্রবণতা হলো মাইক্রোক্রেডেনশিয়ালস এবং বিশেষায়িত ডিগ্রির উত্থান। এই ছোট লক্ষ্যভিত্তিক শিক্ষামূলক প্রোগ্রামগুলো মূলত পেশাদারদের জন্য, যারা নির্দিষ্ট দক্ষতা অর্জন করতে চান, তবে পুরো ডিগ্রি নিতে চান না। এসব প্রোগ্রাম বিশেষ করে ব্যস্ত নির্বাহীদের কাছে আকর্ষণীয় এবং চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এছাড়াও বিজনেস স্কুলগুলো ডেটা অ্যানালিটিক্স, উদ্যোক্তা ও টেকসই বিশেষায়িত মাস্টার্স ডিগ্রি প্রোগ্রাম চালু করছে। আর এগুলো নির্দিষ্ট বাজারের চাহিদা পূরণ করছে।

এখন এমবিএ শিক্ষায় বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং শিল্পভিত্তিক দক্ষতা শেখার গুরুত্ব বাড়ছে। নিয়োগকর্তারা এমবিএ পাঠ্যক্রমের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখছেন। স্কুলগুলো এখন ইন্টার্নশিপ, প্রকল্প এবং বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানের সুযোগ দেয়, যাতে শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে। শিল্প নেতাদের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে পাঠ্যক্রমটি নিয়োগকর্তাদের চাহিদার সঙ্গে মানানসই হয়।

ডব্লিউজিইউ’র মতো স্কুলগুলো এরই মধ্যে প্রমাণ করেছে যে, দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা মডেলগুলো বড় আকারে সফলভাবে চলতে ও মান বজায় রাখতে পারে। এই পদ্ধতিগুলো প্রথমবারের মতো কম আয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চমানের ব্যবসায় শিক্ষা সহজে পাওয়ার পথ উন্মুক্ত করেছে।

এমবিএ প্রোগ্রামে এখন পরিবেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসাগুলো তাদের কাজের প্রভাব নিয়ে আরও বেশি চিন্তা করছে। তাই এই প্রোগ্রামে সামাজিক দায়িত্ব, নৈতিক নেতৃত্ব ও টেকসই সম্পর্কিত বিষয়গুলো যুক্ত হচ্ছে। এই পরিবর্তন বলছে, শিক্ষার্থী এবং চাকরিদাতাদের অগ্রাধিকার বদলেছে, যাতে গ্র্যাজুয়েটরা আধুনিক ব্যবসায়ের সমস্যা মোকাবেলা করতে প্রস্তুত থাকে।

এমবিএর ভবিষ্যৎ

ঐতিহ্যবাহী এমবিএ ডিগ্রি শেষ হয়ে যাবে, ব্যাপারটা এমন নয়। তবে এটি দ্রুত পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে অনেক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। অনলাইন শিক্ষা, মাইক্রোক্রেডেনশিয়ালস এবং শিল্পভিত্তিক শিক্ষা মডেলগুলো আরও সহজ, সাশ্রয়ী ও বাস্তব জীবনের জন্য উপযুক্ত ব্যবসায় শিক্ষা পদ্ধতির দিকে সরে যাচ্ছে। যারা এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে না, তারা পুরোনো হয়ে যাবে বা বন্ধ হয়ে যাবে।

ব্যবসায় শিক্ষার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এমন প্রোগ্রাম তৈরি করার ওপর, যা শিক্ষার্থীদের জন্য সহজলভ্য, দক্ষতাভিত্তিক এবং বর্তমান শিল্প চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে। যাতে তারা ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে সফল হতে পারে। নতুন উদ্ভাবন গ্রহণ এবং পুরোনো পদ্ধতিগুলো নতুন করে ভাবতে পারলে, বিজনেস স্কুলগুলো ভবিষ্যত নেতৃত্ব তৈরি করতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহ্যামের সহযোগী অধ্যাপক স্যামুয়েল আডোমাকো মনে করেন, বিজনেস স্কুলগুলোকে তাদের অনলাইন ও হাইব্রিড প্রোগ্রাম বাড়াতে হবে। এতে শিক্ষার্থীরা চাকরি ও ব্যক্তিগত জীবন সামলে শিক্ষা নিতে পারে। এই নমনীয় পদ্ধতিগুলো খরচ কমায় এবং বেশি মানুষকে শিক্ষার সুযোগ করে দেয়, বিশেষ করে যারা চাকরি করে। স্কুলগুলোকে ছোট কোর্স এবং বিশেষ ডিগ্রি যেমন ডেটা অ্যানালিটিক্স, ডিজিটাল রুপান্তর ও টেকসই প্রোগ্রাম করতে হবে। এগুলো বিশেষ দক্ষতা শেখাতে সাহায্য করবে এবং তা কাজের বাজারের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এছাড়া ইন্টার্নশিপ, প্রকল্প ও মেন্টরশিপের মতো অভিজ্ঞতাভিত্তিক প্রোগ্রাম গ্র্যাজুয়েটদের বাস্তব জীবনে কাজ করতে প্রস্তুত করবে।

কম খরচে মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু মডেল সফল হয়েছে, যেমন ওয়েস্টার্ন গভর্নর্স ইউনিভার্সিটি। এমন মডেলগুলো দেখিয়েছে যে, ভালো শিক্ষা বড় পরিসরে ও কম খরচে দেওয়া সম্ভব। বিজনেস স্কুলগুলো কম খরচে শিক্ষা দিতে পারে। শিক্ষার্থীরা যেন বিভিন্ন আর্থিক অবস্থান থেকে শিক্ষা নিতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে টেকসই বাস্তবতা, সামাজিক দায়িত্ব ও নৈতিক নেতৃত্বের গুরুত্ব আরও বাড়াতে হবে। এতে শিক্ষার্থীরা এমন পৃথিবীতে ব্যবসা চালাতে পারে, যেখানে এর সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে সবাই সচেতন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads