বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও বেসরকারি স্যাটেলাইট কোম্পানি স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ককে সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে মাস্কের মালিকানাধীন স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংককে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দক্ষতা বাড়ানো বিষয়ক দপ্তরের দায়িত্ব পাওয়া ইলন মাস্কের স্টারলিংককে বাংলাদেশে কেন ব্যবসা করার প্রস্তাব দেওয়া হলো, সে বিষয়ে মঙ্গলবার ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেট শাটডাউন চিরতরে বন্ধ করার লক্ষ্যেই স্টারলিংকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ফেইসবুক পোস্টে প্রেস সচিব লিখেছেন, “স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার ১৬ বছরের শাসনকালে অনেকবার ইন্টারনেট বন্ধ করেছে। বিক্ষোভ দমন করতে বা বিরোধী কোনো বড় আন্দোলন দমন করার ক্ষেত্রে স্বৈরশাসক ও একনায়কদের প্রিয় একটি হাতিয়ার হচ্ছে ইন্টারনেট শাটডাউন। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় লাখো ফ্রিল্যান্সার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। কেউ কেউ তাদের চুক্তি এবং চাকরি চিরতরে হারান।”
শফিকুল আলম আরও লিখেছেন, “বাংলাদেশের বাজারে স্টারলিংকের আগমনের অর্থ হলো, ভবিষ্যতে কোনো সরকারই ইন্টারনেট সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে পারবে না। ইন্টারনেট বন্ধ করার নতুন কোনো চেষ্টায় নিদেনপক্ষে বিপিও প্রতিষ্ঠান, কল সেন্টার ও ফ্রিল্যান্সাররা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।”
এর আগে ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ এবং দেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট সেবা চালুর প্রস্তাব দিয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি চিঠি দেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, তার (ইলন মাস্ক) বাংলাদেশ সফর দেশের তরুণ-তরুণীদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেবে, যারা এই অগ্রণী প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান সুবিধাভোগী হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশের অবকাঠামোর সঙ্গে স্টারলিংকের সংযোগ যুক্ত করা হলে বিশেষ করে দেশের উদ্যমী যুবসমাজ, গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত নারী এবং প্রত্যন্ত ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য তা বৈপ্লবিক পরিবর্তন বয়ে আনবে।”
এর আগ গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইলন মাস্কের সঙ্গে মুহাম্মদ ইউনূসের ফোনালাপ হয়। সেসময় ভবিষ্যৎ সহযোগিতার সম্ভাবনা এবং বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর অগ্রগতি নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয় বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
