অযোধ্যা রাম মন্দিরের পুরোহিতকে কেন নদীতে সমাহিত করা হলো?

অযোধ্যা রাম মন্দিরের প্রয়াত প্রধান পুরোহিত।
অযোধ্যা রাম মন্দিরের প্রয়াত প্রধান পুরোহিত।

প্রচলিত হিন্দু রীতি মেনে পঞ্চভূতে বিলীন হওয়ার জন্য মৃতদেহ আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়। আবার সাধু-সন্যাসীদের মাটিতে সমাধি বা কবর দেওয়া হয়।

কিন্তু ভারতের অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রধান পুরোহিত মহন্ত সত্যেন্দ্র দাসের মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে কিংবা মাটিতে সমাধি দেয়া হয়নি। মৃতের শরীরে পাথর-বালির বস্তা বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এনিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

বুধবার ভারতের লক্ষ্ণৌ’র পিজিআই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮৫ বছর বয়সে মারা যান মহন্ত সত্যেন্দ্র দাস।

১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ১৯৯৩ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ছিলেন তিনি। যখন রাম মন্দির নির্মাণ কাজ চলছিল তখনও মহন্ত সত্যেন্দ্র দাস ছিলেন নিত্যপুজোর দায়িত্বে।

নরেন্দ্র মোদী সরকার গঠিত অযোধ্যা রামমন্দির ট্রাস্ট্রের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ২০২৪ সালে রাম মন্দিরে রামের নতুন মূর্তির অভিষেক হয় তখনও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

শুক্রবার অযোধ্যার প্রধান পুরোহিত সমাধি দেওয়া হয়। সেটি দেওয়া হয় পানিতে।

ভিডিওতে দেখা গেছে, ধর্মীয় উপাচারের পর তার মৃতদেহ নৌকা করে নদীর মাঝখানে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর সবাই মিলে ঠেলে সেই মৃতদেহ পানিতে ফেলে দেন।

দেহ ডুবিয়ে দেওয়ার আগে শরীরে বেঁধে দেওয়া হয় ভারী পাথর বা বালির বস্তা। যাতে একেবারে সলিল সমাধি ঘটে দেহর, যাতে কোথাও ভেসে না ওঠে।

শায়িত অবস্থায় ভাসানো হয়নি, মৃতদেহ ছিল সিদ্ধ যোগ মুদ্রায়। অর্থাৎ তিনি যেন ধ্যানমগ্ন, সেই ভাবেই মৃতদেহ পানিতে দেওয়া হয়।

এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। এমন শেষকৃত্য দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন। প্রবীণ পুরোহিতের দেহ যে ভাবে ভারী বস্তুতে বেঁধে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে তা ‘অবমাননা’ কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

তবে ভারতের অযোধ্যার সাধু-সন্যাসী অনেকে বলছেন, এই ‘জলসামাধি’ প্রথা বহু প্রাচীন, যদিও বিরল। তাদের বিশ্বাস, ‘জলসমাধির’ মাধ্যমে আত্মা দ্রুত মোক্ষ লাভ করে অর্থাৎ ঈশ্বরের কাছে চলে যায়।

হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস, ত্রেতা যুগে শ্রী রামচন্দ্রও নিজে হেঁটে এই সরযূর নদীর পানিতে মিলিয়ে গিয়েছিলেন। সেই থেকেই এই ‘জলসমাধির’ রীতি। এছাড়া মহাভারত এবং পৌরাণিক গ্রন্থেও ঋষি-সন্যাসীদের জলসমাধি দেওয়ার বর্ণনা রয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads