ভারত জানিয়েছে গেল মাসে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জবাবে বুধবার ভোরে তারা পাকিস্তান এবং পাকিস্তানের কাশ্মীরের নয়টি স্থানে আক্রমণ চালিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান কিছু হতাহতের খবর দিয়েছে এবং বলেছে যে তারা প্রতিশোধে বদ্ধপরিকর।
পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক শত্রুতা সম্পর্কে বিশ্ব নেতারা যা বলেছেন:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
“এটা খুবই দুঃখজনক। এইমাত্র হামলার কথা শুনেছি। আমার মনে হয় অতীতের কিছু ঘটনার উপর ভিত্তি করে মানুষের ধারণা ছিল এরকমটি ঘটতে যাচ্ছে। তারা অনেক দিন ধরেই লড়াই করে আসছে। তারা বহু দশক ধরে লড়াইয়ের মধ্যে আছে। আমি আশা করি এটি খুব দ্রুত শেষ হবে।”
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র
“নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় সামরিক অভিযান নিয়ে মহাসচিব অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তিনি উভয় দেশের সর্বোচ্চ সামরিক সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত বিশ্ব বহন করতে পারবে না।”
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও
“আমি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমি মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলছি যে আশা করি এটি দ্রুত শেষ হবে এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের নেতৃত্ব শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে এগোবে।”
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা
তিনি বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক সংঘাত নিয়ে তার দেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি উভয় পক্ষকে পরিস্থিতির আরও অবনতি রোধ করতে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এই সংঘাত যেন আরও না বাড়ে সেজন্য উভয় দেশকেই সর্বোচ্চ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতা প্রদর্শন করতে হবে। রাশিয়া এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “আমরা ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই আহ্বান জানাই যাতে তারা শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেয়, সংযত থাকে এবং এমন কোনও পদক্ষেপ না নেয় যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।”
ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত রিউভেন আজার
ভারতে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত বলেন, “ইসরায়েল ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে। সন্ত্রাসীদের বুঝতে হবে, নিরীহ মানুষের ওপর নৃশংস অপরাধ করে তারা কোথাও লুকিয়ে থাকতে পারবে না।”
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিবৃতি
সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এক বিবৃতিতে বলেন, “কূটনীতি ও সংলাপই শান্তিপূর্ণভাবে সঙ্কট সমাধানের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এই উপায়েই শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশগুলোর অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব।”
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল
টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা বুঝি, ভারত সন্ত্রাসবাদের অভিশাপ থেকে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করছে। তবে একই সঙ্গে আমরা ভারত ও পাকিস্তান উভয়কে আহ্বান জানাই যেন তারা সংযম প্রদর্শন করে। যাতে উত্তেজনা না বাড়ে এবং অবশ্যই যেন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।”
জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি
তিনি বলেন, “২২ এপ্রিল কাশ্মীরে যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, তার প্রতি আমাদের দেশের অবস্থান স্পষ্ট। আমরা দৃঢ়ভাবে এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের নিন্দা জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি যে, এই পরিস্থিতি পাল্টা হামলার মাধ্যমে আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এবং একটি পূর্ণমাত্রার সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে আমরা ভারত ও পাকিস্তান উভয়কে জোরালোভাবে আহ্বান জানাই, যেন তারা সংযম প্রদর্শন করে এবং সংলাপের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলে।”
তথ্যসূত্র: রয়টার্স