ট্রাম্পের সঙ্গে বাগযুদ্ধে জড়ানো জেলেনস্কিকে বুকে টেনে নিলেন স্টারমার

যুক্তরাজ্য সফরে যাওয়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে বুকে টেনে নেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।
যুক্তরাজ্য সফরে যাওয়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে বুকে টেনে নেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখে পড়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাজ্যে গিয়ে পেয়েছেন উষ্ণ অভ্যর্থনা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার শনিবার ডাউনিং স্ট্রিটে তাকে স্বাগত জানান। এ সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে বুকে টেনে নেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার।

বিবিসি জানায়, যুক্তরাজ্য সফরের আগে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের এক পর্যায়ে দুই প্রেসিডেন্ট জড়িয়ে পড়েন বাগযুদ্ধে। এরপর যুক্তরাজ্য সফরে গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস পেয়েছেন।

স্টারমার জেলেনস্কিকে বলেন, “যুক্তরাজ্যের জনগণ আপনাকে এবং ইউক্রেনকে সমর্থন করে। আমরা যতদিন প্রয়োজন ততদিন আপনাদের পাশে থাকব।”

এই সফরে জেলেনস্কি ও স্টারমার ২.২৬ বিলিয়ন পাউন্ডের (২.৮৪ বিলিয়ন ডলার) একটি ঋণ চুক্তিতে সই করেন, যা ইউক্রেনের জন্য সামরিক সরঞ্জাম কেনার পেছনে ব্যবহৃত হবে। এই অর্থ জব্দ করা রাশিয়ার সম্পদের মুনাফা থেকে পরিশোধ করা হবে। জেলেনস্কি এই উদ্যোগকে “সত্যিকারের ন্যায়বিচার” হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “যে যুদ্ধ শুরু করেছে, তাকেই এর মূল্য দিতে হবে।” এই ঋণের বিষয়টি প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল গত অক্টোবরে।

রবিবার যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে জেলেনস্কির। এ ছাড়া লন্ডনে ইউরোপীয় নেতাদের একটি শীর্ষ সম্মেলনেও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তার। এই সম্মেলনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টা এবং ইউরোপের প্রতিরক্ষা বিষয়ে আলোচনা হবে।

এই সম্মেলনকে সামনে রেখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।

ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে কিয়ার স্টারমার।

এদিকে, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বাগযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, “কঠিন কথোপকথন সত্ত্বেও আমরা কৌশলগত অংশীদার। তবে আমাদের পারস্পরিক লক্ষ্য বোঝার জন্য সৎ হতে হবে।”

এর আগে লন্ডনের স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে পৌঁছে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, “ট্রাম্পের সমর্থন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যুদ্ধ শেষ করতে চান, কিন্তু শান্তির জন্য আমাদের চেয়ে বেশি কেউ আগ্রহী নয়। আমরা এই যুদ্ধের মধ্যে বাস করছি, এটি আমাদের স্বাধীনতা ও অস্তিত্বের লড়াই।”

রবিবারের সম্মেলনে ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ডের নেতারা, ইউরোপীয় কমিশন ও কাউন্সিলের প্রধান এবং ন্যাটোর মহাসচিবের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। ইউরোপের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানো এবং ইউক্রেনের জন্য শান্তি চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতির বিষয়টি আলোচনার শীর্ষে থাকবে।

তবে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনে সরাসরি সামরিক সমর্থন দিতে অনীহা প্রকাশ করে আসছে, যদিও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের প্রস্তাব দিয়েছে।

আরও পড়ুন