মোহাম্মদপুরে যৌথবাহিনীর সঙ্গে ‘গোলাগুলি’তে নিহত ২

অভিযানে পাঁচজনকে আটক করা হয়। ছবি : আইএসপিআর
অভিযানে পাঁচজনকে আটক করা হয়। ছবি : আইএসপিআর

দেশজুড়ে অপারেশন ডেভিল হান্ট চলার মধ্যে ঢাকার মোহাম্মদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে দুইজন নিহতের খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে।

পুলিশ বলছে, বুধবার রাত ১টার মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযান চলাকালে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তাদের গোলাগুলি হয়। এ ঘটনায় দুইজন নিহত হয়। পরে  সেখান থেকে আটক করা হয় পাঁচজনকে।

মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমানের বরাত দিয়ে প্রথম আলো জানিয়েছে, যৌথবাহিনী চাঁদ উদ্যান এলাকায় অভিযানে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় যৌথবাহিনীর সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। এতে জুম্মন ও মিরাজ নামে দুই জন চিহ্নিত সন্ত্রাসী নিহত হয়।

এ ঘটনায় যৌথবাহিনীর দুই সদস্য আহত হয়েছে জানিয়ে হাফিজুরর হমান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।

এদিকে, আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অভিযানে আটককৃতদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি ও একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।

অন্তবর্তী সরকারের সাত মাসে এসে যৌথ বাহিনীর অভিযানকালে ‘গুলিবিনিময়’ এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কথিত ‘গুলিবিনিময়’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাদের। ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র‌্যাব এবং এই বাহিনীর সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই দেশে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনা কমেছিল।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে জনমনে অসন্তোষ রয়েছে। হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাই, হামলা, ধর্ষণের মতো ঘটনায় জেরবার দেশের মানুষ।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি যৌথবাহিনী অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ শুরুর পর শত শত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হলেও পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নিহত জুম্মন ও মিরাজ চাঁদ উদ্যান এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী।

কবজিকাটা আনোয়ার নামে ওই এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারের পর থেকে অপর একটি গ্রুপ মোহাম্মদপুরে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিল বলে জানান মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজ উদ্দিন।

ওই এলাকায়ই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের গোলাগুলি হয়।

বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য বলছে,  আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে এমন ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘ক্রসফায়ারের’ নামে অন্তত ১ হাজার ৯২৬ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন।

তবে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাত বছরে ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২৯৩ জন।

এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত পুলিশ সংস্কার কমিশন কাজ করছে।

পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তারা মানবাধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পুলিশের সংস্কারের কাজ করছেন।

আরও পড়ুন