সদর দরজার চাবি নকল করে ৮০টি ফ্ল্যাট বিক্রি করে ৩০ কোটি টাকার প্রতারণা করেছেন ৩০ বছরের এক নারী। সেই সব সম্পত্তির নকল কাগজ তৈরি করে একের পর এক ফাঁকা ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন চীনের গাসু প্রদেশের বাসিন্দা ওয়াং ওয়েই। এই জালিয়াতি সম্পর্কে বিন্দুমাত্র আভাস পাননি ওই নারীর স্বামী ও পরিবার।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে তার সঙ্গে বিয়ে হয় চেং নামের একজনের। নানা খরচের কারণে দম্পতির ক্রেডিট কার্ডের বিল অতিরিক্ত হয়ে যায়। ক্রেডিট কার্ডের ঋণের বোঝা কমানোর জন্য চেঙের বাবা পৃথক ভাবে ৪.৫ লাখ ইউয়ান ঋণ নিয়েছিলেন। বাড়ির ঋণ পরিশোধের জন্য চেং বেশ কয়েক বছর ধরে মিতব্যয়ী জীবন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু চেংয়ের কোনও ধারণাই ছিল না যে তার স্ত্রী ২০১৯ সাল থেকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই নিখুঁত প্রতারণা জাল বিছিয়েছেন।
ফোটোশপের সাহায্যে ওয়াং সম্পত্তির কাগজপত্র জাল করেছিলেন। তার পর তিনি জাল কাগজপত্র দেখিয়ে ৮০টি ফ্ল্যাটের তালার চাবি পরিবর্তন করেন। এক জন তালার মিস্ত্রি জানিয়েছেন, যখনই ওয়াং তার কাছে আসতেন, তিনি তাকে বাড়ির একটি সিঁড়িতে নিয়ে যেতেন, সিসিটিভির ক্যামেরা এড়িয়ে।
তিনি জানান, ওয়াং তাকে বাড়ির কাগজ দেখিয়ে দাবি করেন সেগুলো তার। তাই ওয়াংকে সন্দেহ করার কোনও কারণ খুঁজে পাননি তিনি। সন্দেহ এড়াতে ওয়াং বেশ কয়েক জন তালা মিস্ত্রিকে নিয়োগ করেছিলেন। এদের প্রত্যেকেই বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাটের তালা পরিবর্তন করেছিলেন।
সমস্ত চাবি পাওয়ার পর, ওয়াং কম দামে সম্পত্তিগুলো বিক্রি করে দেন। ৪২ জন আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুদের কাছে ৬ লাখ ইউয়ানেরও কম মূল্যে ফ্ল্যাট বিক্রি করেন ওই নারী।
সম্প্রতি তার এই জালিয়াতি ধরা পড়ে যায়। ওয়াঙের স্বামী বা তার পরিবার এই পুরো ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। ওয়াঙের কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর দেখা গেছে, তখনও তার স্বামী ঋণ পরিশোধ করে চলেছেন।
ওয়াং তার এই জালিয়াতির জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সম্মুখীন হতে পারেন। এ ছাড়া তার সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে বলে এক আইনজীবী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন।