অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির মামলা বাতিল করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপির বেঞ্চ এই রায় দেন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ড. ইউনূসের আপিল মঞ্জুর করে সর্বোচ্চ আদালত এই আদেশ দিলেন।
রায়ের পর দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান বলেন, “হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে অধ্যাপক ইউনূসসহ অন্যদের করা আপিল মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। অধ্যাপক ইউনূসসহ অন্যদের আবেদন খারিজ করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন, তা বাতিল করা হয়েছে। ফলে অধ্যাপক ইউনূসসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা মামলাটি বাতিল হলো।”
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়। মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তৎকালীন শীর্ষ ছয় কর্মকর্তা গত বছরের ৮ জুলাই আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত ২৪ জুলাই হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে আদেশ দেন। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
অন্য ছয় আবেদনকারী হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক আশরাফুল হাসান, নাজনীন সুলতানা, শাহজাহান, নূরজাহান বেগম (বর্তমানে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা) ও এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এদিকে এরই মধ্যে রাষ্ট্র বা দুদকের পক্ষে পিপি মামলাটি প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন। গত বছরের ১১ আগস্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক।
লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে গত বছরের ২১ অক্টোবর আপিল বিভাগ আদেশ দেন। পাশাপাশি কনসাইজ স্টেটমেন্ট (আপিলের সারসংক্ষেপ) জমা দিতে সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় আপিলের ওপর শুনানি হয়।
আপিলকারীদের আইনজীবীর ভাষ্য, মামলাটি শুনানির জন্য বিচারিক আদালতে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর তারিখ ধার্য থাকা অবস্থায় এর আগেই তাদের (আপিলকারীদের) না জানিয়ে গত বছরের ১১ আগস্ট মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়, যাতে আইনের লঙ্ঘন হয়েছে।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা এই মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আছাদুজ্জামানের আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে গত ২৯ জানুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেয়া হয়।
দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে গত বছরের ৩০ মে মামলাটি করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।