উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে আটকে থাকা দুই উপদেষ্টা প্রায় নয় ঘণ্টা পর বের হতে পেরেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পেছনের ফটক দিয়ে তারা সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন বলে খবর মিলেছে।
সোমবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির একটি ভবনে যুদ্ধবিমান আঘাত হেনে বিধ্বস্ত হলে সেখানে বহু শিক্ষার্থী হতাহত হন। সরকারি হিসেবে এই সংখ্যা ৩১ জন বলা হলেও বেসরকারি হিসেবে তা দেড়শ’র বেশি।
নিহতের প্রকৃত তথ্য আড়াল করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ সোমবারই উঠেছিল। তবে মধ্য রাতে দুর্ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্সের উপস্থিতি, শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে সটকে পড়া- সব মিলিয়ে সন্দেহ আরও ঘণীভূত হয়েছে।
এ নিয়ে মানুষের মধ্যে যেমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তেমনি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরাও। এমন পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রায় ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বিকেল ৭টা ৩৫ মিনিটের দিকে তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
ডিএমপির বিমানবন্দর জোনের পেট্রল ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলাম লিটন জানান, সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটের দিকে মাইলস্টোন স্কুলের পেছনের গেট দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে গাড়িতে তুলে দেন। দুই উপদেষ্টা দিয়াবাড়ি বেড়িবাঁধ সড়ক দিয়ে চলে গেছেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বের হওয়ার পর দিয়াবাড়ি গোলচত্বরে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়েন দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব। পরে সেখান থেকে তাদের গাড়ি ঘুরিয়ে আবার কলেজ ক্যাম্পাসে নেওয়া হয়।
বিকেল সাড়ে তিনটায় গোলচত্বর এলাকায় খবর রটে, ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে থাকা দুই উপদেষ্টা গাড়িতে করে বের হয়ে আসছেন। মুহূর্তের মধ্যে সেখানে আগে থেকে বিক্ষোভরত মাইলস্টোন স্কুলের শতশত শিক্ষার্থী স্কুল সংলগ্ন সড়কটি আটকে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
সেখানে উপস্থিত পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের বাধা দিলে তারা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাড়ে তিনটার কিছু আগে কলেজ থেকে বের হন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। উপদেষ্টাদের গাড়ি দিয়াবাড়ি মোড়ে গেলে বিকেল পৌনে চারটার দিকে বাধা দেন শিক্ষার্থীরা।
পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা দুইবার ধাওয়া দিয়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়। এরপরও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন রাজউক উত্তরা মডেল কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং কিছুসংখ্যক এলাকাবাসীও।
এর আগে বেলা পৌনে ১টার দিকে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।