মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: আওয়ামী লীগ

প্রাণে বেঁচে গেলেও ওই নৃশংস ঘটনায় হতবিহ্বল সেসময়ের বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা।
প্রাণে বেঁচে গেলেও ওই নৃশংস ঘটনায় হতবিহ্বল সেসময়ের বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা।

একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা কেবল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে নয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করাই ছিল এর মূল লক্ষ্য।

বুধবার এক বিবৃতিতে এমন অভিযোগ করেছে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন দল আওয়ামী লীগ, যে দলের কার্যক্রম বর্তমানে নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছে।

গত ১০ মে এক নজিরবিহীন নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২১ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক ভয়াবহ ও কলঙ্কিত দিন। তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামাত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে সংগঠিত ওই হত্যাযজ্ঞের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা।

পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করাও তাদের লক্ষ্য ছিল বলে অভিযোগে করেছে দলটি।

২০০৪ সালের ওই গ্রেনেড হামলায় নারীনেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান, গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে পঙ্গুত্ব বরণ করেন পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী।

আওয়ামী লীগের অভিযোগ, এই হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেড ও অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত প্রমাণ করেছিল যে এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তান ও তাদের দেশীয় এজেন্টরা জড়িত ছিল। একাত্তরের পরাজিত দেশি-বিদেশি শক্তিসমূহের সম্মিলিত উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি ভাবধারায় বাংলাদেশকে উগ্র-জঙ্গিবাদী ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠত করা এবং জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে স্তব্ধ করে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছিল।

সেদিন মানববর্ম তৈরি করে দলের সভানেত্রীর প্রাণ রক্ষা করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও উন্নয়নের দর্শন সামনে রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ইউনূস সরকর সেই উগ্র-সাম্প্রদায়িক জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতিভূ হিসেবে বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করছে।

নারকীয় গ্রেনেড হামলার পর বিএনপি-জামাত জোট সরকার আলামত নষ্ট করার অপচেষ্টা করেছিল অভিযোগ করে বিবৃতিতে বলা হয়, তারা জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছিল। পরবর্তীতে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে প্রায় ১১ বছর ধরে ন্যায়বিচারের সব বিধি-বিধান মেনে এ মামলার বিচার সম্পন্ন করা হয়, যাতে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি অন্যতম পরিকল্পনাকারী তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ জন পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

“কিন্তু ক্ষমতা দখল করার পর সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ প্রহসনমূলক রায়ে দণ্ডিত সকল অপরাধীদের খালাস দেয়। এটি জাতির ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্ক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতি অঙ্গীকার রেখে আজকের এই দিনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গভীর শ্রদ্ধার সাথে শহিদদের স্মরণ করছে এবং আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।

একই সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত ও ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারকে প্রতিহত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads