ট্রাম্পের বক্তব্য সম্পাদনা নিয়ে বিতর্কের মুখে বিবিসির শীর্ষ কর্তাদের পদত্যাগ

মহাপরিচালক টিম ডেভি ও হেড অফ নিউজ ডেবোরাহ টারনেস। ছবি: বিবিসি
মহাপরিচালক টিম ডেভি ও হেড অফ নিউজ ডেবোরাহ টারনেস। ছবি: বিবিসি

প্রকাশিত বিভিন্ন খবর ঘিরে বিতর্ক এবং পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানের অভিযোগ ওঠার পর রোববার পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির ডিরেক্টর জেনারেল টিম ডেভি এবং বার্তা প্রধান ডেবোরা টার্নেস। 

পদত্যাগের পর ডেভি এক বিবৃতিতে বলেন, “বিবিসি খুঁতহীন নয়। আমাদের স্বচ্ছ এবং দ্বায়বদ্ধ থাকতে হবে।”    

২০২১ সালে বিবিসির প্যানোরামা বিভাগ ক্যাপিটল হিল দাঙ্গা সংক্রান্ত একটি তথ্যচিত্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দুটি পৃথক বক্তব্যকে সম্পাদনা করে। তখন অভিযোগ ওঠেছিল ওই বক্তব্য এমনভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে যাতে মনে হয়, ট্রাম্প এই দাঙ্গায় ইন্ধন দিচ্ছেন।

এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে বিষয়টি নিয়ে সরব হন চ্যানেলেরই এক উপদেষ্টা। গাজা প্রশ্নে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও ওঠে বিবিসির বিরুদ্ধে। এছাড়া রুপান্তরকামী মানুষের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি, যৌন হয়রানি এবং শিশু নির্যাতনের অভিযোগের মতো একাধিক অভিযোগ ঘুরেও বিতর্ক সৃষ্টি হয়।

টিম ডেভি তার পদত্যাগের পর বলেছেন, “বিতর্কগুলো একমাত্র কারণ না হলেও আমার সিদ্ধান্তের পিছনে এগুলোর অবশ্যই ভূমিকা আছে।”

বিবিসির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। আরব বসন্তের পর ২০১৩ সালের একটি প্রামাণ্যচিত্রে দেখানো হয়েছিল সিরিয়ার আলেপ্পোতে রাসায়নিক হামলার পর হাসপাতালে শিশুরা কাতরাচ্ছে। সেসময় ওই তথ্যচিত্রের দালিলিক প্রামাণ্যতা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল হয়েছিল। অভিযোগ ওঠেছিল, ডকুমেন্টারির অনেক দৃশ্য অভিনয় করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, এবং যেটি বিবিসি ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্রোহীদের পক্ষে প্রচার করেছিল।

এর আগে ২০০৩ সালে ইরাক নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে বিবিসির চেয়ারম্যান এবং মহাপরিচালক পদত্যাগ বাধ্য হয়েছিলেন।

রোমানিয়ায় মানব পাচার নিয়ে ‘প্যানোরামা’ অনুষ্ঠানে দাবি করা হয়েছিল যে কয়েকটি রোমানিয়ান পরিবার শিশু পাচারের সাথে জড়িত। ২০২২ সালে প্রচারিত ওই অনুষ্ঠান নিয়ে সেসময় ভুল তথ্য প্রকাশের অভিযোগে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছিল বিবিসিকে।

২০১২ সালে বিবিসির নিউজনাইটে একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল একজন শীর্ষ কনজারভেটিভ রাজনীতিবিদ শিশু নির্যাতনের সাথে জড়িত। নাম না বললেও, সামাজিক মাধ্যমে লর্ড ম্যাকআল্পাইনকে দোষী মনে করা হয়। পরে অবশ্য জানা যায়, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ ছিলেন। এ ঘটনায় বিবিসিকে মোটা অংকের ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছিল। পদত্যাগ করতে হয় তৎকালীন মহাপরিচালক জর্জ এন্টউইসেলকে।

১৯৯৫ সালে প্রিন্সেস ডায়ানার সাক্ষাৎকার ঘিরেও বিবিসির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ওঠেছিল।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ads