রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গেল একবছরে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে কাছে আসছে পাকিস্তান। অন্তত গত অর্থবছরের আমদানি ও রপ্তানির তথ্য এমন আভাস দিচ্ছে।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্য গত অর্থবছরে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এর মধ্যে বাংলাদেশে পাকিস্তানি পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ; আর বাংলাদেশি পণ্যের আমদানি বেড়েছে ৩৮ শতাংশের মতো।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নেশন’ বলছে, বিদায়ী অর্থবছরে আঞ্চলিক দেশগুলোতে পাকিস্তানের রপ্তানি বৃদ্ধির হার গড়ে ২ দশমিক ০৮ শতাংশ।
আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যে চীন এখনো পাকিস্তানি পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার রয়ে গেছে। তবে গেল অর্থবছরে দেশটিতে তাদের পণ্য রপ্তানি ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২৭০ কোটি ডলারে।
এসবিপির পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে পাকিস্তানি পণ্য রপ্তানি হয় প্রায় ৭৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ছিল ৬৬ কোটি ১০ লাখ ডলারের মতো। এ হিসাবে বাংলাদেশে তাদের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ।
পাকিস্তানে বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিও বেড়েছে। সবশেষ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে তারা আমদানি করে প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারের পণ্য, যা তার আগের অর্থবছরে ছিল পাঁচ কোটি ৬০ লাখ ডলারের মতো।
সে হিসাবে বাংলাদেশ থেকে তাদের আমদানি বেড়েছে প্রায় ৩৮ শতাংশ।
গত বছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পালে হাওয়া লাগে।
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তারা সম্পর্কোন্নয়নের বার্তা দিয়ে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বেশ কিছু বৈঠকও করেন।
বাণিজ্য বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করে কয়েক দফা বৈঠক হয় দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যেও।
এছাড়া আওয়ামী সরকার পতনের তিন মাসের মাথায় করাচি থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রথমবারের নোঙর করে পাকিস্তানের পণ্যবাহী জাহাজ।
এসবিপি বলছে, গেল অর্থবছরে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৭১ কোটি ১৭ লাখ ডলারের মতো।
বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তান থেকে মূলত পোশাক শিল্পের কাঁচামাল, চামড়া, ক্লিংকার, ফেব্রিক্স, তুলা, পেঁয়াজ ও আলু আমদানি করা হয়। আর বাংলাদেশ থেকে বেশি চায় চা, তৈরি পোশাক ও কাঁচা পাট।
এ সম্পর্কিত আরও খবর: